কলকাতা ভ্রমণ
কলকাতা ভ্রমণ বিষয়ে আমার এই লেখাটি এন্ট্রি লেভেলের ট্রাভেলার বা টুরিস্টদের জন্য , এমনকি যারা পাসপোর্ট করেননি, কিন্তু পাসপোর্ট করতে চান আর যেতে চান একা বা পরিবার সহ কম খরচে দেশ ভ্রমণে , তাদের জন্যও। যারা জানতে চান ভিসা ফি কত? কিভাবে ভিসা করে? কি কি কাগজ লাগে? ভিসা কি দেয়? ডলার এন্ডরস্মেন্ট কি লাগবে? এয়ার টিকেট কত? ইমিগ্রেশনে কি কোন সমস্যা করে? আপনি কি ইন্ডিয়া ভিজিট করেছেন, তাহলে কি ভিসা হয়েছে?
আমার এই পোষ্টটি মিড বা টপ লেভেলের ট্রাভেলার বা টুরিস্টরা পড়ে হয়তোবা কোন মজা পাবেন না, আর যে সব তথ্য এখানে পাবেন, তা ,মিড বা টপ লেভেলের ট্রাভেলার বা টুরিস্টরা হয়তোবা আগে থেকেই জানেন।
যাদের ইন্ডিয়ান ভ্যালিড ভিসা আছে, বা নিজেরাই ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা প্রসেস করতে পারবেন আর টিকেট করতে পারবেন। কিন্তু কলকাতার আভ্যন্তরীণ ভ্রমণ বিষয়ক কোন তথ্য প্রয়োজন, তারা আমার কলকাতা ভ্রমণের এই অভিজ্ঞতা থেকে অনেক তথ্য পেতে পারেন।
কলকাতাতে একাও গিয়েছি
আবার সপরিবারেও গিয়েছি। বাসে করে ও গিয়েছি আবার প্লেনে আর ট্রেনে করেও গিয়েছি। ব্যবসার
কাজে কলকাতা হয়ে দিল্লী গিয়েছি আবার
ঘুরতেও গিয়েছি।
বরাবরই নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশস্থ গুলশান ১ এর আইভিএসি থেকেই বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন রকমের ভারতীয় ভিসা( চেক লিষ্ট অনুযায়ী ডকুমেন্ট জমা দিয়ে) নিয়ে অনেক বারই ভারতে গিয়েছি। বউ বাচ্চারাও গিয়েছে একাধিকবার।
বরাবরই নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশস্থ গুলশান ১ এর আইভিএসি থেকেই বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন রকমের ভারতীয় ভিসা( চেক লিষ্ট অনুযায়ী ডকুমেন্ট জমা দিয়ে) নিয়ে অনেক বারই ভারতে গিয়েছি। বউ বাচ্চারাও গিয়েছে একাধিকবার।
২০১৬
তে রোজার মাঝে ভারতীয় দুতাবাস থেকে ঈদ ভিসা ক্যাম্পের আয়োজনে সপরিবারে পেলাম ১
বছরের মাল্টিপল এন্ট্রি ভারতীয় ট্যুরিস্ট ভিসা। ই টোকেন ছাড়াই।
যেদিন
শেষ দিবস ঠিক তার আগের দিন বিকেলে খবরটা পেলাম। ভিসা প্রসেসিং এর ব্যাপারে নিজের ভিসা নিজেই করার অভিজ্ঞতা অনেক আগে থেকেই থাকাতে , আর সকল
সময় কিছু কাগজ সদা সরবদাই প্রস্তুত থাকাতে অতি দ্রুত সকল আবেদন শেষ করতে করতে রাত
৯টা বেজে গিয়েছিল। পরদিন সকালে জমা দিব। এক আত্মীয়কে সাথে নিয়ে
গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খেয়ে চিন্তা করলাম, কাছেই তো
ভারতীয় দুতাবাস, একটু ঘুরে দেখে আসি কি অবস্থা। মনে পড়ে গেল অনেক বছর আগের সেই দিন গুলো,
রাতের বেলা গুলশানের শুটিং ক্লাবের সামনে দিয়ে যেতেই চোখে পড়ত বিশাল লম্বা লাইন,
গুলশান এক এর কেএফসির পেছন পর্যন্ত।
যেতে যেতে রাত এগারটা বেজে গেল আমেরিকা
এমব্যাসির কাছে যেতেই। গিয়ে দেখি শত সহস্র
লোকের মিলন মেলা। পেছনে যেতে যেতে দক্ষিন দিকের দ্বিতীয় ওভার ব্রিজের গোঁড়ায় গিয়ে
লাইনে শেষ। ঐ অবস্থাতে দাঁড়িয়ে গেলাম লাইনে, আর কিছুক্ষন
পর পরই দেখতে লাগলাম আমার পিছনে লাইন
কিভাবে অতি দ্রুত বড় হচ্ছে। লাইনে আমার
সামনের জনকে বলে পিছনে দেখতে গেলাম। মিনিট
দশেক উত্তরে হাটার পরে দেখি আরো বিশাল এক লাইন পুরুষ আর মহিলাদের মিশ্রণে। বিষয়টি জানলাম কয়েক জনের সাথে আলাপ
করে। লাইনটি মুলত মহিলাদের, কিছু মহিলারা
সন্ধ্যা থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, পরের দিন সকালে ভিসার জন্য আবেদন জমা দিতে। আর
যারা পুরুষ, তারা লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, যেন পরের দিন সকালে এসে তাদের স্ত্রী, বা মা
বা বোনেরা এসে যেন লাইনে দাড়াতে পারেন।
সাথে সাথে সাথে থাকা আত্মীয়কে মহিলাদের লাইনে ঢুকিয়ে দিলাম। আর নিজে গিয়ে আবার দাঁড়িয়ে গেলাম আগের সেই পুরুষদের লাইনে।
বউকে বললাম, রাতে আর বাসায় ফিরছি না, সে যেন সকালেই চলে আসে।
আশে পাশে ঘুরাঘুরি করতে করতে, আরো কিছু বন্ধু বান্ধব পেয়ে
গেলাম আরো পেয়ে গেলাম বেশ কিছু আত্মীয় স্বজন। সবারই ধান্দা একটাই, ই টোকেন ছাড়াই এক বছরের মাল্টিপল এন্ট্রি ভারতীয়
ট্যুরিস্ট ভিসা জন্য আবেদন করার।
জাষ্ট একটা নেশা বা
এডভেঞ্চার মনে হওয়াতেই সারটা রাত
দাঁড়িয়ে আর বসে গল্প করতে করতেই কেটে গেল।
সকালে বউ এসে হাজির হয়ে গেল। বুদ্ধি করে পরিবারের সকল কাগজ সহ ফাইল গুলো বউকে বুঝিয়ে দিলাম আর
গিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে দিলাম।
আমাদের দেশে তো
অলওয়েজ লেডিস ফার্স্ট। মহিলাদের আগেই ভিতরের যাবার ব্যবস্থা করে দিল। প্রথম
বারেই আমার বউ ভিতরে যাবার সুযোগ পেল।
ঘন্টা খানেকের মাঝেই জমা দিয়ে বের
হয়ে আসল। জিজ্ঞেস করলাম , আইভিএসি এর
লোকজন কিছু জিজ্ঞেস করেছে কি না। বউ বলল, জমা নিয়েই তো শেষ করতে পারছে না, জিজ্ঞেস
করার সময় কোথায়। জমা নিল আর টোকেন দিল। আমি বললাম বাঃ বাঃ।
জমা দেওয়ার ঘণ্টা
খানেকের মাঝেই যখন চলে চাচ্ছিলাম, আমার
লাইনের অনেকেই জানতে চাইল কি ব্যাপার, বললাম, জমা হয়ে গেল। বউ
ছাড়া যারা, তাদের তো কপালে হাত।
তখনই বুঝলাম, এট
লিষ্ট একটা বউ থাকার বহুমুখী সুবিধা। অথচ
আমরা পুরুষেরা এই বউদেরকে নানা ভাবে মানসিক বা শারীরিক অত্যাচার করতে দ্বিধাবোধ
করি না।
( আমার ছোট ছেলে শিজা ও পেয়ে গেল
এক বছরের মাল্টিপল এন্ট্রি ভারতীয় ট্যুরিস্ট ভিসা)
এক বছরের মাল্টিপল এন্ট্রি ভারতীয় ট্যুরিস্ট ভিসা)
নির্ধারিত তারিখে
পাসপোর্টে ভিসা পেয়ে পরিকল্পনা করলাম এবার
ট্রেনেই যাব কলকাতাতে, আসা যাওয়া করব সবচেয়ে সস্তাতে, সপরিবারে নেব এক নতুন অভিজ্ঞতা।
ভারতীয় ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১৫০ ইউ এস ডলার পাসপোর্টে এন্ডোরস ( মানি একচেঞ্জ বা ফরেন একচেঞ্জ ব্যাংক থেকে ) করে জমা দিতে হয়। ভিসা পাওয়ার পর ইউ এস ডলার পাসপোর্টে এন্ডোরস করার আর প্রয়োজন হয় না।
অথবা
ছয় মাসের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট দিয়েও জমা দেওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ভিসা পাওয়ার পরে আর ভারতে আসার আগে অবশ্যই প্রতি পাসপোর্টে খরচে পুরো বাংলাদেশী টাকাগুলো দিয়ে ফরেন একচেঞ্জ ব্যাংক থেকে বা মানি একচেঞ্জ থেকে ইউ এস ডলার কিনে তা পাসপোর্টে এন্ডোরস করতে হয়।
সবার পাসপোর্ট আর ভিসা পেয়ে, সাথে সাথেই চলে গেলাম গুলশান ২ তে আমাদের আর বাচ্চাদের পাসপোর্টে ইউ এস ডলার এন্ডোরসমেন্টের জন্য। অনেক গুলো মানি একচেঞ্জ থেকে চেক করে নিয়ে যেখানে রেট ভাল পেলাম সেখান থেকে আমাদের এবারের ট্রিপের বাজেটের চেয়ে কিছু বেশী টাকা ইউ এস ডলার করে, তা আমাদের সবগুলো পাসপোর্টে সম হারে বন্টণ করে এন্ডোরস করে নিলাম।
হ্যা, অনেকেই নতুনরা বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশী টাকা নিয়ে যায় আর অভিজ্ঞরাও অনেক উৎসাহ দেয়, কিভাবে ইউএস ডলার না নিয়ে বাংলাদেশ টাকা নেয়া যায়। আবার তারা সবাই গর্বের সাথে তা পাবলিসিটিও করে, হু! হু ! ! ডলার এন্ডোরস ছাড়াই বিদেশ ঘুরে এসেছি। কিসসুউউউউউ হয়নি ! এটা কোন ব্যাপারই না। হা! হা !! হা ! ! !
হায়রে বাংলাদেশী ! আমরা বাংলাদেশীই রয়ে গেলাম, ট্রাভেলার বা ট্যুরিস্ট হতে পারলাম না !
অথচ প্রচলিত আইন অনুযায়ী একজন নাগরিক বৈধভাবে বিদেশ ভ্রমণে গেলে তাকে অবশ্যই ভ্রমণের আগে পাসপোর্টে ইউ এস ডলার এন্ডোরস করে নিয়ে যেতে হয়। যে মুদ্রাগুলো ভ্রমণকারী সেই দেশে খরচ করবে। ঐ দেশে গিয়ে আবার এই ইউ এস ডলারগুলো লোকাল কারেন্সীতে কনভার্ট করে নিবে লোকাল মানি একচেঞ্জ থেকে। এটাই নিয়ম।
ইউ এস ডলার না কিনেও আমি অনেক সময় আমার ক্রেডিট কার্ডও আমার পাসপোর্টে এন্ডোরস করে নিয়ে গিয়েছি।ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পাসপোর্টে এন্ডোরস করার সুবিধা পেয়েছি, ফ্রিকোয়েন্ট ট্রাভেলার হিসেবে বারবার এন্ডোরসমেন্ট করাতে হয়নি, ১ বছর মেয়াদ পেয়েছি।ক্রেডিট কার্ড দিয়ে এন্ডোরসমেন্টের মেয়াদ থাকা অবস্থায় এন্ডোরসমেন্ট ছাড়াই ট্রাভেল করেছি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে নতুন নির্দেশনা সংবলিত সার্কুলার অনুযায়ী ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করা যায় এমন দেশে যেতে আগ্রহী পাসপোর্টধারী একজন বাংলাদেশি নাগরিক সার্কভুক্ত দেশ ভ্রমণের জন্য বছরে পাঁচ হাজার ডলার পর্যন্ত এবং সার্কের বাইরে সাত হাজার ডলার পর্যন্ত (মোট ১২ হাজার ডলার) ব্যাংক থেকে নিতে পারবে।
অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক ভিসা ছাড়া যেসব দেশ বা অঞ্চলে ভ্রমণ করা যায় সেসব দেশে যেতে আগ্রহী কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের পাসপোর্টের বিপরীতে অন্যান্য শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট দেশ বা অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য অব্যবহৃত বার্ষিক ভ্রমণ কোটার সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা ছাড় করাতে পারবে। তবে ওই সব দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে পোর্ট এন্ট্রি বা অন অ্যারাইভাল পদ্ধতিতে ভিসা পাওয়ার বিষয়টি অনুমোদিত ডিলার ব্যাংককে নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করবে গ্রাহক। তবে ভ্রমণ ইচ্ছুক ব্যক্তির পাসপোর্টের কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদ না থাকলে মুদ্রা ছাড় করবে না ব্যাংক।
ভিসা ছাড়া ব্যাংক থেকে একবার ডলার এনডোর্স করার পর ওই গ্রাহক পরেরবার যখন বিদেশে যাওয়ার জন্য ডলার এনডোর্স করতে আসবে তখন আগেরবারের নেওয়া ডলার যথাযথভাবে খরচ হয়েছে কি না তা জানতে চাইবে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক।
এন্ডোরসমেন্ট সংক্রান্ত আমার আমার লেখা---- কমপ্লেক্স প্রশ্নের কোন বাইনারী উত্তর হয় না ( পর্ব দুই ) ঃপাসপোর্টে ডলার এন্ডোরসমেন্ট --- শিরোনামে আরেকটি আর্টিকেল আগে লিখেছিলাম এই ব্লগে, যেখানে এন্ডোরসমেন্ট সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য দেয়া আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে নতুন নির্দেশনা সংবলিত সার্কুলার অনুযায়ী ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করা যায় এমন দেশে যেতে আগ্রহী পাসপোর্টধারী একজন বাংলাদেশি নাগরিক সার্কভুক্ত দেশ ভ্রমণের জন্য বছরে পাঁচ হাজার ডলার পর্যন্ত এবং সার্কের বাইরে সাত হাজার ডলার পর্যন্ত (মোট ১২ হাজার ডলার) ব্যাংক থেকে নিতে পারবে।
অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক ভিসা ছাড়া যেসব দেশ বা অঞ্চলে ভ্রমণ করা যায় সেসব দেশে যেতে আগ্রহী কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের পাসপোর্টের বিপরীতে অন্যান্য শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট দেশ বা অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য অব্যবহৃত বার্ষিক ভ্রমণ কোটার সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা ছাড় করাতে পারবে। তবে ওই সব দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে পোর্ট এন্ট্রি বা অন অ্যারাইভাল পদ্ধতিতে ভিসা পাওয়ার বিষয়টি অনুমোদিত ডিলার ব্যাংককে নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করবে গ্রাহক। তবে ভ্রমণ ইচ্ছুক ব্যক্তির পাসপোর্টের কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদ না থাকলে মুদ্রা ছাড় করবে না ব্যাংক।
ভিসা ছাড়া ব্যাংক থেকে একবার ডলার এনডোর্স করার পর ওই গ্রাহক পরেরবার যখন বিদেশে যাওয়ার জন্য ডলার এনডোর্স করতে আসবে তখন আগেরবারের নেওয়া ডলার যথাযথভাবে খরচ হয়েছে কি না তা জানতে চাইবে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক।
এন্ডোরসমেন্ট সংক্রান্ত আমার আমার লেখা---- কমপ্লেক্স প্রশ্নের কোন বাইনারী উত্তর হয় না ( পর্ব দুই ) ঃপাসপোর্টে ডলার এন্ডোরসমেন্ট --- শিরোনামে আরেকটি আর্টিকেল আগে লিখেছিলাম এই ব্লগে, যেখানে এন্ডোরসমেন্ট সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য দেয়া আছে।
টুরিস্ট ইনফরমেশনঃ
-
৩জি, এভারেস্ট বিল্ডিং, ৪৬সি,
জওহরলাল নেহেরু রোড।
-
৩/২, প্রথম তল, বিবাদী
বাগ।
–
কলকাতা এয়ারপোর্ট কাউন্টার, নিউ টার্মিন্যাল
বিল্ডিং,
-
এমব্যাসি বিল্ডিং, ৪ শেক্সপীয়্যার সরণী।
টিপসঃ
-
নিশ্চিত রাখুন হোটেলের অগ্রিম সংরক্ষণ।
-
সতর্ক থাকুন দালাল-দের বিষয়ে ।
-
বিশুদ্ধ পানী পান করুন।
দীর্ঘ ৪৩ বছর পর ২০০৮ সালে মৈত্রী ট্রেনের মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত রেল যোগাযোগ শুরু হয়।
বর্তমানে মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের বাংলাদেশের দর্শনা ও ভারতের গেদে স্টেশনে ইমিগ্রেশন কাজ সারতে হয়। এ সময় যাত্রীদের সকল মালামাল নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা সেরে আবারো মালামাল নিয়ে ট্রেনে উঠতে হয়। আর ইমিগ্রেশনের কাজ সারতে মাঝপথে চলে যায় তিন ঘণ্টা সময়। মৈত্রী এক্সপ্রেসের ভেতরে খাদ্য-পানীয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকায় মাঝ পথে কোথাও থামানোর প্রয়োজন নেই। কলকাতা ঢাকার দূরত্ব ৩৭৫ কিলোমিটার। বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাতায়াতে যেখানে প্রায় ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা সময় লাগে।
বৃহস্পতিবার ছাড়া ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে এখন সপ্তাহে ৬ দিন মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল করে। এটি এখন সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ভাড়া ভ্রমণ করসহ ১৬৩৩ টাকা। প্রাপ্ত বয়স্কদের সঙ্গে ৫ বছরের নিচের বয়সের শিশুদের ৫০ শতাংশ কম ভাড়ায় যাতায়াত করতে পারে। অপেক্ষাকৃত কম ভাড়া ও আরামদায়ক ভ্রমণ হওয়ায় এখন ঢাকা-কলকাতা ভ্রমণের ক্ষেত্রে মৈত্রী এক্সপ্রেস বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
দীর্ঘ ৪৩ বছর পর ২০০৮ সালে মৈত্রী ট্রেনের মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত রেল যোগাযোগ শুরু হয়।
বর্তমানে মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের বাংলাদেশের দর্শনা ও ভারতের গেদে স্টেশনে ইমিগ্রেশন কাজ সারতে হয়। এ সময় যাত্রীদের সকল মালামাল নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা সেরে আবারো মালামাল নিয়ে ট্রেনে উঠতে হয়। আর ইমিগ্রেশনের কাজ সারতে মাঝপথে চলে যায় তিন ঘণ্টা সময়। মৈত্রী এক্সপ্রেসের ভেতরে খাদ্য-পানীয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকায় মাঝ পথে কোথাও থামানোর প্রয়োজন নেই। কলকাতা ঢাকার দূরত্ব ৩৭৫ কিলোমিটার। বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাতায়াতে যেখানে প্রায় ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা সময় লাগে।
বৃহস্পতিবার ছাড়া ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে এখন সপ্তাহে ৬ দিন মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল করে। এটি এখন সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ভাড়া ভ্রমণ করসহ ১৬৩৩ টাকা। প্রাপ্ত বয়স্কদের সঙ্গে ৫ বছরের নিচের বয়সের শিশুদের ৫০ শতাংশ কম ভাড়ায় যাতায়াত করতে পারে। অপেক্ষাকৃত কম ভাড়া ও আরামদায়ক ভ্রমণ হওয়ায় এখন ঢাকা-কলকাতা ভ্রমণের ক্ষেত্রে মৈত্রী এক্সপ্রেস বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
( ঢাকার কমলাপুর রেল ষ্টেশনে টিকেট কেনার আগে শাবাব)
ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রীদের ইমিগ্রেশন, কাস্টমসসহ যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা যাত্রা স্টেশনেই সম্পন্ন হবে। ঢাকার ক্যান্টমনমেন্ট ও কলকতার শিয়ালদহে ইমিগ্রেশনসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হলে সময় ৯ থেকে ১০ ঘণ্টায় নেমে আসবে। খুব শিগগিরই এ সেবা চালু করা সম্ভব হবে। যারা কলকাতা যাবেন তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন । আর কলকাতা থেকে যারা বাংলাদেশে আসবেন তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে শিয়ালদহ স্টেশনেই সম্পন্ন করা ।এই সার্ভিস চালু হলে ঢাকা ও কলকাতার দুই প্রান্তে শুরুতেই ইমিগ্রেশন, কাস্টমসসহ অন্যান্য দাফতরিক কাজ সেরে নেয়া হবে। ফলে মৈত্রী এক্সপ্রেসের মধ্যপথে আর কোথাও বিরতির প্রয়োজন হবে না। ট্রেনটি ননস্টপ চলাচল করবে।
টিকেট সংগ্রহ করার জন্য ভিসা পাসপোর্ট নিয়ে দাঁড়াতে হয়। প্রতিদিন সকাল ৯:০০ টা থেকে বিকাল ৫:০০ টা পর্যন্ত টিকেট প্রদান করা হয়। টিকেট সংগ্রহ করার জন্য একটি ফরম পূরণ করতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের পর কোনো টিকেট প্রদান করা হয় না।কমলাপুর রেলস্টেশনে “ঢাকা - কোলকাতা” কাউন্টার নামে আলাদা একটি কাউন্টার রয়েছে। এই কাউন্টার থেকে টিকেট প্রদান করা হয়। কাউন্টারের সামনে ভ্রমণ ও ভাড়া সংক্রান্ত সকল তথ্য টাঙানো রয়েছে।
প্রাপ্ত বয়স্কদের সাথে ৫ বছর বা এর কম বয়সীরা ৫০% কম ভাড়ায় ভ্রমণ করতে পারে। ভ্রমণ সংক্রান্ত যথাযথ কাগজপত্র প্রদর্শন করে সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টার মধ্যে ঢাকা ও কলকাতা রেল স্টেশন থেকে টিকেট সংগ্রহ করতে হয়।
ঢাকা টু কলকাতাঃ
শুক্রবার (৩১০৭), শনিবার (৩১১০), রবিবার (৩১০৭), বুধবার (৩১১০)।
কলকাতা টু ঢাকাঃ
শনিবার (৩১০৮), সোমবার (৩১০৮), মঙ্গলবার (৩১০৯), শুক্রবার (৩১০৯)।
কলকাতা টু ঢাকাঃ
শনিবার (৩১০৮), সোমবার (৩১০৮), মঙ্গলবার (৩১০৯), শুক্রবার (৩১০৯)।
( পেছনে ট্রেনের ভাড়ার তালিকা)
প্রাপ্তবয়স্ক টিকেটের বিপরীতে ৩৫ কেজি ওজনের লাগেজ নেয়া যায়। আর শিশু টিকেটের বিপরীতে ২০ কেজি ওজনের লাগেজ নেয়া যায়। স্ক্যানিং মেশিনে স্ক্যান করার জন্য লাগেজের আকার ৬৫ সে.মি. ও ৪০ সে.মি. এর মধ্যে হতে হয়। আর লাগেজের সংখ্যা সর্বোচ্চ দু’টি হতে পারে। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে মালপত্র বিপুল ঠেকানোর জন্যই অতিরিক্ত ওজনের লাগেজের জন্য উচ্চ মাশুল আরোপ করা হয়েছে।
( বাংলাদেশ থেকে একমাত্র আন্তর্জাতিক ট্রেন রুটের টিকেট কাউন্টারের সামনে শাবাব)
৩৫ কেজি থেকে ৫০ কেজি পর্যন্ত প্রতি কেজির জন্য ২ মার্কিন ডলার আর ৫০ কেজির অপর প্রতি কেজির জন্য ১০ মার্কিন ডলার দিতে হয়। শিশুদের টিকেটের ক্ষেত্রে ২০ কেজি থেকে ৩৫ কেজি পর্যন্ত প্রতি কেজির মূল্য ২ মার্কিন ডলার এবং ৩৫ কেজির ওপর প্রতি কেজির মূল্য ১০ মার্কিন ডলার দিতে হয়।
ঢাকা থেকে সকাল ৮ টা ১০ মিনিটে ছাড়ে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে ছাড়ে। টিকিট কাটতে হবে কমলাপুর রেল স্টেশনে গিয়ে। কলকাতা ট্রেনের টিকিট আর কোথাও বিক্রি করে না।
কলকাতা টু ঢাকার ট্রেনের টিকিট কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে কেনা যায়, ২০% টিকিট দিতে পারে ঢাকা থেকে, বাকি ৮০% টিকিট কলকাতা কাউন্টার থেকে দিয়ে থাকে।
( সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হবার আগে ২০১৬ তে সবচেয়ে কম দামে ৬৫০ টাকাতে সবাই পেয়ে গেলাম নিজেদের পছন্দ মত তারিখে আর সিটে নন এসি চেয়ারের ওয়ান ওয়ে টিকেট)
ঢাকার রেডিসন হোটেলের ২০০ গজ পূর্ব দিকে এই রেল স্টেশনটি অবস্থিত। এই স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোও থামে। স্টেশনে প্রবেশের জন্য দুটি প্রবেশ পথ রয়েছে। কমলাপুর রেল স্টেশন সহ ঢাকার মধ্যে বেশ কয়েকটি রেল স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশন অন্যতম। ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশন থেকে সকল ধরনের আভ্যন্তরীণ ভ্রমনের টিকেট সংগ্রহ করা যায়।
( ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশনে আমার ছোট ছেলে শিজা)
( ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশনে ট্রেনে প্রবেশের পূর্ব মুহূর্তে)
( ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশনে ট্রেনের ভিতরে আমরা, ট্রেন ছাড়ার অপেক্ষায়)
( ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে আমরা সবাই পৌঁছে গেলাম দর্শনাতে। ছবিতে শাবাব আর শিজা)
খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা জেলায় সীমান্তবর্তী রেল স্টেশন দর্শনা। ১২.৫০ বর্গ কিলোমিটার আর প্রায় ১২ হাজার মানুষের বসবাস বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থিত দর্শনা ৩য় শ্রেণিভুক্ত পৌরসভা।
( রেলের একমাত্র আন্তর্জাতিক স্টেশন দর্শনা রেল স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে আমরা)
কেরু এন্ড কোং এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম চিনিকল যা বৃটিশ আমলে দর্শনায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি এই অঞ্চলের একটি উৎকৃষ্ট পিকনিক স্পট, যেখানে একটি দ্বিতল ভবন বিশিষ্ট মনোরম গেস্ট হাউজ রয়েছে।
(দর্শনা রেলওয়ে স্টেশনের ইমিগ্রেশনে প্রবেশের পূর্বে আমরা
দর্শনায় আন্তর্জাতিক মানের কম্পিউটারাইজড সুবিধাসহ ১ কিলোমিটারের ব্যবধানে ২টি রেলওয়ে ষ্টেশন অবস্থিত। দর্শনা রেলওয়ে স্টেশন দিয়ে মৈত্রী ট্রেন সরাসরি ভারতে যাতায়াত করছে।
(দর্শনা রেলওয়ে স্টেশনের ইমিগ্রেশনে শেষে ট্রেনে উঠার পূর্বে আমরা)
(বাংলাদেশ - ভারত সীমান্তে দুই ছেলেকে নিয়ে আমিপৃথিবীর পথে পথে ঘুরে ফেরা শিবলী সাদিক)
কলকাতা শহরতলি রেলওয়ের শিয়ালদহ-গেদে লাইনের অন্তিম স্টেশন গেদে রেল ট্রানজিট পয়েন্ট ১৮৬২ সালে নির্মিত ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এর একটি সীমান্তবর্তী রেলওয়ে স্টেশন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের একটি সীমান্তবর্তী চেকপয়েন্ট।
১৮৭১ সালে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের কলকাতা-গোয়ালন্দ ঘাট রেলপথ খোলা হলে গেদে স্টেশনটির গুরুত্ব বর্ধিত হয়। বর্তমানে মৈত্রী এক্সপ্রেস এই স্টেশনের উপর দিয়ে যায়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের জন্য বঙ্গ প্রদেশের রেল যোগাযোগ ক্ষতিগ্রস্ত হয় যাকে বিভক্ত করা হয় ভারতীয় রাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ এবং পূর্ব বাংলার পাকিস্তানের প্রদেশ (পরে ১৯৫৬ সালে যার নাম পরিবর্তন করে পূর্ব পাকিস্তান হয়) এর মধ্যে। অবিভক্ত ভারতের ওপর ব্রিটিশ শাসনের সময়, নিয়মিত রাত ব্যাপী ট্রেন চলাচল করত কলকাতা, গোয়ালন্দ, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের মধ্যে। ইস্ট বেঙ্গল মেল, ইস্ট বেঙ্গল এক্সপ্রেস এবং বরিশাল এক্সপ্রেস - এই তিনটি ট্রেন, ১৯৬৫ পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে নিজেদের পরিষেবা অব্যাহত রেখেছিল যতক্ষণ না ভারত-পাকিস্তান সংঘাত চারিদিকে ছড়িয়ে সব যাত্রীবাহী ট্রেন লিঙ্ক এর অবসান ঘটায়| ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ফল স্বরূপ হিসাবে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয় জাতি-রাষ্ট্র বাংলাদেশ হিসাবে। উপরে উল্লিখিত ট্রেন গুলোর মধ্যে প্রথম দুটো ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেস এর মতন একই রুট বরাবর, গেদে এবং দর্শনা হয়ে চলাচল করত এবং বরিশাল এক্সপ্রেস, বনগাঁ ও যশোর এর মাধ্যমে চলাচল করত। বিরাল-রাধিকাপুর মালবাহী পণ্য যাতায়াতের আরেকটি শাখা ছিল। রানাঘাট - গেদে লাইনের বৈদ্যুতিকরণ ঘটে ১৯৯৯-২০০০ সাল নাগাদ। এর পর এই লাইনে লোকাল বৈদ্যুতিক ট্রেন চালানো শুরু হয়। ২০০২ সালের হিসাবে, গেদে-দর্শনা লাইন দিয়ে বাংলাদেশে ভারতীয় রেলওয়ের মাধ্যমে বিপুল পণ্য রপ্তানি ঘটে।
সীমিত মালবাহী সেবা কয়েক বছরের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচল করে, কিন্তু যাত্রী পরিষেবা শুধুমাত্র ২০০৮ সালে পুনর্জাগরিত হয়, ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতের বর্তমান রাষ্ট্রপতি এবং ভারতের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির (বর্তমান ভারতীয় রাষ্ট্রপতি) ঢাকা ভ্রমনের পর। ২০০৭ সালের জুলাই মাসের ৮ তারিখ প্রথম ট্রেন (মৈত্রী এক্সপ্রেস) ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের বহন করে, একটি পরীক্ষা চালানোর মাধ্যমে কোলকাতা থেকে ঢাকা পর্যন্ত চলে। ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল, বাংলা পহেলা বৈশাখের দিন থেকে দ্বি-সাপ্তাহিক এই ট্রেন সাভিস চালু করা হয়। মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের ভিসার জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে এটি "রেল-গেদে দ্বারা" (ভারতীয় ভিসার জন্য) বা "রেল-দর্শনা দ্বারা" (বাংলাদেশী ভিসার জন্য) হিসাবে এন্ট্রি পোর্ট উল্লেখ করার জন্য অপরিহার্য।
বাংলাদেশের পর্যটকদের সুবিধার্থে ভিসা থাকলেই ২৪টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং হরিদাসপুর-গেদে রুট ব্যবহারের সুবিধা উম্মুক্ত করে দিয়েছে ভারত। সোমবার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এখন থেকে বুড়িমারি, আখাউড়াসহ অন্য সব রুটের ভিসাধারী যাত্রীরাই বেনাপোল-গেদে চেকপোস্ট ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যেতে এবং বাংলাদেশে আসতে পারবেন।
২৪টি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর এবং হরিদাসপুর ও গেদের সমন্বিত চেকপোস্ট (আইসিপি) দিয়ে যাতায়াতকারী বাংলাদেশী নাগরিকদের ভিসায় প্রবেশ/প্রস্থান নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরগুলির মধ্যে রয়েছে আহমেদাবাদ, আমৌসি (লখনউ), বারণসী, ব্যাঙ্গালোর, কালিকট, চেন্নাই, কোচিন, কোয়েম্বাটোর, ডাবোলিম (গোয়া), দিল্লী, গয়া, গুয়াহাটি, হায়দ্রাবাদ, জয়পুর, কলকাতা, ম্যাঙ্গালোর, মুম্বাই, নাগপুর, পুনে, অমৃতসর, ত্রিচি, ত্রিবান্দ্রম, বাগডোগরা এবং চন্ডীগড়।
( চলে এলাম বাংলাদেশ থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের
সীমান্তবর্তী নদীয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জের সিডি ব্লকে অবস্থিত গেদে রেলওয়ে স্টেশনে )
নতুন চারটি আন্তঃশহর স্টেশন যেগুলো ভারতের হাওড়া ও কলকাতায় ট্রেন চালিত করে থাকে। অন্যগুলো হচ্ছে কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশন, হাওড়ার শালিমার স্টেশন এবং হাওড়ার হাওড়া রেলওয়ে স্টেশন|হাওড়া স্টেশন।
বর্তমানে যে জায়গাতে স্টেশনটি অবস্থিত, পূর্বে জায়গাটি মালপত্র রাখার একটি বৃহৎ স্থান ছিলো। বর্তমানে গাড়ি এবং বাস পার্কিং এলাকা, এবং স্টেশনে পৌঁছানোর পথ, একটি কয়লা লোড করার স্থানের অংশ ছিল। রেলস্টেশনটি পূর্বে চিতপুর স্টেশন নামে পরিচিত ছিলো।
২০০০ সালে, এই স্থানটিকে একটি রেল স্টেশন হিসাবে ব্যবহার করার প্রথম পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়, যেহেতু দূরপাল্লার যাত্রীদের সংখ্যার আধিক্যের কারণে শিয়ালদহ স্টেশনটি ভারাক্রান্ত হচ্ছিল। জায়গার অভাবের কারণে সে সময় শিয়ালদহ স্টেশনে নতুন প্লাটফর্ম তৈরি করা সম্ভব হচ্ছিল না।
স্টেশনটি শিয়ালদহ-রাণাঘাট লাইন|শিয়ালদহ-রাণাঘাট লাইনের সাথে সংযুক্ত এবং ইস্টার্ন রেলওয়ের দ্বারা নৈহাটি, ব্যান্ডেল, কল্যাণী সিমান্ত শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর, বিরহামপুর, লালগোলা, ডানকুনি, কলকাতা বিমানবন্দর বনগাঁ, হাসনাবাদ প্রভৃতি স্থানে ট্রেন চলাচল করে থাকে।
একটি নতুন রেলওয়ে স্টেশন হিসাবে স্টেশনটি জন চলাচলের বাহনগুলো দ্বারা যথাযথভাবে ব্যবহৃত হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের সারফেস ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের মাত্র দুই অথবা তিনটি বাস সার্ভিস রুট স্টেশনটির সাথে যুক্ত। অন্যান্য বাস এবং ট্রামগুলো রাধা গোবিন্দ কার রোড দিয়ে চলাচল করে, যা স্টেশনটি হতে ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সবচেয়ে নিকটের মেট্রো স্টেশনটি ২ কিলোমিটার দূরে।
শ্যামবাজারের দূর পাল্লার বাস টার্মিনাল খালের অপর পাশ হতে স্টেশনটির সামনে আনার পরিকল্পনা করা হলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। যাহোক, কলকাতা স্টেশন হতে সোনাপুর পর্যন্ত বাস সার্ভিস বর্তমান যা শ্যামবাজার, উল্টাডাঙ্গা, এম বাইপাস, অজয় নগর এবং গড়িয়া দিয়ে ঘুরে আসে। সোনাপুর স্টেশন হতে কলকাতা স্টেশন পর্যন্ত যাত্রায় প্রায় ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট সময় লাগে। অপরদিকে উল্টাডাঙ্গা হতে কলকাতা স্টেশনে অটো রিকশা যোগেও আসা যায়।
অল্প খরচে ( হিচ হাইকার বা ব্যাকপ্যাকাররা) চিতপুরের এই কলকাতা রেল ষ্টেশনে নেমে বাসে বা ট্রেনে করে বিভিন্ন জায়গাতে যাওয়া যায়।
ভ্রমণকারীরা এই কলকাতা ষ্টেশন থেকে পাটনা, গুয়াহাটি, অমৃতসর, জম্মু, আজমীর বা আগ্রা যেতে পারেন নীচের ট্রেনগুলো দিয়েঃ
কলকাতা পাটনা গরীব রথ এক্সপ্রেস
কলকাতা - গুয়াহাটি গরীব রথ এক্সপ্রেস
কলকাতা-অমৃতসর সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস
কলকাতার আনন্দ বিহার এক্সপ্রেস
কলকাতা হলদিবাড়ি ত্রৈসাপ্তাহিক ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস
মৈথিলি এক্সপ্রেস
কলকাতা যোগবাড়ি এক্সপ্রেস
কলকাতা-জয়নগর সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস
কলকাতা-সীতামারহি মিথিলা এক্সপ্রেস
কলকাতা রাধিকাপুর এক্সপ্রেস
কলকাতা-গোরখপুর পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেস ভায়া বালিয়া
কলকাতা-গোরখপুর পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেস ভায়া মোজাফফর
কলকাতা-গোরখপুর পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেস ভায়া নার্কাটিয়াগঞ্জ
কলকাতা-জম্মু তাউয়ি এক্সপ্রেস
কলকাতা-মুজাফফরপুর টিরহাট এক্সপ্রেস
কলকাতা-গিরিডি লিংক এক্সপ্রেস
কলকাতা-বালুরঘাট তেভাগা এক্সপ্রেস
কলকাতা - ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস
কলকাতা-নাঙ্গলদম গুরুমুখী সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস
কলকাতা-আজমীর ভায়া কোটা এক্সপ্রেস
কলকাতা আগ্রা ক্যান্টনমেন্টে সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস
কলকাতা আগ্রা ক্যান্টনমেন্টে এক্সপ্রেস
কলকাতা-আজমীর ভায়া নীমুচ এক্সপ্রেস
কলকাতা-লালগোলা হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস
কলকাতা-ঝাঁসির প্রথম স্বতন্ত্র সংগ্রাম এক্সপ্রেস
কলকাতা-ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট মৈত্রী এক্সপ্রেস – ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র আন্তর্জাতিক ট্রেন
কলকাতা-আজমগড় সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস
কলকাতা-লালগোলা ঢনডনিয়া ত্রিসাপ্তাহিক এক্সপ্রেস
কলকাতা-লালগোলা প্যাসেঞ্জার
আকাল তাখত সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস
অনন্য এক্সপ্রেস (সাপ্তাহিক)
বিভিন্ন রুটের বাসে করে যেতে পারেন বিভিন্ন জায়গাতেঃ
কেবি সিরিজ অব রুট
কেবি২০ ধূলাগড়-কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন- নিউ টাউন
কে সিরিজ অব রুট
কে১ কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন
জেএম সিরিজ বাস রুট
০০৭ কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন- গড়িয়া বাসস্ট্যান্ড
মিনি বাস রুট
১৮৯ হাওড়া ময়দান - কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন
এসটিএ বাস রুট
কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন- মালঞ্চ
নম্বর ব্যাতীত বাস রুট
কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন – চাকলা
কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন - বৈদ্যবাটি স্টেশন
কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন – বাগনান
কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন – আলমপুর
কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন - ঘাটাল (এসি/নন এসি)
কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন - চন্দ্রকোণা রোড
ডব্লিউবিএসটিসি ফ্রাঞ্চাইজি বাস রুট
কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন - সোনারপুর স্টেশন
সিএসটিসি বাস রুট
এস৪৫ শকুন্তলা পার্ক - কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন এস৫৩
কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন - নিউ টাউন ইউনিটেক
( গেদে রেলওয়ে স্টেশনে থেকে চলে এলাম কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন , পূর্বে চিতপুর স্টেশন নামে পরিচিত )
চিতপুর রেলষ্টেশনে এসে বাইরে বের হয়েই পেলাম অনেক ট্যাক্সি। এবারে পরিবার সহ ভ্রমণের উদ্দেশ্যটাই ছিল সস্তাতে, তাই সিদ্ধান্ত নিয়ছিলাম আগে থেকেই , মারকুইজ ষ্ট্রিটের আশেপাশেই থাকব। নন এসি হলুদ ট্যাক্সি গুলো চাইল ৭০০ রুপি, কেউ চাইল ৫০০ রুপি।
সামনে বা দিকে সামান্য একটু হেটে গিয়ে পেলাম কলকাতা রেলস্টেশন থেকে প্রি-পেইড ট্যাক্সি কাউন্টার যা কলকাতা পুলিশ দিয়ে নিয়ন্ত্রিত। কলকাতা
রেলওয়ে স্টেশন থেকে সহজে ট্যাক্সি ধরতে আর লাইন দেওয়ার ঝক্কি থেকে বাঁচতে ওলা কিংবা
উবের ক্যাব খোঁজার দুশ্চিন্তা না করেই চলে গেলাম কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন এলাকার প্রি-পেইড ট্যাক্সি কাউন্টারে। কলকাতা রেলস্টেশন থেকে মারকুইজ ষ্ট্রিটে যাব বলতেই একটি স্লিপ ধরিয়ে দিল, ভাড়া মাত্র ১২৫ রুপি। ৭ কিমি এর পথ। এসেই হোটেলের খোজে লেগে গেলাম আর পেয়েও গেলাম ১১/১এ, মারকুইজ ষ্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০১৬ তে অবস্থিত ডি,কে,ইন্টারন্যাশনাল হোটেল।
৪০০০ রূপীতে পেয়ে গেলাম সকল সুবিধা সহ পেয়ে গেলাম ফ্যামিলি স্যুইট
( ১১/১এ, মারকুইজ ষ্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০১৬ তে অবস্থিত ডি,কে,ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে )
( ১১/১এ, মারকুইজ ষ্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০১৬ তে অবস্থিত ডি,কে,ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের বিজনেস কার্ড )
( ১১/১এ, মারকুইজ ষ্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০১৬ তে অবস্থিত ডি,কে,ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের রিসিপশন অ্যান্ড ওয়েটিং রুম )
( ডি,কে,ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের মেইন গেটের সামনেই বিক্রি হয় তরতাজা, পরিচ্ছন্ন ফল, ছবিতে আমার ছোট ছেলে শিজা পেঁপে খাচ্ছে।)
( আফ্রীন রেস্টুরেন্ট এ আমি)
( আফ্রীন রেস্টুরেন্টে আমার ছোট ছেলে শিজা)
রাতের খাবার শেষে, ক্লান্ত আর পরিশ্রান্ত হয়ে, ফিরে এলাম ১১/১এ, মারকুইজ ষ্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০১৬ তে অবস্থিত ডি,কে,ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে আর রুমে প্রবেশ করেই, সকলে শাওয়ার নিয়ে , দিলাম একটা ঘুম।
( ডি,কে,ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের রুমে আমার ছোট ছেলে শিজা)
( হোটেলের রুমের জানালা দিয়ে কলকাতার ভোরের আকাশ)
বরাবরের মতই খুব ভোরেই ঘুম ভেঙ্গে গেল। পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসাথে এই প্রথমবার কলকাতাতে প্রথম সকাল। যদিও এর আগে অনেক বার এই কলকাতাতে আসা হয়েছে বিভিন্ন কারনে।
৭ টার আগেই প্রস্তুতি নিলাম গ্রাউন্ড ফ্লোরে অবস্থিত ডি.কে. ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের নিজস্ব রেস্টুরেন্টে যাওয়ার জন্য কমপ্লিমেন্টারী বুফে ব্রেকফাষ্ট খেতে ২ জন এডাল্ট আর দুইজন চাইল্ড।
( ১১/১এ, মারকুইজ ষ্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০১৬ তে অবস্থিত ডি,কে,ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের গ্রাউন্ড ফ্লোরের রেস্টুরেন্টে বুফে ব্রেকফাস্ট এর সময় আমরা)
খাবারের মান মন্দ নয়। ঝাল আর মসল্লা কম আর যথেষ্ট সুস্বাদু। আনলিমিটেড, যত পার, নাও আর খাও। সেলফ সার্ভিস
পানি, দুধ, চা, কফি, ফ্রুট জুস
ব্রেড, জ্যাম, বাটার
ডিম, চাপাতি, পরটা, সবজি, ডাল, হালুয়া আর কলা।
( ডি,কে,ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের রিসিপশন আর মেইন গেটের মাঝের খোলা জারগাতে দাঁড়িয়ে কলকাতাতে শিজার প্রথম সকাল)
পেট ভরে সবাই মিলে ধীরে সুস্থে ব্রেকফাষ্ট করে, রুমে গিয়ে, শাওয়ার নিয়ে সবাই মিলে বের হয়ে পরলাম নতুন হোটেলের খোঁজে, বাজেট ২০০০ থেকে ৩০০০ রুপির মাঝে উয়িদ ম্যাক্সিমাম ফ্যাসিলিটিস। যেন পরের দিনদুপুর ১২ তার আগেই চেক আউট করতে পারি আবার সবাই মিলে সেলফ সিটি ট্যুরও হয়ে গেল, সাথে পছন্দ মত জায়গাতে দুপুরের আর রাতের খাবার খেয়ে একবারের রাতে ঘুমানোর জন্য ডি.কে. ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে ফেরার পরিকল্পনা করে বউ আর বাচ্চারদের নিয়ে বের হয়ে পরলাম।
আজও রয়ে গেছে সিটি অফ জয় কিংবা সিটি অব কালচার নামে খ্যাত পুরনো শহর কলকাতাতে ঐতিহ্য টাঙ্গা বা হাত-টানা রিকশা। দূরত্ব ভেদে ভাড়া ১০-৫০ রুপি পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতিদিন প্রায় ২০০-৩০০ রুপি পর্যন্ত আয় করেন তারা।
পার্ক স্ট্রিট, মার্কু স্ট্রিট, নিউমার্কেট এলাকা, কলেজ স্ট্রিটসহ শহরের বিভিন্ন জায়গা এ বাহন চলে। তবে দেখা যায়, এ রিকশার অধিকাংশ চালকই প্রবীণ।
হাতে টানা রিকশার উদ্ভাবন ১৬ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে, জাপানে৷ ১৯ শতকে যানটি গোটা এশিয়ায় বহুল ব্যবহৃত এক গণ-বাহন হয়ে দাঁড়ায়৷ ১৮৮০ সালে ভারতে প্রথম রিকশা চালু হয় হিমাচল প্রদেশের সিমলায়৷ সেখান থেকে হাতে টানা রিকশা চলে আসে কলকাতায়৷ ১৯১৪ সাল নাগাদ কলকাতায় ভাড়াটে রিকশার চলন হয়৷ এরপর এত বছর পরেও কলকাতার কোনো কোনো অঞ্চলে টিকে আছে এই হাতে টানা রিকশা৷
কলকাতার প্রধান সড়কপথগুলোতে এখন অবশ্য আর রিকশা চলাচলের অনুমতি দেয় না পুলিশ৷ তার প্রথম কারণ রিকশার মতো ধীরগতির যানের কারণে রাস্তায় যানজট তৈরি হয়৷ তবে অন্য আর একটি কারণ হলো, আজকের দিনে রিকশার সওয়ারি হওয়া নিরাপদও নয়৷ ফলে কিছুটা বাধ্য হয়েই রিকশারা আশ্রয় নিয়েছে পুরনো কলকাতার গলি-ঘুঁজিতে, যেখানে ব্যস্ত ট্রাফিকের তাড়াহুড়ো নেই৷ রিকশায় চড়ে দুলকি চালে সফর করাও উত্তর কলকাতার অনেক বাসিন্দারই এখনও পছন্দসই৷
আধুনিক কোনো যন্ত্রচালিত যানের সঙ্গে গতি বা স্বাচ্ছন্দ্যে পাল্লা দিতে পারে না আদ্যিকালের রিকশা৷ তা-ও এটি কী করে কলকাতায় থেকে গেল, তার কিছু নির্দিষ্ট কারণ আছে৷ এখনও অনেক বয়স্ক মানুষ রিকশা চড়তে পছন্দ করেন কারণ, এই যানটি তাঁদের জন্য যাকে বলে একেবারে হ্যাসল-ফ্রি৷ ঠিক একই কারণে অনেক বাড়ির বাচ্চারাও স্কুলে যাওয়ার সময় রিকশায় চড়ে যায়৷ তবে কলকাতা শহরে রিকশার সবথেকে বড় উপযোগিতা বোঝা যায় বর্ষায়৷
যেহেতু শহরের রাস্তায় এখনও রিকশা চলে, মেরামতির জন্য রিকশার নিজস্ব হাসপাতালও নেই নেই করে এখনও দু-একটি টিকে আছে৷ এগুলো বিশেষভাবে হাতে টানা রিকশার মেরামতির জন্যই৷ অন্য কোনও কাজ এখানে হয় না৷ তবে আজকাল অসুবিধে হয়, কারণ রোজগার প্রতিদিনই কমছে৷ কাজ জানা লোকেরও অভাব৷ যদিও বা লোক পাওয়া গেল, তাদের দেওয়ার মতো যথেষ্ট কাজ পাওয়া যায় না৷ দোকানের মালিক শুয়ে বসেই দিন গুজরান করেন৷
কলকাতার প্রধান সড়কপথগুলোতে রিকশা চলাচলের অনুমতি দেয় না পুলিশ৷
টাঙ্গা বা হাতে-টানা রিকশাটি সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি। চাকা দু’টিও কাঠের তৈরি। পা রাখার জায়গা থেকে যুক্ত থাকে রিকশা টেনে নেওয়ার হাতল। যাত্রীর বসার সুবিধার জন্য তৈরি করা হয় খড়ের আরামদায়ক গদি। তবে এ হাতে-টানা রিকশাটিতে রোদ-বৃষ্টি থেকে যাত্রী কে রক্ষা করার জন্য থাকে ছাউনি।
রিকশা তৈরি বা মেরামতিতে কিন্তু এখনও সেই পুরনো পদ্ধতিই বহাল৷ রিকশার চাকা যেমন এখনও কাঠ দিয়েই তৈরি হয়৷ মাঝখানের অংশটা যথারীতি লোহার, কিন্তু বাকি চাকার জন্য কারিগরদেরই জোগাড় করে আনতে হয় উঁচু মানের কাঠ যা শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা শহরের খানা-খন্দে ভরা এবড়ো খেবড়ো রাস্তা দিয়ে রিকশাকে গড়গড়িয়ে নিয়ে যাবে৷ সওয়ারিকে নিয়ে রিকশা যাতে ভেঙে না পড়ে, তার জন্য ভালো কাঠ বা লোহা যেমন দরকার, তেমনই দরকার ওস্তাদ কারিগর৷
সওয়ারিদের যাতে কষ্ট না হয়, সেজন্যও রিকশাওয়ালারা সমান যত্নবান৷ যাত্রীদের বসার গদিটি যাতে ঠিকঠাক থাকে, এর জন্য নিয়মিত তার পরিচর্যা হয়৷ কাপড় আর রঙিন প্লাস্টিকের তৈরি এই গদির খোলে কী থাকে জানেন তো? না, তুলো বা ফোম নয়, নির্ভেজাল খড়৷ প্রকৃতি-বান্ধব উপাদান ব্যবহার করার এমন নমুনা কি আর কোনো শহুরে যানের ক্ষেত্রে দেখেছেন? রিকশা দূষণ ছড়ায় না, এটাও একটা খেয়াল রাখার মতো বিষয়৷
পেট ভরে সবাই মিলে ধীরে সুস্থে ব্রেকফাষ্ট করে, রুমে গিয়ে, শাওয়ার নিয়ে সবাই মিলে বের হয়ে পরলাম নতুন হোটেলের খোঁজে, বাজেট ২০০০ থেকে ৩০০০ রুপির মাঝে উয়িদ ম্যাক্সিমাম ফ্যাসিলিটিস। যেন পরের দিনদুপুর ১২ তার আগেই চেক আউট করতে পারি আবার সবাই মিলে সেলফ সিটি ট্যুরও হয়ে গেল, সাথে পছন্দ মত জায়গাতে দুপুরের আর রাতের খাবার খেয়ে একবারের রাতে ঘুমানোর জন্য ডি.কে. ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে ফেরার পরিকল্পনা করে বউ আর বাচ্চারদের নিয়ে বের হয়ে পরলাম।
আজও রয়ে গেছে সিটি অফ জয় কিংবা সিটি অব কালচার নামে খ্যাত পুরনো শহর কলকাতাতে ঐতিহ্য টাঙ্গা বা হাত-টানা রিকশা। দূরত্ব ভেদে ভাড়া ১০-৫০ রুপি পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতিদিন প্রায় ২০০-৩০০ রুপি পর্যন্ত আয় করেন তারা।
পার্ক স্ট্রিট, মার্কু স্ট্রিট, নিউমার্কেট এলাকা, কলেজ স্ট্রিটসহ শহরের বিভিন্ন জায়গা এ বাহন চলে। তবে দেখা যায়, এ রিকশার অধিকাংশ চালকই প্রবীণ।
হাতে টানা রিকশার উদ্ভাবন ১৬ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে, জাপানে৷ ১৯ শতকে যানটি গোটা এশিয়ায় বহুল ব্যবহৃত এক গণ-বাহন হয়ে দাঁড়ায়৷ ১৮৮০ সালে ভারতে প্রথম রিকশা চালু হয় হিমাচল প্রদেশের সিমলায়৷ সেখান থেকে হাতে টানা রিকশা চলে আসে কলকাতায়৷ ১৯১৪ সাল নাগাদ কলকাতায় ভাড়াটে রিকশার চলন হয়৷ এরপর এত বছর পরেও কলকাতার কোনো কোনো অঞ্চলে টিকে আছে এই হাতে টানা রিকশা৷
কলকাতার প্রধান সড়কপথগুলোতে এখন অবশ্য আর রিকশা চলাচলের অনুমতি দেয় না পুলিশ৷ তার প্রথম কারণ রিকশার মতো ধীরগতির যানের কারণে রাস্তায় যানজট তৈরি হয়৷ তবে অন্য আর একটি কারণ হলো, আজকের দিনে রিকশার সওয়ারি হওয়া নিরাপদও নয়৷ ফলে কিছুটা বাধ্য হয়েই রিকশারা আশ্রয় নিয়েছে পুরনো কলকাতার গলি-ঘুঁজিতে, যেখানে ব্যস্ত ট্রাফিকের তাড়াহুড়ো নেই৷ রিকশায় চড়ে দুলকি চালে সফর করাও উত্তর কলকাতার অনেক বাসিন্দারই এখনও পছন্দসই৷
আধুনিক কোনো যন্ত্রচালিত যানের সঙ্গে গতি বা স্বাচ্ছন্দ্যে পাল্লা দিতে পারে না আদ্যিকালের রিকশা৷ তা-ও এটি কী করে কলকাতায় থেকে গেল, তার কিছু নির্দিষ্ট কারণ আছে৷ এখনও অনেক বয়স্ক মানুষ রিকশা চড়তে পছন্দ করেন কারণ, এই যানটি তাঁদের জন্য যাকে বলে একেবারে হ্যাসল-ফ্রি৷ ঠিক একই কারণে অনেক বাড়ির বাচ্চারাও স্কুলে যাওয়ার সময় রিকশায় চড়ে যায়৷ তবে কলকাতা শহরে রিকশার সবথেকে বড় উপযোগিতা বোঝা যায় বর্ষায়৷
যেহেতু শহরের রাস্তায় এখনও রিকশা চলে, মেরামতির জন্য রিকশার নিজস্ব হাসপাতালও নেই নেই করে এখনও দু-একটি টিকে আছে৷ এগুলো বিশেষভাবে হাতে টানা রিকশার মেরামতির জন্যই৷ অন্য কোনও কাজ এখানে হয় না৷ তবে আজকাল অসুবিধে হয়, কারণ রোজগার প্রতিদিনই কমছে৷ কাজ জানা লোকেরও অভাব৷ যদিও বা লোক পাওয়া গেল, তাদের দেওয়ার মতো যথেষ্ট কাজ পাওয়া যায় না৷ দোকানের মালিক শুয়ে বসেই দিন গুজরান করেন৷
কলকাতার প্রধান সড়কপথগুলোতে রিকশা চলাচলের অনুমতি দেয় না পুলিশ৷
টাঙ্গা বা হাতে-টানা রিকশাটি সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি। চাকা দু’টিও কাঠের তৈরি। পা রাখার জায়গা থেকে যুক্ত থাকে রিকশা টেনে নেওয়ার হাতল। যাত্রীর বসার সুবিধার জন্য তৈরি করা হয় খড়ের আরামদায়ক গদি। তবে এ হাতে-টানা রিকশাটিতে রোদ-বৃষ্টি থেকে যাত্রী কে রক্ষা করার জন্য থাকে ছাউনি।
রিকশা তৈরি বা মেরামতিতে কিন্তু এখনও সেই পুরনো পদ্ধতিই বহাল৷ রিকশার চাকা যেমন এখনও কাঠ দিয়েই তৈরি হয়৷ মাঝখানের অংশটা যথারীতি লোহার, কিন্তু বাকি চাকার জন্য কারিগরদেরই জোগাড় করে আনতে হয় উঁচু মানের কাঠ যা শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা শহরের খানা-খন্দে ভরা এবড়ো খেবড়ো রাস্তা দিয়ে রিকশাকে গড়গড়িয়ে নিয়ে যাবে৷ সওয়ারিকে নিয়ে রিকশা যাতে ভেঙে না পড়ে, তার জন্য ভালো কাঠ বা লোহা যেমন দরকার, তেমনই দরকার ওস্তাদ কারিগর৷
সওয়ারিদের যাতে কষ্ট না হয়, সেজন্যও রিকশাওয়ালারা সমান যত্নবান৷ যাত্রীদের বসার গদিটি যাতে ঠিকঠাক থাকে, এর জন্য নিয়মিত তার পরিচর্যা হয়৷ কাপড় আর রঙিন প্লাস্টিকের তৈরি এই গদির খোলে কী থাকে জানেন তো? না, তুলো বা ফোম নয়, নির্ভেজাল খড়৷ প্রকৃতি-বান্ধব উপাদান ব্যবহার করার এমন নমুনা কি আর কোনো শহুরে যানের ক্ষেত্রে দেখেছেন? রিকশা দূষণ ছড়ায় না, এটাও একটা খেয়াল রাখার মতো বিষয়৷
তবু হাতে টানা রিকশা উঠে যাচ্ছে কলকাতা থেকে৷ কারণ, একজন মানুষ আর একজন মানুষকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে, এটা অনেকের কাছেই খুব অমানবিক মনে হয়৷ সাইকেল রিকশাতে যদিও একই ঘটনা ঘটে, কিন্তু সেক্ষেত্রে চালক প্যাডেলের মাধ্যমে কিছুটা যান্ত্রিক সুবিধা পান৷ যদিও এই রিকশা নিয়ে রোমান্টিকতার কোনো শেষ নেই৷ পরিচালক বিমল রায়ের ‘দো বিঘা জমিন’ ছবির গোটা ক্লাইম্যাক্স সিনটিই গড়ে উঠেছে দুটি হাতে টানা রিকশার রেষারেষির মধ্য দিয়ে৷
তাই দিনের শেষে পড়ন্ত সূর্যের আলোয় যখন ছায়া দীর্ঘতর হয়, আর রাস্তার একধারে স্থবির হয়ে অপেক্ষায় থাকে সওয়ারি না পাওয়া একটি রিকশা, ব্যস্ত শহর তার পাশ দিয়ে ছুটে যেতে যেতে তার কর্কশ কলরবে যেন বারবার মনে পড়িয়ে যায়, এবার সময় হয়েছে বিদায় নেওয়ার৷ আধুনিক সময়ের গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে না রিকশা৷ সে কারণেই রাজপথ থেকে সরে গিয়ে তাকে মুখ লুকোতে হয়েছে গলিতে৷ খুব শিগগিরই বোধহয় সেই আড়ালটুকুও যাবে৷
তাই দিনের শেষে পড়ন্ত সূর্যের আলোয় যখন ছায়া দীর্ঘতর হয়, আর রাস্তার একধারে স্থবির হয়ে অপেক্ষায় থাকে সওয়ারি না পাওয়া একটি রিকশা, ব্যস্ত শহর তার পাশ দিয়ে ছুটে যেতে যেতে তার কর্কশ কলরবে যেন বারবার মনে পড়িয়ে যায়, এবার সময় হয়েছে বিদায় নেওয়ার৷ আধুনিক সময়ের গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে না রিকশা৷ সে কারণেই রাজপথ থেকে সরে গিয়ে তাকে মুখ লুকোতে হয়েছে গলিতে৷ খুব শিগগিরই বোধহয় সেই আড়ালটুকুও যাবে৷
( মারকুইজ ষ্ট্রীটের ডি,কে,ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা টাঙ্গা বা হাতে টানা রিকশাতে শিরিন আর শিজা )
বাংলাদেশে তো মানুষ দিয়ে টানা রিকশা পাওয়া যায় না, হোটেলের গেটের সামনে আসতেই এক জন জানতে চাইল কোথায় যাব, বললাম ঘুরতে, সে বলল তার রিকশা আছে, সাথে সাথেই নয়ে এল টানা রিকশা। বরাবরের মতই ঘণ্টা চুক্তিতে নিয়ে নিলাম। বের হয়ে পরলাম কলকাতা ঘুরতে সপরিবারে প্রথম। আসলে সপরিবারে ঘুরার মজাই আলাদা।
( মারকুইস ষ্ট্রীট আর সদর ষ্ট্রীটের মাঝে হোটেল যাপন এর সামনে আমি আর বড় ছেলে শাবাব ছিলাম হাসিমুখেই, কিন্তু বউ শিরিন আর ছোট ছেলে শিজা টাঙ্গা বা হাতে টানা রিকশাতে ভয়ে অস্থির )
ঘুরতে ঘুরতে মারকুইস ষ্ট্রীট, মির্জা গালিব ষ্ট্রীট, আলিমুদ্দিন স্ট্রীট , চউরিঙ্গী লেন, রফি আহমেদ কিদোয়ারী রোড, কলিন লেন, সদর স্ট্রীট, রানী রাশমনী রোড, লিন্ডসে স্ট্রিট, লেনিন সরণী রোড, পার্ক স্ট্রিট ঘুরে ফেললাম আর অনেক হোটেল আর লজ দেখলাম, কিন্তু ব্যাটে বলে মিলছেও না , আর রানও হচ্ছে না।
এই ছবিতে আমরা মীর্জা গালিব ষ্ট্রীটে ফায়ার ব্রিগেড হেডকোয়ারটারস এর সামনে, আমাদের সামনে মারকুইস ষ্ট্রীটের ক্রসিং আর পেছনে এস,এন,ব্যানারজী রোডের ক্রসিং, আমাদের ঠিক বা দিকে, সদর ষ্ট্রীট ( Sudder Street ) যেটা সোজা গিয়ে মিলিত হয়েছে চৌরঙ্গী রোডে।
মানে একেক জায়গাতে এক এক সমস্যাঃ
( ৫ এ, সদর ষ্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০১৬ তে অবস্থিত হোটেল ওয়ালসন এর বিজনেস কার্ড )
( ৫ এ, সদর ষ্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০১৬ তে অবস্থিত হোটেল ওয়ালসন এর রুম ভাড়ার তালিকা, ৬০০০ রুপি থেকে শুরু প্রতি রাত )
( হোটেলের রিসিপশনে শিজা আর শিরিন)
( হোটেলের রিসিপশনে শাবার আর আমি)
- কোথাও সব ঠিক আছে, কিন্তু ভাড়া আমাদের বাজেটের চেয়েও অনেক বেশী।
( ৮, সদর ষ্ট্রীট, কলকাতা- ৭০০০১৬ তে অবস্থিত অশোক গেষ্ট হাউজ, ৪০০ রুপিতে ডাবল বেড, ছয় তলাতে, লিফট নেই। মুলত ব্যাকপ্যাকারদের জন্য, অনেক বিদেশিরাও এখানে থাকে।)
-- কোথাও সব ঠিক আছে, কিন্তু লিফট নেই, কিন্তু থাকতে হবে ছয় তলাতে।
- কোথাও সব ঠিক আছে, ভাড়াও অনেক কম, কিন্তু পরিবেশ অনেক বেশী নোংরা।
ঘুরতে ঘুরতে এ,জে,সি, বোস রোডের কাছাকাছি চলে এলাম কিন্তু রিকশা মেইন রোডে যাবে না। সামান্য কিছু হাটতেই মাদার তেরেসা হোমস, পাশেই পেলাম, ৬২ এ।জে। সি বোস রোড, কলকাতা, সেখানে হোটেল হেভেন।
ঘুরতে ঘুরতে এ,জে,সি, বোস রোডের কাছাকাছি চলে এলাম কিন্তু রিকশা মেইন রোডে যাবে না। সামান্য কিছু হাটতেই মাদার তেরেসা হোমস, পাশেই পেলাম, ৬২ এ।জে। সি বোস রোড, কলকাতা, সেখানে হোটেল হেভেন।
(৬২ এ,জে, সি ,বোস রোডে অবস্থিত হোটেল হেভেন এর লবি)
এখানে ডি.কে. ইন্টারন্যাশনাল হোটেল এর মত ভিতরে বড় খোলা জায়গা নেই। একদম মেইন রোডের উপর, যেখানে ট্যাক্সি, বাস, ট্রাম, রিকশা সবই পাওয়া যায় আর হোটেলের লবি থেকেই উঠা যায়।
( হোটেল হেভেন এর বিজনেস কার্ড)
ভিতরে অনেক পরিস্কার। বেড রুম উইথ লিভিং রুম পেলাম ২৬০০ রুপিতে, রুম গুলোও অনেক বড় আর ওয়েল ডেকোরেটেডঃ
( হোটেল হেভেন এর গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে উপরে উঠার সিঁড়ি, লিফটও আছে)
(রুমের সাথেই এটাচড বাথ, ভিতরে দুটি বড় তোয়ালে, দুই সেট করে টুথব্রাশ, টুথ পেষ্ট, শ্যাম্পু, শাওয়ার জেল, বডি লোশন, টয়লেট পেপার, টিস্যু পেপার)
রুমের ভিতরে ঢুকতেই একটি লিভিং রুম আর ভেতরে বেড রুম উইথ ডাবল বেড, পাশের সোফাটিকেও ডাবল বেড বানানো যায়।
ফ্রী ওয়াইফাই ( উয়িদ আউট এনি সাফারিং অ্যান্ড বাফারিং), ফ্রী ড্রিঙ্কিং ওয়াটার, টিভি উইথ ডিস অ্যান্ড এসি।
খুবই সাজানো গুছানো আর পরিপাটি, পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন।
ডি.কে. ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের মতই সকল সুবিধা পেলাম আর টাকাও ১৫০০ রুপি কম। পরের দিনের জন্য দুই রাতের বুকিং দিয়ে বলে আসলাম দুপুর ২টায় চেক ইন করব।
দুপুরের খাবার সবাই মিলে দেরীতেই খেলাম, মারকুইস ষ্ট্রীট আর রফি আহমেদ কিদোয়ারী রোড এর সংযোগস্থল থেকে ব্যাংক অব বারোদা বা আইসিআইসিআই ব্যাংক এর এটিএম বুথ এর দিকে অসাধারন এক রেস্তোরায় -- আফ্রীন রেস্টুরেন্ট এ ( হালাল খাবার এর জন্য), যেখানে গতকাল কলকাতাতে পৌঁছেই রাতেও খেয়েছি। সবাই অনেক বেশী ক্ষুধার্ত ছিলাম তাই নতুন কোন রেস্তোরাঁর খোজে যাইনি।
আফ্রীন রেস্টুরেন্টটিঃ
- অনেক বেশী পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন
- হালাল খাবার পাওয়া যায়
- ওয়েটারদের সার্ভিস অনেক ভাল
- খাবার গুলো ঝাল আর মসল্লা পরিমিত
আর
-স্বাদ? অসাধারণ ! ! !
যদিও খাবারের দাম একটু বেশী, তবে ৫ বা ৪ তারকা মানের রেস্টুরেন্টগুলোর মত অত বেশী নয়। দুজন এডাল্ট আর দুজন চাইল্ড এর বিল আসল ১৫০০ রুপির মত।
বাচ্চারা ছিল ক্লান্ত আর পরিশ্রান্ত। খাবার খেয়ে ফিরে গেলাম ১১/১ এ, মারকুইজ ষ্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০১৬ তে অবস্থিত ডি,কে,ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের রুমে বিশ্রামের জন্য।
কলকাতাতে কেন যাচ্ছি বা কলকাতা থেকে কোথায় যাব বা কলকাতা্তে কি করব, তার উপর নির্ভর করছে, কলকাতাতে কোথায় থাকব।
যারা, এসি , ওয়েল ডেকোরেটেড রুম, কমপ্লিমেন্টারি বুফে ব্রেকফাস্ট, লিফট, ওয়াইফাই, এটাচড বাথ চান না, তারা মারকুইস ষ্ট্রীট, মির্জা গালিব ষ্ট্রীট, আলিমুদ্দিন স্ট্রীট , চউরিঙ্গী লেন, রফি আহমেদ কিদোয়ারী রোড, কলিন লেন, সদর স্ট্রীট (মারিয়া সহ অনেক থাকার জায়গা পাবেন যেখানে অনেক বিদেশীরাও থাকছে), রানী রাশমনী রোড, লিন্ডসে স্ট্রিট, লেনিন সরণী রোড, পার্ক স্ট্রিট এ সময় নিয়ে ঘুরাঘুরি করলে অনেক এবং অনেক সস্তাতেও থাকার ব্যবস্থা করতে পারবেন।
অনেক রুম পাবেন, ৩০০ টাকা প্রতি রাত, যদি একা থাকেন, যদি আপনারা দুজন হন, তবে অনেক রুম পাবেন ৪০০ টাকা প্রতি রাত ( জন প্রতি ২০০ টাকা), পরিবার নিয়ে জন্য বহু লজ পাবেন, ৪০০ থেকে ৬০০ টাকার মত প্রতি রাত।
যদি শুধুমাত্র থাকার বাজেট প্রতি রাত ২ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা তবে থাকা যায়ঃ
Hotel the Sojourn (Salt Lake City)
The Pearl Hotel ( Opp Salt Lake Stadium, VIP gate on EM Bypass Road)
Hotel Eastern Plaza ( Raghunathpur)
Roland Hotel ( Elgin)
Hotel East Palace ( Diamond Harbour Road)
Hotel East Palace ( Bidhannagar)
Fortune Park Panchwati ( Howrah)
Dee Empresa Hotel,
Hotel Royal Garden
যারা চান একমোডেশন উয়িদ এসি , ওয়েল ডেকোরেটেড রুম, কমপ্লিমেন্টারি বুফে ব্রেকফাস্ট, লিফট, ওয়াইফাই, এটাচড বাথ, লবি উইথ বিগ স্ক্রীন টি,ভিঃ
আপনি যদি মেইন রোডের পাশে , বাইরেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চান, তবে অবশ্যই মারকুইস ষ্ট্রীট, আলিমুদ্দিন স্ট্রীট , চউরিঙ্গী লেন, রফি আহমেদ কিদোয়ারী রোড, কলিন লেন, সদর স্ট্রীট ( যদিও সদর স্ট্রীটে কিছু হোটেল আছে, ব্যয়বহুল, প্রতি রাত ৩০০০ টাকা থেকে ৭,০০০টাকা, পরিবেশ অনেক উন্নত) এড়িয়ে চলবেন, সেক্ষেত্রে চলে যাবেনঃ ৬২ এ।জে। সি বোস রোড, সেখানে পাবেন হোটেল হেভেন এঃ
এখানে ডি.কে. ইন্টারন্যাশনাল হোটেল এর মত ভিতরে বড় খোলা জায়গা পাবেন না, কারন, একদম মেইন রোডের উপর, যেখানে আপনি পাবেন ট্যাক্সি, বাস, ট্রাম, রিকশা । ভিতরে অনেক পরিস্কার। , ডাবল রুম পাবেন লিভিং রুম ছাড়া ২৬০০ টাকা, লিফট পাবেন, ওয়াইফাই ফ্রী, ফ্রী বুফে ব্রেকফাস্ট পাবেন( তবে বাংলাদেশের মত আনলিমিটেড আইটেম না)।
আর যদি নিউ মার্কেট এর আশে পাশে থাকতে চান, তাহলে যেতে পারেন - ১৮, এস এন ব্যানার্জী রোড, নিউ মার্কেট এরিয়া , ধর্মতলা তালতলা কলকাতা , এখানে পাবেন হোটেল আউরা।
ডি.কে. ইন্টারন্যাশনাল হোটেল, মারকুইস ষ্ট্রীট থেকে হেঁটে গেলে ১০ মিনিট, আর হোটেল হেভেন, এ।জে। সি বোস রোড থেকে হেঁটে গেলে ২৫ মিনিট। হোটেল আউরা মুলত ডি.কে. ইন্টারন্যাশনাল হোটেল আর হোটেল হেভেন থেকেও অনেক উন্নত।
হোটেল আউরা নিউ মার্কেট শুধুমাত্র তিন মিনিট এর হাটার পথ। থিয়েটার রোড এসি মার্কেট, বর্ধমান মার্কেট, ময়দানের বাজার, চাঁদনি চক মার্কেট হোটেল থেকে সহজেই যেতে পারবেন। বুরাবাজারের বিখ্যাত পাইকারি বাজারটি হোটেলটির কর্নারে পাবেন। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, টিপু সুলতান এবং নাখোড়া মসজিদ, রাইটার্স বিল্ডিং, টাউন হল, ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম, বিড়লা প্ল্যানেটারিওম, সেন্ট পল ক্যাথিড্রাল, শহীদ মিনার এবং কালীঘাটের বিখ্যাত কালী মন্দিরটি হোটেল আউরা থেকে খুবই কাছে।
যদি বাজেট প্রতি রাত ৪ হাজার টাকা থেকে ৬ হাজার টাকা হয়, তবে থাকা যায়ঃ
Senses Hotel
Ethnotel
The Samilton Hotel
Park Prime
Indismart Hotel
Hotel 233 Park Street
The Senator Hotel
বাজেট প্রতি রাত ৬ হাজার টাকা থেকে ৮ হাজার টাকা হলেঃ
Hyatt Regency
Swissôtel Kolkata
Park Plaza
The Lalit Great
বা
The Pride Hotel
বাংলাদেশ থেকে এডভান্স বুকিং দিয়ে সুইমিং পুল সহ কলকাতাতে বিলাসবহুল রাত্রি যাপন করতে চাইলে, এই হোটেল্গুলো ঃ
- ৪এ, জে,বি,এস, এইচ এভিনিউতে JW Marriott Hotel এ। ট্যাক্সিতে কলকাতা রেল ষ্টেশন থেকে স্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস/ঠাকুরনগর পাঁচপোতা রোড হয়ে ২৫ - ৩০ মিনিটের পথ। পৌঁছে যাবেন JW Marriott Hotel এ।
- - ট্যাক্সিতে কলকাতা রেল ষ্টেশন থেকে ১০ কি,মি এর পথ, ২৫ - ৩০ মিনিট লাগবে , রাইচরণ সাধুখাঁ রোড এবংক্যানেল সার্কুলার রোড বিধাননগর এ ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস/ঠাকুরনগর পাঁচপোতা রোড এর দিকে সায়েন্স সিটির বিপরিতে, ১, জেবিএসএইচ এভিনিউ তে অবস্থিত ITC Sonar Bangla তে।
যদি শুধুমাত্র থাকার বাজেট প্রতি রাত ১০ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা হয়, সে ক্ষেত্রে থাকা যায়ঃ
- ট্যাক্সিতে কলকাতা রেল ষ্টেশন থেকে ৬ কি,মি এর পথ, ১৫ -২০ মিনিট লাগবে , যতীন্দ্র মহান এভিনিউ রোড এবং চিত্তরঞ্জন এভিনিউর পথ ধরে নিউ মার্কেট এ ১৫, জওহরলাল নেহেরু রোড, নিউ মার্কেট এরিয়া, ধর্মলাল, তালতলা তে অবস্থিত The Oberoi Grand এ।
- এছাড়া Taj Bengal বা The Gateway Hotel এ।
আমি কলকাতাতে সপরিবারে অধিক ব্যয় বহুল আবার মধ্যম মানের অনেক জায়গায়তেই থেকেছি, কখনো এডভান্স বুকিং দেইনি, তবে আপনি দিতে পারেন, বিভিন্ন ভাবে দেওয়া যায়। সকল হোটেলই ( সাধারনতঃ ১০০০ টাকার নিচে ছাড়া ) এডভান্স বুকিং নেয়।
যারা প্রথমবার কলকাতা যাচ্ছেন, তাদের জন্য হোটেল এডভান্স বুকিং করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ ।
আর যারা ব্যবসায়িক কাজে
যারা প্রথমবার কলকাতা যাচ্ছেন, তাদের জন্য হোটেল এডভান্স বুকিং করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ ।
আর যারা ব্যবসায়িক কাজে
সন্ধ্যাতে আবার সবাই মিলে বের হলাম রাতের কলকাতা দেখতে আর রাতের খাবার বাইরে খেতে।
সন্ধ্যায় সবাই মিলে খেলাম মাটির ভাঁড়ে স্বর সহ গরুর খাঁটি দুধ ( খাঁটি গরুর দুধ নয় কিন্তু) আর চা, যা আমি শুধুমাত্র কোলকাতাতেই পেয়েছি।
মাটির ভাঁড়ে দুধ বা চা যাই দেয়, দেওয়ার আগে কোন দোকানে কাপ ধোয়া হয় না। মাটি হল ‘‘নন-কন্ডাক্টর অফ হিট’’। ফলে, ভাঁড়ের চায়ের তাপমাত্রা প্রায় ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও, তাপ শেষ পর্যন্ত হাতে এসে পৌঁছয় না। কিন্তু এই মাটির ভিতরেই থাকে অজস্র ছিদ্র। যাকে পরিভাষায় বলে ‘‘পোর্স’’। জলে ভাঁড় ধুলে এই ছিদ্রগুলিতে জল ঢুকে যায়। জল হল কন্ডাক্টর অফ হিট। অর্থাৎ, তাপের সুপরিবাহী। ছিদ্রে জল ঢুকে গেলে, সেই জল বেয়ে তাপ চা থেকে চলে আসবে হাতে। তখন আর ভাঁড় ধরাই যাবে না। সে কারণেই চা দেওয়ার আগে কোনও দোকানে কাপ ধোয়া হয় না।
রাতের কলকাতায় মাটির ভাঁড়ে গরম দুধ হাতে শিজা।
মাটির ভাঁড়ে করে দুধ,চিনি,পাতা মেশানো কড়া চা কিম্বা স্পেশাল মালাই চা | লেবু, বিটনুন সহযোগে লিকার চা কিম্বা চিনি ছাড়া লিকার |
- মোকা কফি কিম্বা জাফরানি চায়ের স্বাদ পেতে এসপ্ল্যানেড মোড় থেকে হগ মার্কেটের দিকে যেতে টাইম গেস্ট হাউসের ঠিক সামনেই পরবে সদর স্ট্রিটের চায়ের ঠেক, সাথে টোস্ট অমলেট, আদা চা,মধু চা,লেবু চা,মসলা চাত, মধু সহযোগে গ্রীন টি।
- সিম পার্ক মলের ঠিক বিপরীত ফুটপাথের মধ্যবিত্ত গোছের চায়ের দোকানগুলিতে | আরেকটি দোকান স্কুপের গলিতেও |
- বহুবছরের পুরনো ডেকার্স লেনে চিত্তদার চায়ের দোকান |
-
প্যারাডাইস সিনেমা হলের কাছে ফালতু টি শপ |
- ৬৯ বি সূর্য সেন স্ট্রিটের ফেভারিট কেবিন সাথে কড়া চা, ডিম টোস্ট আর প্যান কেক ।
(রাতের কলকাতায় মাটির ভাঁড়ে গরম দুধ হাতে শাবাব)
অসাধারণ নুন ছাড়া পনির, গরম গরম বিভিন্ন ধরনের কাবাব, নুডুলস সহ আরো কত কি ! ! ! ! !
নিউ মার্কেট, সদর ষ্ট্রীট, রাফি আহমেদ কিদোয়ারী রোড, মীর্জা গালিব ষ্ট্রীটে লোকাল খাবারের স্টলগুলোতে পাওয়া যায় ফ্রায়েড রাইস , চাওমিন , পেস্ট্রি , চিকেন বিরিয়ানি , কাঠী রোল , দই বড়া, পানিপুরি, ফ্রাইড চিকেন , চিলি চিকেন , ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ, ক্রিম চিজ দেওয়া এগ রোল, লিভার রোল, ক্লিয়ার সুপ, চিকেন মম ( যা আমি নেপালেও খেয়েছি), দোসা, ছোলা বাটোরা, কাবাব ( পার্ক সার্কাসেও পাওয়া যায়)
( সদর ষ্ট্রীটে ফুটপাতে কয়লায় ভাজা ভুট্টা )
অত্যন্ত কম দামে অসাধারণ স্বাদের গরুর গোশত সহ শুধুমাত্র বিভিন্ন ধরনের হালাল ফুড খেয়েছি, মারকুইস ষ্ট্রীট, আলিমুদ্দিন স্ট্রীট , চউরিঙ্গী লেন, রফি আহমেদ কিদোয়ারী রোড, কলিন লেন, সদর স্ট্রীট, রানী রাশমনী রোড, লিন্ডসে স্ট্রিট, লেনিন সরণী রোড, পার্ক স্ট্রিট, জাকারিয়া স্ট্রিট, সেন্ট্রাল এভিনিউ, আম্রাতলা লেন, রাজস্থান গেষ্ট হাউজ বা নাখোদা মসজিদ এর আশে পাশে যে কোন রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলেই তারা নিয়ে যায় নিকটস্থ যে কোন রেষ্টুরেন্টে যেখানে পাওয়া যায় অত্যন্ত কম দামে আচার, পাঁপড়, লুচি, তরকারি, মাছের ঝোল সহ অসাধারণ স্বাদের হালাল ফুড।
( রাতের খাবারে আমরা খাচ্ছি হালাল চিকেন পুদিনা বোনলেস শিক কাবাব )
অনেক দোকানে গরুর গোস্ত পেয়েছি, অন্ততপক্ষে ৫ থেকে ১০ রকমের। খেয়েছি বিভিন্ন ধরনের বিরিয়ানী।
( রাতের খাবারে আমরা খাচ্ছি হালাল চিকেন বাটার বোনলেস শিক কাবাব )
( রাতের খাবারে আমরা খাচ্ছি বেবি নান )
( রাতের খাবার শেষে কলকাতার সদর ষ্ট্রীটে ঘুরাঘুরি)
( কলকাতাতে শাবাব আর শিজার রাতের ঘুরাঘুরি )
কলকাতাতে উপভোগ করেছি বাঙালি, চীনা, উত্তর ভারতীয় , থাই, দক্ষিণ ভারতীয়, মূঘলীয় ও কন্টিনেন্টাল খাবার। যারা পরিবার নিয়ে বা একা ভাল পরিবেশে, আরামদায়ক ভাবে, এসি তে, রুচিসম্মত খাবার ( দাম মধ্যম পর্যায়ের, একবারে সস্তা নয়, আবার ৫ তারকা মানের দামীও নয়) :
- অসাধারণ সব উন্নত আর মুখরোচক খাবারের সমাহার পাবেন, হলদিরামে। যা আমার মুখে এখনো আছেঃ রাজ কাচোরি, দোসা ( সাউথ ইন্ডিয়ান ফুড), কাচরি চাট, পাপড়ি চাট, রসগোল্লা, মিষ্টি দই ।
- পার্ক স্ট্রিট মেট্রো ষ্টেশন এর কাছে ডোমিনো'স পিজা, Trincas, Magnolia, One Step Up, Flurys, টুং ফুং এ যেতে পারেন বাংলাদেশের চাইনিজ ফুড থেকে ভিন্ন স্বাদের ।চাইনিজ ফুড খেতে চান।
- রাসেল ষ্ট্রিট এ Waldrof
- পার্ক স্ট্রিট আর রানী রাশমনী রোড এর সংযোগস্থলে ম্যাকডনাল্ড'স এ
- পার্ক স্ট্রিট আর রানী রাশমনী রোড এর সংযোগস্থলে বিপরীতে স্যার উইলিয়াম জোন্স সরণীতে Bistro by the park, Golden spoon
- মিডল্টন স্ট্রিট এ Fire and Ice Pizzeria
- অসাধারণ স্বাদের গরুর গোশত সহ বিভিন্ন ধরনের শুধুমাত্র হালাল ফুড খেয়েছি। আশে পাশে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই খোঁজ পেয়েছি নিকটস্থ যে কোন রেষ্টুরেন্টে যেখানে পাওয়া গরুর গোশত, কাবাব মাছের ঝোল সহ অসাধারণ স্বাদে বিভিন্ন ধরনের হালাল ফুড।
পরিবার নিয়ে বা একা কম দামে খেতে :
খাবারের অসংখ্য ছোট ছোট রেষ্টুরেন্ট পাবেন মারকুইস ষ্ট্রীট, সদর স্ট্রিট এ যেখানে ভাত, মাছ সহ অনেক বাঙ্গালী ঘরোয়া খাবার পাবেন কম দামে, যদিও পরিবেশ ভাল নয়। এ ধরনের রেষ্টুরেন্ট গুলোতে খাবারের আগে অবশ্যই মেনু আর দাম কত তা কনফার্ম করে ওয়েটারের কাছ থেকে খাবার নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। বিশেষ করে গ্রুপ করে খেলে।
দ্যা চিপেষ্ট ফুড ফর হিচ হাইকার অর ব্যাকপ্যাকারঃ
কলকাতাতে এমন কোন জায়গা আমি পাইনি যেখানে রাস্তার ওপর খাবারের দোকান নেই, স্ট্রিট ফুডের ছড়াছড়ি মারকুইস ষ্ট্রীট, আলিমুদ্দিন স্ট্রীট , চউরিঙ্গী লেন, রফি আহমেদ কিদোয়ারী রোড, কলিন লেন, সদর স্ট্রীট, রানী রাশমনী রোড, লিন্ডসে স্ট্রিট, লেনিন সরণী রোড, পার্ক স্ট্রিট, জাকারিয়া স্ট্রিট, সেন্ট্রাল এভিনিউ, আম্রাতলা লেন, রাজস্থান গেষ্ট হাউজ বা নাখোদা মসজিদ এর আশে পাশে। পেয়েছি বাঙ্গালী থেকে চাইনিজ, সাউথ ইন্ডিয়ান থেকে নর্থ ইন্ডিয়ান সহ সবই সস্তা ও সাধ্যের মধ্যে।
যারা স্ট্রিট ফুড এ অভ্যস্ত, গরম গরম অসাধারণ সুস্বাদু খাবার খেতে চান কিন্তু খাবারের আশেপাশের পরিবেশ নিয়ে মাথা ঘামান না, খেতে চান দ্যা চিপেষ্ট, হাইজেনিক এর বিষয়টা যাদের কাছে ধর্তব্য নয়, দাঁড়িয়ে খেতে অভ্যস্ত, তারা খেতে পারেন কলকাতার বিভিন্ন জায়গাঁতে।
- সকালে খেতে পারেন মারকুইস ষ্ট্রীট, সদর স্ট্রিট, নিউ মার্কেট এ থাকা অসংখ্য সব টং দোকান আর বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে ফুটপাতে প্লাস্টিক দিয়ে ঢাকা প্লেটে নানা রকম ফল দিয়ে সাজানো মিক্সড ফ্রুট সালাড। খুব সস্তায় ( ১০ / ২০ / ৩০ রুপি), তাজা ফলের রস খেয়েছি ( কমলা, মাল্টা আর মুসাম্বি), আমাদের সামনেই ফল থেকে নিংড়ে গ্লাসে করে পরিবেশন করল কোন পানি কিংবা চিনি ছাড়াই, ১৫ , ২৫ আর ৩০ টাকা দাম প্রতি গ্লাস, খেতে পারেন মিষ্টি ।
- লাঞ্চ এর সময় তিল ধারণের জায়গা থাকে না। Eastern Railway HQ, NS Rd, Fairley Place, BBD Bagh এর কাছে, লাল দালান ঘেঁষে ফুটপাথের দুই ধারে অনেক টং দোকান পাবেন। খেতে পারেন, কয়লা ছেকা ফুলে উঠা রুটি, গরম ভাত আর ডাল, ভাতের ওপর গরম ডাল, পাশে একটু আলু ভাজা আর মেথি ফোড়ন দিয়ে করা পেঁপের তরকারি ।পেটপুরে যত পারেন ( ভাত আর ডাল ছাড়া বাকী খাবারগুলো কিন্তু পেটপুরে নয় ! ! !) সাথে নানা রকম মাছ, সবজি, ডিম, ভর্তা, মিষ্টি, নানা রকম খিচুরী, বিরিয়ানী, ফল সহ আরো অসাধারণ সব খবারের সমাহার। কিছু কিছু টঙ্ক দোকানে সবজি ভাত ১৫ টাকা। ডিম ভাত ২০ টাকা। আর পেঁয়াজ মরিচ ফ্রি। আরো পাবেন ঘুগনি, তরকা, কচুরি-আলুর দম, রসগোল্লা, পিঠে-পুলি ।
কলকাতার প্রধান ব্যাবসায়িক কেন্দ্রস্থল এবং দর্শনীয় স্থান বিবাদী বাগ ( BBD Bagh) বা ডলহৌসি স্কোয়্যার তিনজন বিপ্লবী বিনয়, বাদল আর দীনেশ-এর নাম অনুসারে হয়েছিল।
আমরা ঢাকা থেকে ঢাকা টু কলকাতা ওয়ান ওয়ে ট্রেন টিকেট কিনেছিলাম। রিটার্ন টিকেটও কেনা যায়।
হোটেল হেভেনে উঠে ট্রেনের টিকেট কেনার জন্য খোঁজ খবর নিতেই , জানতে পারলাম, মারকুইস ষ্ট্রীট, আলিমুদ্দিন স্ট্রীট , চউরিঙ্গী লেন, রফি আহমেদ কিদোয়ারী রোড, কলিন লেন, সদর স্ট্রীট , নিউমার্কেট সহ অন্যান্য অনেক জায়গাতে এজেন্সি অফিস আছে টিকেট ( এয়ার / বাস / রেল) কাটার জন্য।
সেক্ষেত্রে সময়ও বাচবে, আর কষ্টও কম হবে, কিন্তু এজেন্সিতে অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে।
সবচেয়ে বড় কথা , কলকাতার এই এজেন্সিগুলো বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছে এয়ার, বাস , ট্রেন এর বাজেট টিকেটগুলো বিক্রি করে না। বাংলাদেশী দেখলেই তারা লাক্সারী টিকেটগুলো অফার করে বলে এছাড়া অন্য কোন কম দামী টিকেট নেই।
কলকাতার এই এজেন্সীগুলো এটাও বলে না যে, কোথায় গেলে নন এসি, কম দামী টিকেট পাওয়া যায়।
তথ্য সংগ্রহ করে জানতে পারলাম Eastern Railway HQ, NS Rd, Fairley Place, BBD Bagh, Kolkata, West Bengal 700001, India থেকে ট্রেনের টিকেট ( কলকাতা টু ঢাকা অথবা কলকাতা টু ভারতের যে কোন জায়গায়) কেনা যায়। জানতে পারলাম সকাল ৯ টায় টিকেট কাউন্টার খোলে।
জিপিএস এ দেখলাম হোটেল হেভেন এ কাছেই, হেটেই যাওয়া যাবে। ট্যাক্সিতে গেলে ৫০ রুপি, কিন্তু ট্যাক্সি ড্রাইভার চায় ২০০ রুপি, হোটেল হেভেন থেকে বাসে করেও যাওয়া যায়। সিদ্ধান্ত নিলাম পরের দিন সকালে হেটেই যাব, জিপিএস থাকাতে সমস্যা হবে না।
রাতের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভোরে উঠে, রেডি হয়ে হোটেল হেভেনের সুস্বাদু বুফে ব্রেকফাস্ট খেয়ে এমন ভাবেই রওনা হলাম, যেন Eastern Railway HQ, NS Rd, Fairley Place, BBD Bagh, Kolkata, West Bengal 700001, India, সকাল ৯ টার আগেই হাজির হতে পারি।
যেতে যেতে দেরী হয়ে গেল। হাঁটার স্পীড কম থাকাতে। টিকেট কাউন্টারে গিয়ে জানতে পারলাম, নম্বর ধরে ডাকবে। নম্বর পাবো কোথায়? ফর্ম ফিল আপ করলেই সিরিয়াল নম্বর দিবে। ফর্ম পাবো কোথায়? গেটে। গেলাম দৌড়ে, ফর্ম আনার জন্য। ডেস্ক থেকে বলল, ফর্ম? সেতো শেষ, আজকের মত। কি উপায়? বলল আগামীকাল আসুন। তবে সকাল সকাল আসবেন কিন্তু !
ভোঁর পাচটা থেকেই টিকেটের ক্রেতারা আস্তে শুরু করে, সেখানে একটি সিরিয়াল নম্বর দেয়, সেই অনুযায়ী সকাল নয়টা থেকে লাইন ধরতে হয় আর শুধু মাত্র সেই লাইনে দাড়িয়ে ভেতরে যাবার সময় ফর্ম দেয়। ভেতরে যে অবস্থা দেখলাম, তাতে মনে হল ভোর ৫টা নয়, ৩টা সময় আসব।
পরের দিন ভোর তিনটায় হোটেল হেভেন থেকে ট্যাক্সিতে করে ৫০ রুপি দিয়ে আবার চলে এলাম Eastern Railway HQ, NS Rd, Fairley Place, BBD Bagh, Kolkata, West Bengal 700001, India, তে এই আশাতে যে লাইনের প্রথমে থাকব, এসে দেখি গেটের সামনে দুইজন দাঁড়িয়ে, কেন? কলকাতা টু ঢাকা এর টিকেট কিনবে আমারই মত। তারমানে রাত তিনটায় এসে, আমি লাইনের তিন নম্বরে। সামনের জনের হাতে একটি লম্বা কাগজ আর কলম, আমাকে জিজ্ঞেস করল নাম আর পাসপোর্ট নম্বর, বললাম আর সিরিয়াল নম্বর ৩ মনে রাখলাম।
দেখতে দেখতে আমার পিছনে চোখের পলকে হয়ে গেল জনা বিশেক। ভোর ৬ টার মাঝেই হয়ে গেল শ খানেক। Eastern Railway HQ এর সিকিউরিটির শিফট চেঞ্জিং এর পরে যারা আসল, তাদের হাতে লিষ্ট ধরিয়ে দিয়ে আবার হোটেলে চলে আসলাম ব্রেকফাস্ট করতে।
ব্রেকফাস্ট করে শাওয়ার নিয়ে সকাল ৯টায় ট্যাক্সি বউ আর বাচ্চা দুটোকে নিয়ে আবার চলে গেলাম Eastern Railway HQ, NS Rd, Fairley Place, BBD Bagh, Kolkata, West Bengal 700001, India, গেটের সামনে যেতেই দেখি বিশাল সিরিয়াল আর কে যেন উচ্চস্বরে ডাকছে, ৩ নম্বর ! ৩ নম্বর ! ! দৌড়ে গেলাম আর বললাম আমি। এরপর সিরিয়াল ধরে ভিতরে গেলাম, গেটে ফর্ম দিল, সেই ফর্ম ফিল আপ করে অপেক্ষা করলাম কাউন্টারের সামনে থাকা চেয়ারগুলোতে। একটু পরেই ডাক এল কাউন্টার থেকে ৩ নম্বর ! ৩ নম্বর ! !
( সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হবার আগে ২০১৬ তে সবচেয়ে কম দামে ৫২৫ রুপিতে সবাই পেয়ে গেলাম নন এসি চেয়ারের কলকাতা টু ঢাকার ওয়ান ওয়ে টিকেট)
টিকেট কাউন্টারে গিয়ে আমাদের সবার জন্য টিকেট কিনলাম ঢাকা টু কলকাতার নন এসি ওয়ান ওয়ে। ঢাকাতে কেনার সময় ট্রাভেল ট্যাক্স ৫০০ দিতে হয়েছিল, কিন্তু কলকাতা থেকে কলকাতা টু ঢাকা এর ট্রেনের টিকেট কেনার সময় ট্রাভেল ট্যাক্স ৫০০ দিতে হয় না।
৩ নং সিরিয়ালে থাকাতে খুবই দ্রুত টিকেট হাতে পেয়ে গেলাম। পরে যারা এসেছিল, টিকেট তো দুরের কথা, সিরিয়াল আর ফর্মই পাচ্ছে না, তারা তো হতবাক, আমার দ্রুত গতিতে টিকেট প্রাপ্তিতে, গোপন রহস্যটা বলে দিলাম তাদের সবাইকে, বললাম চলে আসুন রাত তিনটায় রাতের কলকাতা দেখতে দেখতে, আর দাঁড়িয়ে যান সিরিয়ালে, তবেই আমার মত দ্রুতগতিতে পেয়ে যাবেন টিকেট! হাহাহা শুনে তারা ত হতবাক, আগের দিনে এসে আমি যেমন হতবাক হয়েছিলাম।
আমার এবারের ভারতীয় ভিসা প্রাপ্তি আর কলকাতা টু ঢাকা ট্রেন টিকেট কেনা , দুটোই ছিল পুরোপুরি ব্যাতিক্রম ঘটনা।
১। মিলেনিয়াম পার্ক:
কলকাতা মহানগরী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এক মস্তিস্কপ্রসুত উদ্ভাবন কলকাতার মিলেনিয়াম পার্ক।কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের জমির উপর এই মিলেনিয়াম পার্ক গড়ে উঠেছে। কলকাতার মিলেনিয়াম পার্কটি স্থাপনের পিছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল পর্যটনকে উন্নীত করা এবং কিছু প্রশংসনীয় সৌন্দর্যের সঙ্গে নদীর তীরকে লাবণ্যময় করে তোলা।
মিলেনিয়াম পার্কের প্রধান আকর্ষণ হল নদীর নৈকট্যতা। শত-শত দর্শক সারাদিন ধরে এই উদ্যানে ভিড় করে। উদ্যানটির চারিপাশ সবুজ গাছপালায় আচ্ছাদিত। মিলেনিয়াম পার্কের মহানুভব এবং মার্জিত সৌন্দর্যের অভ্যন্তরে আরাম করে বসার জন্য অনেক বেঞ্চ রয়েছে।
প্রধান উদ্যানের পাশে শিশুদের জন্য একটি স্বতন্ত্র ছোট পার্ক রয়েছে যেখানে তারা নাগরদোলা, স্লাইডস, দোলনা ইত্যাদিতে চড়তে পারে। এছাড়াও মিলেনিয়াম পার্কের ভিতরে একটি খাদ্য-সংযোগ রয়েছে যেখানে আপনি কলকাতার সুস্বাদু স্ন্যাকস এবং খাবারের স্বাদ গ্রহণ করতে পারেন। যারা ছায়ার নীচে বসতে চান তাদের জন্য এখানে কুঁড়েঘর আকৃতির আশ্রয়স্থল রয়েছে।
কলকাতার মিলেনিয়াম পার্কে ঘুরতে যাওয়ার শ্রেষ্ঠ সময় হল সন্ধ্যাবেলা যখন মিলেনিয়াম পার্ককে অন্ধকার আকাশের নীচে রঙিন আলোয় বিস্ময়কর মনে হয়। এই সময় আপনি পার্কের মধ্যে বসতে পারেন এবং কলকাতার মিলেনিয়াম পার্কের মহৎ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।
২। হাওড়া ব্রিজ:
হাওড়া ব্রিজ পশ্চিমবঙ্গে রবীন্দ্র সেতু নামেও সুপরিচিত। কলকাতায় হাওড়া ব্রিজ হুগলী নদীর উপর প্রসারিত এবং ব্রিটিশদের একটি বিস্ময়কর প্রযুক্তি কর্ম বলে মনে করা হয়। বিশ্বের ব্যস্ততম প্রসারিত খিলান সেতুর মধ্যে হাওড়া ব্রিজ অন্যতম।
হাওড়া ব্রিজ প্রত্যহ প্রায় ৬০,০০০ যানবাহন ও অসংখ্য পথচারীর চলাচলের ভার বহন করে। হাওড়া ব্রিজ কলকাতা মহানগরী ও হাওড়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। তাই হাওড়া ব্রিজ এই মহানগরীর জীবনরেখা স্বরূপ। হাওড়া ব্রিজ কলকাতার হুগলী নদীর উপর অবস্থিত তিনটি ব্রিজের মধ্যে একটি। বস্তুত, এটি ঔপনিবেশিক শহরের সবচেয়ে ভাবপ্রবণ বৈশিষ্ট্য এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় হিসেবে খ্যাত।
হাওড়া সেতু নির্মাণ করতে দীর্ঘ ৭ বছর সময় লেগেছে। হাওড়ার এই প্রসারিত খিলান সেতুর কাজ সম্পন্ন হয় ১৯৪৩ সালে। কলকাতায় হাওড়া ব্রিজ এই একই বছরের মধ্যে যানবাহন চলাচল এবং জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয়। এই সেতুর নির্মাণে খরচ হয়েছিল প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। হাওড়া ব্রিজ এর পুরো কাঠামোটি রিভেট দ্বারা নির্মিত, যেখানে আপনি কোথাও নাট ও বোল্ট এর ব্যবহার দেখতে পাবেন না।
বর্তমানে, হাওড়া ব্রিজ কলকাতার প্রবেশদ্বার স্বরূপ, যেটি এই শহরকে হাওড়া স্টেশনের সাথে সংযুক্ত করে, যা হল কলকাতার মূল রেলওয়ে স্টেশন ও ভারতের সবথেকে ব্যস্ততম স্টেশন।
হাওড়া ব্রিজ ৭০৫ মিটার দীর্ঘ এবং ৯৭ ফুট চওড়া। হাওড়া ব্রিজের পরিকাঠামো ২৬,৫০০ টন প্রসারন সাধ্য ইস্পাত দ্বারা নির্মিত, যা দুটি স্তম্ভদ্বারা সাহায্যপ্রাপ্ত। প্রতিটি স্তম্ভ রাস্তার ঊর্ধ্বভাগে ৯০ মিটার জুড়ে অবস্থিত।
৩। হুগলী নদীঃ
হুগলি নদী বা ভাগীরথী-হুগলী পশ্চিমবঙ্গে নদীর একটি শাখানদী। পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত এই নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২৬০ কিলোমিটার। মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কা বাঁধ থেকে একটি খালের আকারে নদীটি উৎসারিত হয়েছে। হুগলি জেলার হুগলি-চুঁচুড়া শহরটি (পূর্বনাম হুগলি) এই নদীর তীরে অবস্থিত। হুগলি নামটির উৎস অজ্ঞাত, তাই জানা যায় না যে নদী না শহর কোনটির নামকরণ আগে হয়েছিল।
ভাগীরথী নামটি পৌরাণিক। কিংবদন্তী অনুযায়ী, রাজা ভগীরথ মর্ত্যলোকে গঙ্গা নদীর পথপ্রদর্শক ছিলেন বলে গঙ্গার অপর নাম ভাগীরথী। হুগলি নামটি অপেক্ষাকৃত অর্বাচীন। ইংরেজ আমলেই সর্বপ্রথম ভাগীরথীর দক্ষিণভাগের প্রবাহকে হুগলি নামে অভিহিত হয়।
ভাগীরথী-হুগলি গঙ্গার মূল প্রবাহপথ নয়। গঙ্গা নদীর মূল প্রবাহটি পদ্মা নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবাহিত। লোকবিশ্বাসে ভাগীরথী-হুগলিও গঙ্গার মূল ধারা এবং সেই অর্থে পবিত্র ও পূজ্য। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা এই নদীর তীরেই অবস্থিত।
বাংলার প্রাচীন সংস্কৃত গ্রন্থে ও লেখমালায় সর্বত্রই ভাগীরথীকে গঙ্গা বলা হয়েছে। ধোয়ীর পবনদূত গ্রন্থে ত্রিবেণী-সঙ্গমের ভাগীরথীকেই বলা হয়েছে গঙ্গা। লক্ষণসেনের গোবিন্দপুর পট্টোলীতে বেতড়ে পূর্ববাহিনী নদীটি জাহ্নবী নামে অভিহিত। বল্লালসেনের নৈহাটি লিপিতে ভাগীরথীকে ‘সুরসরিৎ’ অর্থাৎ স্বর্গীয় নদী আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যেও ভাগীরথীর উদার প্রশস্তি করা হয়েছে। পদ্মাপুরাণ, কবিকঙ্কণ চণ্ডী এমনকি মুসলমান কবিদের রচনাতেও গঙ্গার স্তুতি দেখা যায়। ১৪৯৪ সালে রচিত বিপ্রদাস পিপলাই-এর মনসামঙ্গল কাব্যে অজয় নদ থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত ভাগীরথী-হুগলির প্রবাহপথের এক মনোজ্ঞ বর্ণনা পাওয়া যায়, যার সঙ্গে ১৬৬০ সালে দেওয়া ফান ডেন ব্রোকের তথ্যের বেশ মিল লক্ষিত হয়।
গঙ্গার ২৫৩৯ কিলোমিটার দীর্ঘ পথের ৫২৪ কিলোমিটার পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত। রাজমহল পাহাড়ের উত্তর-পশ্চিমে তেলিগড় ও সকরিগলির সংকীর্ণ গিরিপথটি ঘেঁষে মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গীপুর মহকুমায় গঙ্গা পশ্চিমবঙ্গের সমভূমিতে প্রবেশ করেছে। এরপর ধুলিয়ান শহরের নিকটে এটি ভাগীরথী ও পদ্মা নামে দ্বিধাবিভক্ত হয়েছে। ভাগীরথীর প্রবাহ মুর্শিদাবাদ জেলাকে দুটি ভৌগোলিক অংশে বিভক্ত করেছে – বাগড়ি (পূর্বভাগে) ও [[রাঢ় (পশ্চিমভাগে)। এরপর নবদ্বীপ পর্যন্ত গঙ্গার নাম ভাগীরথী ও নবদ্বীপ থেকে গঙ্গাসাগর অবধি এই নদী হুগলি নামে প্রবাহিত। কলকাতা শহর হুগলির তীরেই অবস্থিত। হুগলি নদীর গড় গভীরতা ২০০ ফুট এবং সর্বচ্চো গভীরতা ৩৮১ ফুট।
৪। হাওড়া জংশন রেলওয়ে স্টেশনঃ
স্টেশন থেকে জাস্ট বাইরে পা দিয়েই নজরে পড়ে, এক বিশাল নদী হাতছানি দিয়ে ডাকছে সবাইকে৷ স্বাগত জানানোর ভঙ্গিতে গায়ের সামনে দাঁড়িয়ে৷ ইস্পাতের অনিন্দ্যসুন্দর ব্রিজে রোদ পড়ে ঝকঝক করছে৷ নানা রংয়ের নৌকোয় ঘোলা জলকেও দেখাচ্ছে অন্যরকম৷ প্রেমিক-প্রেমিকা, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা হাত ধরাধরি করে হাঁটছে নদীর ধারের চওড়া রাস্তায়৷ বাচ্চাদের হাতে বেলুন৷ দৌড়চ্ছে নদীর স্রোতের সঙ্গে৷ পাশের লাল প্রাসাদপম স্টেশনটাকে সত্যিই মনে হচ্ছে কোনও পুরোনো প্রাসাদ৷ যোধপুর বা জয়পুরের৷ গঙ্গার পাশে আরও রাজকীয়, আরও সুন্দর৷ ভয়ঙ্কর সুন্দর৷
প্যারিসের বিখ্যাত গার দে নর্দ, লন্ডনের কিংস ক্রস, নিউ ইয়র্কের গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল টার্মিনাল, বার্লিন বা জুরিখ-কোথাও এই দৃশ্য পাবেন না৷ ভারতেরও কোথাও না৷
এত বড় নদী, এত বড় সেতু কোন স্টেশনের পায়ের কাছে এসে প্রভুত্ব স্বীকার করে নিয়েছে? উত্তর হাওড়া স্টেশন৷
সস্তায় কলকাতা দেখা যায় । ট্যাক্সিতে ( নন এসি হ্লুদ বা এসি সাদা) কলকাতা ঘুরতে অনেক টাকা ব্যয় হয়, আর কলকাতার ট্যাক্সিগুলো বাংলাদেশের মত আরামদায়ক ও নয়। বিশেষ বিশেষ রুটে মিটার ট্যাক্সি ও অটোরিকশা চলে। কম দুরত্বের যাত্রার জন্য হাতে-টানা রিকশা ব্যবহার করা হয়। আরো পাওয়া যায় মেট্রো, বাস , রেল, ট্রাম।
মেট্রোঃ
৫ থেকে ১৫ রুপিতে ট্যুর করতে দক্ষ কার্যকারীতা, পরিচ্ছন্নতা, আরামপ্রদ স্বাচ্ছন্দ্যতা ও স্বল্প-সময় মানের মেট্রো রেল বা পাতাল, ভূ-গর্ভস্থ রেল সংযোগ, কলকাতার ব্যস্তবহূল শহরের কাছাকাছি প্রাপ্য সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায়। ৫ মিনিট পর পর সকাল থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত চলতে জালের মত ছড়িয়ে আছে মেট্রো রেল এর নেটওয়ার্ক , কলকাতাবাসীদের কাছে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম গুলির মধ্যে একটি।
কলকাতা মেট্রো রেল উন্নত প্রযুক্তি দ্বারা সুসজ্জিত রয়েছে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তাই প্রধান লক্ষণীয় বিষয়। মেট্রো স্টেশন ও মেট্রো রেলগুলির অভ্যন্তরীণ পরিবেশ নিয়ন্ত্রিত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং উপযুক্ত বায়ু চলাচলের জন্য ভিতরে শীতল বায়ু প্রেরণ করা হয়। প্রতিটি মেট্রো স্টেশন থেকে দৈনিক টিকিট ও একাধিক বার চড়ার টিকিট উপলব্ধ হয়। কিছু কিছু স্টেশন এস্ক্যালেটার (চলন্ত সিঁড়ি) দিয়েও সুসজ্জিত করা রয়েছে।
মোট ১৬.৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সহ বর্তমানে দমদম থেকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত প্রসারিত করা হয়েছে। এটি কবি সুভাস - শহীদ ক্ষুদিরাম - কবি নজরুল - গীতাঞ্জলী - মাস্টার দা সুর্যসেন - নেতাজি - টালিগঞ্জ - রবীন্দ্র সরোবর - কালীঘাট - জতীন দাস পার্ক -নেতাজী ভবন - রবীন্দ্র সনদ - ময়দান - পার্ক স্ট্রীট - এসপ্লানেড - চাঁদনী চক - সেন্ট্রাল - M.G রোড -গিরিশ পার্ক - শোভা বাজার - শ্যাম বাজার - বেল গাছি - দম দম রুটে যাতায়াত করে।
এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশনের পাশেঃ
নিউমার্কেট
ইডেন গার্ডেন
নেতাজী সুভাস স্টেডিয়াম
মিলেনিয়াম পার্ক
হুগলী ব্রিজ
হাইকোর্ট
বাবু-ঘাট
প্রিন্সেস ঘাট
ফোর্ট উইলিয়াম
কার্জন পার্ক
শহীদ মিনার।
ময়দান মেট্রো স্টেশনের পাশেঃ
ভিক্টোরিয়াল মেমোরিয়াল
গড়ের মাঠ
ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম
ময়দান।
মহাত্মা গান্ধী মেট্রো স্টেশনের পাশেঃ
রাম মন্দির
মার্বেল প্লেস
বড় বাজার।
রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশনের পাশেঃ
রবীন্দ্র সরোবর
লায়ন সাফারি পার্ক।
চাঁদনী চক মেট্রো স্টেশনের পাশেঃ
চাঁদনী চক।
রবীন্দ্র সদন মেট্রো স্টেশনের পাশেঃ
সেন্ট পল চার্চ।
কালীঘাট মেট্রো স্টেশনের পাশেঃ
কালীঘাট কালী মন্দির।
গিরিশ পার্ক মেট্রো স্টেশনের পাশেঃ
জোড়া সাঁকোর ঠাকুর বাড়ি।
পার্ক স্ট্রীট মেট্রো স্টেশনের পাশেঃ
ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম।
বাস ( জাতীয় সড়ক, আন্তঃ-রাজ্য সড়ক এবং অভ্যন্তরীণ-রাজ্য )
- কলকাতা থেকে রামপুরহাট, দীঘা, বহরমপুর, শিলিগুড়ি, নামখানা, ডায়মন্ড হারবার
- প্রতিবেশী রাজ্য বিহার, ঝাড়খন্ড এবং ওড়িশার বাস রয়েছে।
- পশ্চিমবঙ্গ বাসগুলি আন্তর্জাতিকভাবে যাতায়াত করে। রাজধানী শহর কলকাতা থেকে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ এবং ভূটানের নিয়মিত রয়েছে।
- বর্তমানে কলকাতা থেকে ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা পর্যন্ত বাস চালু হয়েছে বাংলাদেশ এর মধ্য দিয়ে।
রেলঃ
প্রধান রেলওয়ে স্টেশন হল হাওড়া রেলওয়ে স্টেশন ও শিয়ালদহ স্টেশন।
শিয়ালদহ বা শিয়ালদা কলকাতা শহরের অন্যতম প্রধান রেলস্টেশন। শুধুমাত্র শহরতলির ট্রেন ও যাত্রীসংখ্যা ধরলে শিয়ালদহ ভারতের ব্যস্ততম রেলস্টেশন, শিয়ালদহ ষ্টেশন ১৮৬৯ খ্রীস্টাব্দে চালু হয়। এখান থেকে তৎকালীন পূর্ব বঙ্গীয় রেল বিভাগ এর আওতায় ছিল। দেশভাগ এর আগে দার্জিলিং মেল শিয়ালদহ হতে রাণাঘাট, গেদে-দর্শনা পথ ধরে বর্তমান বাংলাদেশ এর মধ্যে দিয়ে শিলিগুড়ি যেত। ১৯৪৭ সালে দেশভাগ এর সময় পূর্ব বঙ্গীয় রেল এর শিয়ালদহ বিভাগ ভারতের পূর্ব রেল এর আওতা ভুক্ত হয় এবং অবশিষ্ট অংশ তদাতিনন্তন পূর্ব পাকিস্তান এর অন্তর্গত হয়।
গুরুত্ব পূর্ন স্টেশন গুলিঃ
কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন
শালিমার রেলওয়ে স্টেশন।
সবচেয়ে বড় রেলওয়ে স্টেশন হল হাওড়া জংশন।এই স্টেশনে মোট ২৩ টি প্লাটফর্ম ও ২৮ টি রেল ট্রাক রয়েছে।এই স্টেশন থেকে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ট্রেন চলাচল করে।শিয়ালদাহ হল পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারত এর ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশন, মোট ১৮ টি প্লাটফর্ম রয়েছে। রয়েছে একটি শহরতলি রেল ব্যবস্থা । পশ্চিমবঙ্গের প্রধান রেল পথ বা রেল রুট গুলি হলঃ
- হাওড়া-দিল্লি লাইন
- হাওড়া-চেন্নাই মেন লাইন
- হাওড়া-নাগপুর-মুম্বাই লাইন
ও
- হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি লাইন।
ট্রাম:
অতি নিজস্ব ঐতিহ্য” - রূপে আখ্যায়িত দূষণমুক্ত, পরিবেশ-বান্ধবরূপে ট্রাম সস্তায় পরিষেবা প্রদান করে কলকাতায় । কলকাতাই ভারতের এমন একমাত্র শহর এবং বিশ্বেরও সেই কয়েকটি শহরের মধ্যে একটি যেখানে এখনও ট্রামের প্রচলন ১৮৭৩ সাল থেকে চলে আসছে। ট্রামের রুটগুলোঃ
রুট নং - ১ বেলগাছিয়া - এসপ্ল্যানেড
রুট নং - ২ বেলগাছিয়া - বিবাদী বাগ
রুট নং - ৩ বেলগাছিয়া - এসপ্ল্যানেড
রুট নং – ৪ বেলগাছিয়া - বিবাদী বাগ
রুট নং – ৫ শ্যামবাজার - এসপ্ল্যানেড
রুট নং – ৬ শ্যামবাজার - বিবাদী বাগ
রুট নং – ৭ বাগবাজার - এসপ্ল্যানেড
রুট নং - ৮ বাগবাজার - বিবাদী বাগ
রুট নং – ৯ শ্যামবাজার - এসপ্ল্যানেড
রুট নং – ১০ শ্যামবাজার - বিবাদী বাগ
রুট নং – ১১ বেলগাছিয়া - হাওড়া স্টেশ ন্
রুট নং – ১২ গালিফ স্ট্রীট - হাওড়া স্টেশন্
রুট নং – ১৩ গালিফ স্ট্রীট - হাওড়া স্টেশন্
রুট নং – ১৪ রাজাবাজার - বিবাদী বাগ
রুট নং – ১৫ হাই কোর্ট - এসপ্ল্যানেড
রুট নং – ১৫/১২ রাজাবাজার - হাওড়া স্টেশন্
রুট নং – ১৬ বিধাননগর - বিবাদী বাগ
রুট নং – ১৭ বিধাননগর - এসপ্ল্যানেড
রুট নং – ১৮ পার্ক সার্কাস - হাওড়া স্টেশন্
রুট নং – ২০ পার্ক সার্কাস - হাওড়া স্টেশন্
রুট নং – ২২ পার্ক সার্কাস - বিবাদী বাগ
রুট নং – ২৪ বালিগঞ্জ স্টেশন - বিবাদী বাগ
রুট নং – ২৪/২৯ বালিগঞ্জ - টালিগঞ্জ
রুট নং – ২৫ বালিগঞ্জ স্টেশন - বিবাদী বাগ
রুট নং – ২৬ বালিগঞ্জ স্টেশন - হাওড়া স্টেশন
রুট নং – ২৭ বালিগঞ্জ স্টেশন - বেহালা
রুট নং – ২৮ টালিগঞ্জ - এসপ্ল্যানেড
রুট নং – ২৯ টালিগঞ্জ - এসপ্ল্যানেড
রুট নং – ৩০ কালিঘাট - হাওড়া স্টেশন
রুট নং – ৩১ কালিঘাট - এসপ্ল্যানেড
রুট নং – ৩২ টালিগঞ্জ - হাওড়া স্টেশন
রুট নং – ৩৫ বেহালা - এসপ্ল্যানেড
রুট নং – ৩৬ ক্ষিদিরপুর - এসপ্ল্যানেড
রুট নং – ৩৫/৩৬ বেহালা - ক্ষিদিরপুর
রুট নং – ৩৭ জোকা - বিবাদী বাগ
জাকারিয়া স্ট্রিট এর কাছাকাছি বা সেন্ট্রাল এভিনিউ অথবা আম্রাতলা লেন এর কাছাকাছি অথবা রাজস্থান গেষ্ট হাউজ এর পাশেই নাখোদা মসজিদ
নাখোদা মসজিদ কলকাতার প্রধান মসজিদ। এটি মধ্য কলকাতার বড়বাজার এলাকার জাকারিয়া স্ট্রিট ও রবীন্দ্র সরণির সংযোগস্থলে অবস্থিত। কচ্ছের একটি ছোট্ট সুন্নি মুসলমান সম্প্রদায় কুচ্চি মেমন জামাত আগ্রার সিকান্দ্রায় অবস্থিত মুঘল সম্রাট আকবরের সমাধি সৌধের অনুকরণে এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। কুচ্চি মেমন জামাত সম্প্রদায়ের নেতা আবদুর রহিম ওসমান এই মসজিদের স্থাপক। তিনি নিজে ছিলেন বিশিষ্ট নাবিক। নাখোদা শব্দেরও অর্থ নাবিক। ১৯২৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এই মসজিদটি স্থাপিত হয়। সেই সময় মসজিদটি তৈরি করতে মোট খরচ হয়েছিল ১,৫০০,০০০ টাকা।
কলকাতা চিৎপুর অঞ্চলে অবস্থিত নাখোদা মসজিদ কলকাতার প্রধান মসজিদ। মহাত্মা গান্ধী রোড থেকে চিত্পুর, রবীন্দ্র সরণি ধরে দক্ষিণমুখী ৫ মিনিটের পথে জাকারিয়া স্ট্রিটের সংযোগস্থলে এই নাখোদা মসজিদ। এটি কলকাতার বৃহত্তম মসজিদ। আগ্রার সিকান্দ্রাতে তৈরি আকবরের সমাধির আদলে ইন্দো-শৈলীতে লাল বেলে পাথরে রূপ পেয়েছে নাখোদা মসজিদটিতে। একত্রে ১০ হাজার মুসল্লি এখানে নামাজ পড়তে পারেন। পাশেই রয়েছে সিঁদুরিয়া পট্টিতে হাফিজ জালাল উদ্দিনের মসজিদ। আর সুন্দর কারুকার্যময় মানিকতলায় কারবালা মসজিদ।
এখানে আগে একটা ছোট মসজিদ ছিল। সেই জায়গাতেই এই মসজিদ তৈরি করেছিলেন কচ্ছের একটি ক্ষুদ্র সুন্নি মুসলিম সম্প্রদায় কাচ্ছি মেমন জামাত। তাঁদের নেতা আব্দুর রহিম ওসমান ছিলেন পেশায় সমুদ্র বণিক, তিনিই এই মসজিদ তৈরির অর্থ দান করেছিলেন। নাখোদা শব্দের অর্থ নাবিক।
১৯২৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এই মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। মসজিদ সম্পূর্ণতা পায় ১৯৪২-এ। এই মসজিদ তৈরি করতে ১৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল। চার তলা বিশিষ্ট নাখোদা মসজিদের প্রার্থনাঘরে ১০ হাজার মানুষ প্রার্থনা করতে পারেন। এতে ১৫১ ফুট উঁচু তিনটি গম্বুজ ও দুটি স্তম্ভ আছে। এ ছাডা় ১০০ থেকে ১১৭ ফুট উঁচু স্তম্ভ আছে অনেকগুলি। মূল দরজাটি ফতেপুর সিক্রির বুলন্দ দরওয়াজার আদলে তৈরি।এর জন্য তোলেপুর থেকে গ্র্যানাইট পাথর নিয়ে আসা হয়েছিল। অসামান্য শিল্পময়তা ও অলংকরণের মেলবন্ধন দেখা যায় এই মসজিদের নির্মাণকার্যে।
উৎসবের সময় কলকাতার নাখোদা মসজিদটিকে চমৎকার ভাবে সুসজ্জিত করা হয়। মুসলিম উৎসব বা “পরবের” সময় এই মসজিদে ঘুরতে যেতে পারেন। মহরম জাঁকালো উৎসব। সুসজ্জিত দুলদুল-সহ তাজিয়া মিছিল বেরোয়। সঙ্গে চলে লাঠি খেলা ও অস্ত্র খেলার প্রদর্শনী। নাখোদা ঘিরে দোকানপাট। কেনেকাটার মাঝে স্বাদ নেওয়া যেতে পারে ফিরনির (মিষ্টান্ন)।
এছাড়া আছে সিন্দুরাইপট্টি-তে অবস্থিত হাফিজ জালালুদ্দীন মসজিদ। মুর্শিদাবাদের নবাবদের দ্বারা নির্মিত, মানিকতলার কারবালা মসজিদটিও পরিদর্শন করতে ভুলবেন না। টিপু সুলতান-এর উত্তর পুরুষদের দ্বারা নির্মিত ১৩টি মসজিদেরও উল্লেখ করা উচিত। এগুলি ছাড়াও রাজকুমার গুলাম মহম্মদের দ্বারা নির্মিত ধর্মতলা স্ট্রিটে অবস্থিত টিপু সুলতান মসজিদটিও খুবই জনপ্রিয়।
কলকাতার নাখোদা মসজিদটি পরিদর্শন এর সময় সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত যে কোনও সময়। এর জন্য কোনও প্রবেশমূল্যের প্রয়োজন নেই।
এ ছাড়া আরো অনেক দর্শনীয় স্থান সমূহ আছে। কম টাকায় মেট্রো রেলে অথবা ট্রামে করে ঘুরে আসা যায়। আবার ট্যাক্সি করে বা গাড়ি ভাঁড়া করেও যাওয়া যায়।
জাদুঘরের গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রহের মধ্যে রয়েছে একটি মিশরীয় মমি
, ভারহুতের বৌদ্ধ স্তুপ, অশোক স্তম্ভ (ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয়
প্রতীক), প্রাগৈতিহাসিক প্রাণিদের ফসিল, শিল্প সংগ্রহ, দুষ্প্রাপ্য
প্রাচীন সামগ্রী ও ভূতাত্ত্বিক প্রস্তর সংগ্রহ।
- রাইটার্স বিল্ডিং( ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর আইনজ্ঞদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল যারা এখানে কাজ ও বসবাস করত)
- ফোর্ট উইলিয়াম ( হুগলী নদীর তীরে অবস্থিত এবং অষ্টাভূজাকৃতি যাদুঘর, যেখানে বিভিন্ন অস্ত্র ও বার্মা অভিযানের বিভিন্ন চিত্র প্রদর্শনের জন্য সাজিয়ে রাখা আছে এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের মানুষর হস্তশিল্পের প্রদর্শনী রয়েছে)
- শহীদ মিনার (ওক্টারলোনী মনুমেন্ট) ( ১৮১৪-১৬ সালে নেপাল যুদ্ধে ব্রিটিশ বিজয়ের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণে চৌরঙ্গীর দিগন্তে )
- এমপি বিড়লা প্ল্যানেটিরিয়াম ( বিশ্বের সবচেয়ে এক বৃহত্তম তারামন্ডল ৯৬২ সালে নির্মিত)
- এশিয়াটিক সোসাইটি ( শিল্প ও পুরাকীর্তি এবং একটি বিশাল গ্রন্থাগারের সমৃদ্ধ ভান্ডার এশিয়ার প্রথম আধুনিক যাদুঘর স্যার উইলিয়্যাম জোনস ১৭৮৪ খ্রীষ্টাব্দে নির্মাণ করেন)
- ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম { জওহরলাল নেহেরু রোডে অবস্থিত ৬০-টি গ্যালারিসহ ৬-টি বিভাগ ( কলা, পুরাতত্ত্ব, প্রাণিবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, ভূবিদ্যা এবং পুরাতত্ত্ব)এশিয়াটিক সোসাইটির প্রাথমিক অংশ}
ভারতের বৃহত্তম জাদুঘর একটি সাংস্কৃতিক ও বিজ্ঞান জাদুঘর।
১৮১৪ সালে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতায় এশিয়াটিক
সোসাইটি অফ বেঙ্গল এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করে। জাদুঘরের
প্রতিষ্ঠাতা কিউরেটর ছিলেন ড্যানিশ বোটানিস্ট ড. নাথানিয়েল
ওয়ালিচ। এর ছয়টি বিভাগ রয়েছে – শিল্পকলা, পুরাতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব,
ভূতত্ত্ব, প্রাণীতত্ত্ব ও অর্থনৈতিক উদ্ভিজ্জ। ভারতীয় সংবিধানের
সপ্তম তফসিলে এই প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের
মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এটি বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন জাদুঘর। এখন
এটি ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের পরিচালনাধীন।
ভারতের বৃহত্তম জাদুঘর একটি সাংস্কৃতিক ও বিজ্ঞান জাদুঘর।
১৮১৪ সালে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতায় এশিয়াটিক
সোসাইটি অফ বেঙ্গল এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করে। জাদুঘরের
প্রতিষ্ঠাতা কিউরেটর ছিলেন ড্যানিশ বোটানিস্ট ড. নাথানিয়েল
ওয়ালিচ। এর ছয়টি বিভাগ রয়েছে – শিল্পকলা, পুরাতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব,
ভূতত্ত্ব, প্রাণীতত্ত্ব ও অর্থনৈতিক উদ্ভিজ্জ। ভারতীয় সংবিধানের
সপ্তম তফসিলে এই প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের
মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এটি বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন জাদুঘর। এখন
এটি ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের পরিচালনাধীন।
- সায়্যন্স সিটি ( কলকাতার পূর্ব অংশে অবস্থিত সমগ্র ভারতে প্রথম একটি উদ্যোগ। এই ভবনে একটি দুঃসাহসিক মহাকাশ অভিযান, একটি ঝরনা উদ্যান, জীব বিজ্ঞান দৃষ্টিভঙ্গিমা ও ডাইনোসোরর ভবন রয়েছে। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিভাগ হল মহাকাশ যাত্রা। এটি একটি গম্বুজ আকৃতির ছাদ সহ বৃত্তাকার প্রেক্ষাগৃহ। এটি সকাল ৯.০০-টা থেকে রাত্রি ৯.০০-টা পর্যন্ত খোলা থাকে।)
- নিকো পার্ক: কলকাতার উত্তর-পূর্ব প্রান্তে সল্টলেক সিটি- তে অবস্থিত, এটি কলকাতার ডিসনিল্যান্ড। ‘ঝিল মিল’-নামেও এটির জনপ্রিয় রয়েছে। এটি শিশুদের খুবই আকর্ষণীয়। প্রকৃতি প্রেমিকদের জন্য এখানে নিদারুণ সুন্দর একটি গোলাপ বাগান রয়েছে। এটি পরিদর্শনের সময় হল সকাল ১১.০০-টা থেকে সন্ধ্যা ৮.০০-টা পর্যন্ত (শীতকালে) এবং সকাল ১১.০০-টা থেকে সন্ধ্যা ৯.০০-টা পর্যন্ত (গ্রীষ্মকালে)।
- আ্যকোয়াটিকা: এটি একটি জলজ উদ্যান (ওয়াটার পার্ক)। এটি কোচকুপুরে অবস্থিত। এটি জলপ্রেমীদের জন্য একটি স্বর্গ।
- বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়্যাল আ্যন্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়্যাম: বিড়লাদের দ্বারা নির্মিত , আকর্ষণীয় মধ্যযুগীয় নমুনা সহ এখানে স্থাপত্য ও আধুনিক সাহিত্যকলার সংগ্রহ রয়েছে।
- ডায়মন্ড হারবার ( কলকাতার প্রবেশপথ, সেরা সৈকত রিসর্ট , যেখানে নদী ভ্রমণের জন্য ছোট জাহাজ পাওয়া যায়, হুগলী নদীর কোলে সারাদিন কাটানোর জন্য। কলকাতা থেকে ট্রেনে যাওয়া যায়, ২০ টাকায়।
- সুন্দরবন: বিশ্বের ঐতিহ্যগত পৃথিবীর সবচেয়ে হিংস্র প্রাণী রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ও চিতল হরিণের আবাস স্থল। ভ্রমণার্থীরা এখানে বিভিন্ন বিরল প্রজাতির পাখি দেখতে পেতে পারেন, যেমন বাদামী পাখার মাছরাঙা (ব্রাউন উইংড কিংফিশার), সোয়্যাম্প প্যাটরিডজ, ধূসর মস্তকবিশিষ্ট তিতির, ম্যানগ্রোভ হুইসলার এবং আরও অনেক সুন্দর পাখি।
( মাদারস ওয়াক্স মিউজিয়ামে বউ শিরিন আর দুই ছেলে)
- মাদারস ওয়াক্স মিউজিয়ামঃ হাউজিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেনশনের আওতায় গড়ে উঠেছে মাদার্স ওয়াক্স মিউজিয়াম প্রকল্প।
( মাদার্স ওয়াক্স মিউজিয়ামে আমরা সবাই একসাথে)
মাদার্স ওয়াক্স মিউজিয়ামে সত্যজিৎ রায়, সুচিত্রা সেন, মান্না দে, সৌরভ গাঙ্গুলি, মহাত্মা গান্ধী, কপিল দেব, শচিন টেন্ডুলকারের মতো ব্যক্তিত্বদের মোট ১৯ জনের মোমের মূর্তি রয়েছে। মোমের মূর্তিগুলি গড়েছেন রাজ্যের বিখ্যাত ভাস্কর সুশান্ত রায়। বর্ধমানের আসানসোলে রয়েছে সুশান্ত রায়ের নিজস্ব ওয়াক্স মিউজিয়াম।
( পাঞ্জা লড়াইতে ব্যস্ত দুই ভাই শাবাব আর শিজা আর মুগ্ধ নয়নে নির্বাক মা)
নিউ টাউনের ফাইনান্স সেন্টারে ৫,০০০ বর্গফুট এলাকার ওপর গড়ে উঠেছে রাজ্যের প্রথম ওয়াক্স মিউজিয়াম।
ঘুরার মত আরো অনেক দর্শনীয় স্থানসমুহ আছে। যেমনঃ
ধর্মতলায় টিপু সুলতানের প্রাচীনতম মসজিদ
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল
ভাসমান জাদুঘর
রাজভবন
জুওলজিক্যাল গার্ডেন
হাইকোর্ট, বিদ্যাসাগর সেতু
বোটানিক্যাল গার্ডেন
বিধান শিশু উদ্যান
বেলুড় মঠ
আদ্যাপীঠ বন বিভাগ
আকাশ বাণী
রিজার্ভ ব্যাংক
পোস্টাল মিউজিয়াম
নেতাজী মিউজিয়াম
জাতীয় গ্রন্থাগার
নজরুলতীর্থ
টাউন হল
সেন্ট পল’স ক্যাথিড্রাল
মার্বেল প্যালেস
বিড়লা আর্ট মিউজিয়্যাম
আশুতোষ মিউজিয়্যাম
গুরুসদয় মিউজিয়্যাম
জুওলোজিক্যাল গার্ডেন
এগ্রি-হর্টিকালচার্যাল গার্ডেন
স্বভূমি
নলবন বোটিং কমপ্লেক্স, ক্লাউন টাউন্
বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে ইকো পার্ক। নিউজিল্যান্ডের এক আন্তর্জাতিক সংস্হার নিরিখে বিশ্বের সেরা শহুরে পার্কের তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছে কলকাতার ইকো পার্ক।
মূলত তিনভাগে বিভক্ত রয়েছে ইকো পার্ক। সুন্দর গাছপালা নিয়ে থিম গার্ডেন এবং শহুরে বিনোদনের স্হান। সবুজ ঘাস এবং জলাভূমি নিয়ে গঠিত ইকোলজিক্যাল জোন।
এশিয়ার মধ্যে দর্শনীয় স্থান হিসাবে মাত্র তিন বছরেই নাম করে নিয়েছে নিউটাউনের ইকো পার্ক।
( ইকো পার্কে আমি)
( নিউটাউনের প্রকৃতি উদ্যানে (ইকো পার্ক) আমি আর
শাবাব ইকো পার্কের ভিতরে ট্রেনে )
কাটরা মসজিদ, ঘড়িঘর
ইমামপাড়া
ফুটি মসজিদ
কাঠপোলা বাগান
জাফরাগঞ্জ সমাধি
কালো মসজিদ
মোতিঝিল
সিরাজউদ্দৌলার সমাধি
খোশবাগ
রোশনাইবাগ
হীরাঝিল।
কলকাতাতে কেনাকাটাঃ
কলকাতাতে এমন কিছু জায়গা আছে যেখান থেকে প্রচুর “এথনিক” এবং আদি-বাসীদের হাতে তৈরী অনেক জিনিস বেশ ভালো দামে প্রচুর শপিং করা যায়। বাংলা, বিহার, ওড়িশা, আসাম, ঝাড়খণ্ডের হস্তশিল্প সহ অনেক কিছুই পাওয়া যায়, কেনা যায় বিভিন্ন কোম্পানির বিদেশী ধরণের জামাকাপড় ।
১। শৌখিন ও সুন্দর জামা থেকে শুরু করে রুমাল, সুঁচ, শাড়ি পেতে নিউ মার্কেট।
৮। মহিলাদের ব্যাগ ও জুতো। কপি করা স্যানেল বা লেডি ডীয়র এর ব্যাগ কম দামে পেতে সিম্পার্ক মলে।
আমি কিন্তু ভাই, কলকাতার পন্যের প্রচারের দায়িত্ব নেইনি। অনেক পোষ্ট দেখছি আর ইনবক্সে মেসেজ পেয়েছি, যারা হেল্প চেয়েছেন জানতে চেয়ে, কলকাতার কোথায় কি কিনতে পাওয়া যায়, তাই আমার নিজের ব্যাক্তিগত অসংখ্যবার ভারতে কাজে ও ঘুরার জন্য ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকেই কলকাতাতে থাকা, খাওয়া দর্শনীয় স্থান দেখা আর কেনাকাটার এই লেখাটি।
পাঠকরা, ভাল করে দেখবেন, থাকা, খাওয়া আর ঘুরার অসংখ্য ছবির মাত্র কিছু ছবি দিয়েছি, , কিন্তু এই পোষ্টে কেনা কাটার কোন ছবি দেইনি, কারণ নেই, যদি নিজের জন্য ভারতীয় পন্য কিনতাম, তবে ছবি দিতাম, আশা করি বিষয়টা এই পোষ্ট পড়ার পরে, কোন নেগাটিভ কমেন্টস করার আগে আন্তরিকভাবে বুঝার চেষ্টা করবেন।
পাঠকরা, ভাল করে দেখবেন, থাকা, খাওয়া আর ঘুরার অসংখ্য ছবির মাত্র কিছু ছবি দিয়েছি, , কিন্তু এই পোষ্টে কেনা কাটার কোন ছবি দেইনি, কারণ নেই, যদি নিজের জন্য ভারতীয় পন্য কিনতাম, তবে ছবি দিতাম, আশা করি বিষয়টা এই পোষ্ট পড়ার পরে, কোন নেগাটিভ কমেন্টস করার আগে আন্তরিকভাবে বুঝার চেষ্টা করবেন।
এরপরেও যারা আমার এই লেখাতে নেগাটিভ কমেন্টস করা থেকে বিরত থাকতে পারবেন না, তাদের জন্যঃ
- ঐ সকল লেখাতে কি কোন সুচিন্তিত নেগেটিভ কমেন্টস করেছেন কখনো আপনার দেশপ্রেমের নমুনা দেখিয়ে? যারা পাব্লিক্লি হেল্প চেয়েছেন জানতে চেয়ে, কলকাতার কোথায় কি কিনতে পাওয়া যায় সেই লেখা গুলোতে একটি কমেন্টসও করেছেন?
- কখনো কি এয়ারটেল সিম ক্রেতাদের কমেন্ট করেছেন? অথচ ভারতীয় এয়ারটেল পরিসংখ্যান অনুযায়ী তাদের গ্রাহক কিন্তু ভারত থেকে বাংলাদেশে বেশি, আমি কিন্তু ০১৫১১ সিরিয়ালের টেলিটক ব্যবহার করি।
- বাংলাদেশে অবস্থিত স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গ্রাহকদের, যারা ভারতে যাবার জন্য স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া থেকে ডলার এন্ডোরস্মেন্ট করে বা ক্রেডিট কার্ড নেয়, এমনকি গ্রুপগুলোতে পাব্লিক্লি অনেক পোষ্ট আছে, কখনো সেখানে কি কমেন্ট করেছেন সেখানে?
অসংখ্যবার ভারতে যাওয়া এই আমি কিন্তু কখনোই বাংলাদেশে অবস্থিত স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ধারে কাছেই যাইনি, কারণ আমার রুচিতে বাধে।
অসংখ্যবার ভারতে যাওয়া এই আমি কিন্তু কখনোই বাংলাদেশে অবস্থিত স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ধারে কাছেই যাইনি, কারণ আমার রুচিতে বাধে।
- ভারতীয় প্রসাধনী লেকমে, হিমালয়া, বোরোলীন, হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের ৯০% বাংলাদেশে অবস্থিত ক্রেতারা বাংলাদেশে থেকেই যে ভারতীয় প্রসাধনীর যে বিশাল বাজার ( ভারতের থেকেও বড় ) বাংলাদেশে তৈরী করেছে, সেখানে কি কমেন্ট করেছেন?
- ভারতীয় প্রসাধনী লেকমে, হিমালয়া, বোরোলীন, হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের বাংলাদেশস্থ আমদানীকারকদের কি কমেন্ট করেছেন, বিদেশী পণ্য আমদানী করুন আর বাংলাদেশীদের চিরদিন গরীব রাখুন?
এরকম ১০০ পয়েন্ট দেয়া যাবে।
নেগেটিভ কমেন্টকারীদের আমি বিনীত ভাবে অনুরোধ করব, দয়া করে বাংলাদেশের ক্রেতাদের দেশপ্রেম না দেখিয়ে, বাংলাদেশের বিক্রেতার দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করুন আর বাংলাদেশের বিক্রেতাদের অন্তর থেকে উপলব্ধি করতে বলুন ঃ
-ক্ষুদ্র ক্রেতাদের দয়াতেই বড় বড় বিক্রেতাদের রুটি রুজির ব্যবস্থা হয়, খেতে পায় বেচে থাকার জন্য দুমুঠো অন্ন, বেচে থাকতে পারে স্ত্রী সন্তান নিয়ে।
- ভাল পন্য রিজনেবল দামে বিক্রি করেতে
- খারাপ পন্য অধিক দামে বিক্রি না করতে
- আফটার সেলস সার্ভিস দিতে
- অনেক পণ্য দেখার পরেও, না কিনলে, ক্রেতাদের সাথে দুর্ব্যবহার না করতে
- ্ক্রেতা পন্য না কিনলেও অধিক পন্য দেখাতে।
- পন্যের খারাপ দিক গুলো ক্রেতার সামনে তলে ধরতে।
- একটি পন্য থেকে ১০০০ % থেকে ২০০০% লাভ না করতে
- ভারত ছাড়াও অন্যান্য দেশে গিয়ে নিজের খরচে ইন্টার্ন করতে, শিখতে কিভাবে উদ্যোক্তারা তাদের বিক্রয়ক কর্মীদের ট্রেনিং দেয় ম্যানার শিখার জন্য
- অহঙ্কার পরিত্যাগ করে ক্রেতাদের সন্মান দেখাতে, হোক না সে যতই ছোট ক্রেতা আর অনেক পন্য দেখে না কিনলেও।
- ভাল পন্য রিজনেবল দামে বিক্রি করেতে
- খারাপ পন্য অধিক দামে বিক্রি না করতে
- আফটার সেলস সার্ভিস দিতে
- অনেক পণ্য দেখার পরেও, না কিনলে, ক্রেতাদের সাথে দুর্ব্যবহার না করতে
- ্ক্রেতা পন্য না কিনলেও অধিক পন্য দেখাতে।
- পন্যের খারাপ দিক গুলো ক্রেতার সামনে তলে ধরতে।
- একটি পন্য থেকে ১০০০ % থেকে ২০০০% লাভ না করতে
- ভারত ছাড়াও অন্যান্য দেশে গিয়ে নিজের খরচে ইন্টার্ন করতে, শিখতে কিভাবে উদ্যোক্তারা তাদের বিক্রয়ক কর্মীদের ট্রেনিং দেয় ম্যানার শিখার জন্য
- অহঙ্কার পরিত্যাগ করে ক্রেতাদের সন্মান দেখাতে, হোক না সে যতই ছোট ক্রেতা আর অনেক পন্য দেখে না কিনলেও।
তবেই দেখবেন বাংলাদেশের ক্রেতারা ভারত থেকে কোন পন্য না কিনে দেশের পণ্যই কিনছে।
একমাত্র বাংলাদেশি বিক্রেতারাই পারেন বিদেশী পন্য কেনা বন্ধ করতে, ক্রেতারা নয়।
ইউরোপ আমেরিকার আর গালফের নাগরিকরাও কিন্তু কম দেশপ্রেমিক নয়। ভেবে দেখেছেন কি একবারও ইউরোপ আমেরিকার আর গালফের সকল দেশের নাগরিকরা যদি আমাদের মত দেশপ্রেম দেখিয়ে ক্যাম্পেইন শুরু করে স্বদেশী পন্য কিনে হও ধন্য, তবে আমাদের কি অবস্থা হবে? সিমপ্লি বন্ধ হয়ে যাবেঃ
- বাংলাদেশ থেকে সকল পোষাক রপ্তানী
আর
- সকল জনশক্তি রপ্তানী
- বাংলাদেশ থেকে সকল পোষাক রপ্তানী
আর
- সকল জনশক্তি রপ্তানী
তখন কি করবেন? দেশ তো বন্ধ হয়ে যাবে !
ইউরোপ আমেরিকার আর গালফের নাগরিকরা আর তাদের দেশের সরকাররা দেশপ্রেমের আগে ভাবে, কিভাবে ৫০% নিম্ন আয়ের আর ২৫% মধ্যম আয়ের মানুষ সস্তাতে কোয়ালিটিফুল লাইফ লীড করা যায়। আর বাকী ২৫% ধনী ও বনিক শ্রেনীরা সাপোর্ট দেয় সরকারকে ও সেই সাথে ৫০% নিম্ন আয়ের আর ২৫% মধ্যম আয়ের নাগরিকদের।
আপনারা কি ভাবছেন ইউরোপ আমেরিকাতে আর গালফে কি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি নেই, তাদের কি নিজেদের তৈরী পোষাক নেই? তাদের নিজেদের জনশক্তি নেই? অবশ্যই আছে। কিন্তু তা অনেক সময়ই ৫০% নিম্ন আয়ের নাগরিকদের কেনার সাধে্যর বাইরে আর ২৫% মধ্যম আয়ের মানুষদের সঞ্চয়ের ব্যাঘাত ঘটায়, আর তাই, সরকার সহ বাকী ২৫% ধনী ও বনিক শ্রেনীরা ৫০% নিম্ন আয়ের আর ২৫% মধ্যম আয়ের নাগরিকদের আন্তরিক সাপোর্ট দেয় আমাদের দেশের পোষাক আর জনশক্তি আমদানি করে তা ব্যবহারে।
ভয় দেখিয়ে বা নীতিবাক্য শুনিয়ে ৫০% নিম্ন আয়ের আর ২৫% মধ্যম আয়ের নাগরিকদের মনে দেশপ্রেম জাগ্রত করা যায়না।
৫০% নিম্ন আয়ের আর ২৫% মধ্যম আয়ের নাগরিকরা ভাল আর অর্থনৈতিক ভাবে নিরাপদ থাকলেই, দেশপ্রেম অটোমেটিক্যালি চলে আসে তাদের মনে।
( কলকাতার মায়ার জালে কান্নারত শিজা)
কলকাতাতে থেকে, খেয়ে আর দেখে ভ্রমণের শেষ রাতে একটু আগেই সবাই মিলে ঘুমিয়ে গেলাম, হোটেলের কমপ্লিমেন্টারী বুফে ব্রেকফাষ্ট এর সময়ের আগেই হোটেল থেকে চেকঅউট করাতে, হোটেল থেকে আমাদের সবাইকে কিছু পার্সেল ধরিয়ে দিয়ে বলল ব্রেকফাস্ট। আমরা তো মহা খুশী, এই জন্য যে, না চাইতেই তারা তাদের সার্ভিস দিয়েছে।
খুব ভোরে অন্ধকার থাকতেই রাস্তাতেই সাদা এসি আর হ্লুদ নন এসি ট্যাক্সি গুলো আসা যাওয়া করতে থাকে। হোটেলের সিকিউরিটি গার্ড একটি ট্যাক্সি ডেকে দিলেও আলাপ করে ৮০ রুপি দিয়ে সবাই মিলে চলে এলাম চিতপুরের কলকাতা রেল ষ্টেশনে।
সেখান থেকে ট্রেনে করে গেদে হয়ে দর্শনা আর তারপরে ঢাকা ক্যান্টনম্যান্ট রেল ষ্টেশন।
আর এভাবেই শেষ হলো এবারের পরিবার নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা ভ্রমণ।
আশা করি এন্ট্রি লেভেলের ট্রাভেলার বা টুরিস্টরা নিজেরাই বিভিন্ন দেশের ভিসা প্রসসিং করে, নিজেরাই টিকেট কেটে, থাকা আর খাবার ব্যবস্থা করে নতুন আরো অন্যান্য দেশ ভ্রমণে উতসাহ পাবে।
কলকাতা থেকে দিল্লী ভ্রমণের সচিত্র ভ্রমণকাহিনী লেখার ইচ্ছা রইল কোন একদিন !
Comments