দিল্লী ভ্রমণঃ তুঘলুকাবাদ-জাঁহাপনা-ফিরোজাবাদ-দিনপানাহ-শেরগড়-শাহজানাবাদ থেকে দিল্লী ( পর্ব ১ )।


ই সেই দিল্লী..
তুঘলুকাবাদ থেকে  দিল্লী....
জাঁহাপনা থেকে  দিল্লী........
ফিরোজাবাদ থেকে  দিল্লী................
দিনপানাহ থেকে  দিল্লী................................
শেরগড় থেকে  দিল্লী................................................................
শাহজানাবাদ থেকে দিল্লী.............................................................................

লকাতা ভ্রমণ লেখার শেষে লিখেছিলাম কলকাতা থেকে দিল্লী ভ্রমণের সচিত্র ভ্রমণকাহিনী লেখার ইচ্ছা রইল কোন একদিন । সেই ইচ্ছেশক্তি থেকেই  লেখার চেষ্টা দিল্লি ভ্রমণঃ তুঘলুকাবাদ-জাঁহাপনা-ফিরোজাবাদ-দিনপানাহ-শেরগড়-শাহজানাবাদ থেকে দিল্লী।

ভাবুক আর ভ্রমণকারী দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ দরবেশ’ --- ভ্রমণের যথার্থতা ও প্রয়োজনীয়তা মূল্যায়ন করা যায় আল্লামা শেখ সাদী (রহঃ)  এর একটি উক্তি থেকেই।

দিল্লী ভ্রমণ বিষয়ে   আমার এই লেখাটিও প্রাথমিক স্তরের পর্যটকদের জন্য , এমনকি যারা পাসপোর্ট করেননি, কিন্তু পাসপোর্ট করতে চান আর যেতে চান একা বা পরিবার সহ কম খরচে দেশ ভ্রমণে , তাদের জন্যও।

মার এই পোষ্টটি মধ্যম বা উচ্চ পর্যায়ের পর্যটকরা পড়ে হয়তোবা কোন মজা পাবেন না, আর যে সব তথ্য এখানে পাবেন,  তা মধ্যম বা উচ্চ পর্যায়ের পর্যটকরা  হয়তো বা আগে থেকেই জানেন।




দিল্লী  একাও  গিয়েছি  আবার সপরিবারেও গিয়েছি, বন্ধুদের নিয়েও গিয়েছি।  ট্রেনে করে গিয়েছি আবার বিমানেও গিয়েছি। ব্যবসার কাজে আবার ভ্রমণের জন্যও দিল্লী গিয়েছি ।

তুগলক রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা গিয়াসুদ্দীন তুঘলক ১৩২০ খ্রীস্টাব্দে শাসনক্ষমতায় এসে  দিল্লির 'তুঘলকাবাদ' নামক এই নাম দেন, যা জল সংকটের কারনে  ধ্বংস হয়ে যায় ।

তুর্থ নগরী জাঁহাপনা (১৩২৫-১৩৫১ খ্রি.) ১৩২৫ খ্রিস্টাব্দে  গিয়াস উদ্দিনের পুত্র মুহাম্মদ বিন তুগলক দ্বারা উত্তরের ‘সিরি’ থেকে দক্ষিণের ‘কিলা রায় পিথোরা’ পর্যন্ত বিস্তৃত, কুতুব মিনারের কাছে গড়েন। বর্তমান দিল্লির আই আই টির পাশে এর ধ্বংসাবশেষ এখনো বিদ্যমান। যার অন্যতম অবশেষ লাল গম্বুজ, বেগমপুর মসজিদ, কালুসারাই মসজিদ আর বিজয় মন্ডল, , ইত্যাদি।

মুহম্মদ বিন তুঘলকের  ভাইপো সুলতান ফিরোজ শাহ তুগলক পঞ্চম নগরী  ফিরোজাবাদ শহর নির্মাণ করেন। এটি ১৩৫৪ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়েছিল।  অনেক বড় মসজিদ ইতোমধ্যে জাহানপানা (বর্তমানে খিরকি ও বেগমপুরে) এবং নিজামুদ্দিনের অভ্যন্তরে নির্মিত হয়েছিল। খিজলি জলাধারের পাশে হাউজ খস গড়ে তোলা হয়েছিল।

রাজা মির্জা নাসির উড-দীন বেগ মোহাম্মদ খান হুমায়ূন দ্বারা নির্মিত হয়েছিল দিনপানাহ, সাধারণত হুমায়ূন নামে পরিচিত। হুমায়ুন ছিলেন একজন মুসলিম শাসক। ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে বাবর পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদীকে পরাস্ত করে দিল্লি দখল করলেন।  সংস্কার করে হুমায়ূন নাম দিলেন দিনপানাহ শহর।

ষ্ঠ নগরী শেরগড় ইন্দেরপ্রস্থের আশেপাশের এলাকায় শের শাহ সুরি দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। শেরশাহ সুরি উত্তর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সূত্র সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং বর্তমান রাজধানী দিল্লির রাজধানী ছিল। 1540 খ্রিস্টাব্দে তিনি মুগল সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন।  তিনি হুমায়ুনের দিনা-পানাহ শহরের উন্নতি ঘটান এবং এর নতুন নামকরণ করেন শেরগড়।

৫৫৫ খ্রিস্টাব্দে হুমায়ুন শক্তি সঞ্চয় করে কাবুল থেকে ফিরে পুনরায় দিল্লির দখল নেনআর গড়ে তোলেন ৮ দশমিক ৮ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ প্রাচীরে ঘেরা ৭ম নগরী শাহজানাবাদ, মির্জা শাহাবুদ্দীন বেগ মুহাম্মদ খান শাহজাহান শাহজাহান নামে জনপ্রিয়ভাবে শাহজানাবাদ শহরটি নির্মিত অর্থাৎ এখনকার লালকেল্লা। শাহজানাবাদ লাল-কিল্লা বা লাল দুর্গ ও চাঁদনী চৌক ছিল। প্রাচীর প্রায় বিলুপ্ত হলেও ১৪টি গেটের ৫টি এখনও অতীত রোমন্থন করায়। গেট সমূহের নাম : দিল্লি গেট, কাশ্মীরি গেট, আজমেরি গেট, তুর্কমেন গেট, লাহোরী গেট ইত্যাদি। এই কেল্লায় সম্রাট আকবরের রাজ্যাভিষেক হয়। বর্তমানে এই এলাকাটিকে 'পুরানো দিল্লি' হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে শাহজাহান তাঁর সময়ের মধ্যে অনেক বিখ্যাত স্থাপত্য বিস্ময় নির্মিত।

০০৮  সাল। কলকাতা। দিল্লীতে যাব একটি  ব্যবসায়িক বৈঠকের জন্য,  চানক্যপুরীর নিতি মার্গে। কলকাতার সকলেই বলল ট্রেনে যাবার জন্য। কিছু এজেন্সীতে গেলাম, ট্রেনের সর্বনিম্ন টিকেটের মূল্য চাইল ৪০০০ রুপি।
Image result for kingfisher airlines
ঢাকার খিলগাঁও এর এক বন্ধু বলল, তার সাথে যাবার জন্য, মারকুইস স্ট্রিটে অবস্থিত  তার পরিচিত আর এক এজেন্সীর কাছে, সেখানে না কি  কলকাতা - দিল্লী ওয়ান ওয়ে টিকেটের দাম নাকি ট্রেনের চেয়েও সস্তা। বন্ধুটি দিল্লী থেকে চেক রিপাবলিক এর ভিসা নিয়েছিল আগেই,  দেশে ফিরে গিয়েছিল। এবার দিল্লী থেকে চেক রিপাবলিকে যাবে। যেই কথা সেই কাজ। সন্ধ্যায়  চলে গেলাম সেই বন্ধুর সাথে আর পেয়ে গেলাম ২০০০ রুপিতে কলকাতা-দিল্লী এর ওয়ান ওয়ে টিকেট। কিংফিশার এয়ারলাইন্স এ।  

ন্যবাদ ঢাকার খিলগাঁও এর সেই বন্ধুকে , যে এখন ফ্রান্স প্রবাসী। ভাল থেকো বন্ধু ! ! ! 

০০৫ সালে ভারতের আকাশে অপারেশন শুরু করা আতিথেয়তা আর মার্জিত সেবার কারণে অতি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠা শীর্ষ বিয়ার ব্যারন সাম্রাজ্যের অধিপতি, ইউনাইটেড স্পিরিট গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান, ইউনাইটেড ব্রিউয়ারিজ গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং সিইও ধনকুবেরের  ড. বিজয় মালয়া  এর কিংফিশার এয়ারলাইন্স ! ফোর্বসের তালিকায় থাকা ভারতের ধনকুবের কিং অব গুড টাইম ড. বিজয় মালয়া ! !
Image result for kingfisher airlines
রদিন সকালেই কলকাতার হোটেল থেকে চেক আউট। চলে গেলাম শহর থেকে ১৭ কিমি দূরে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের  বিশিষ্ট নেতা নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নামে  নামকরণ করা, ২,৪৬০ একর এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে, যার সাবেক নাম দমদম বিমানবন্দর।

রাম, বিনোদন, খাবার এবং ইন-ফ্লাইট সার্ভিস এ সর্বোচ্চ আনন্দ পাবার লক্ষ্য নিয়ে এয়ারপোর্ট পৌঁছেই রিসিপশনিস্ট এর  অভ্যর্থনা..
ব্যাগ চেক-ইন কাউন্টারে নেয়া....
চেক-ইন কাউন্টারে স্মার্টলি-ড্রেসড-গার্ল এর স্বাগতম জানানো........
অল্প সময় ব্যয় করে বোর্ডিং পাস ইস্যু................
ব্যক্তিগত বিনোদন সুবিধার জন্য সিটের পিছনে এলসিডি স্ক্রিন................................
আর দক্ষ কিন্তু উষ্ঞ, স্টাইলিশ কিন্তু আরামদায়ক অনুভুতিতে  স্মার্ট এবং বিনয়ী ক্রু সার্বক্ষনিক সহযোগিতা................................................................
শুরুতেই সিটের পিছনে এলসিডি স্ক্রিনে কিংফিশার এর সেবার মান ও ফিলোসফি নিয়ে   কিং অব গুড টাইম ড. বিজয় মালয়ার বক্তৃতা, যা ছিল অসাধারণ!

কর্ণাটকের  ভিত্তাল মালিয়া ( ইউনাইটেড ব্রিউয়ারিজ গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান ) আর ললিতা রামিয়াহ মালিয়ার ঘরে ১৯৫৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর জন্ম নেন প্রচণ্ড ধর্মপ্রেমী, ভয়ানক রকমের প্রযুক্তি আসক্ত, বহুভাষাবিদ ( বাংলা, কান্নাড়ি, হিন্দি, কোঙ্কানি, গুজরাটি, ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষা ) বিজয় মালিয়া। ছিলেন আখিলা ভারত জনতা দলের সদস্য, হয়েছিলেন কর্ণাটকের একজন এমএলএ। 

 ২০০০ রুপির মাঝেই   ছিল খাবার, যার মান,ছিল অসাধারণ ! দেখতে দেখতেই চলে এসেছিলাম নয়া দিল্লীর  ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সেখানে থেকে ট্যাক্সি দিয়ে উঠেছিলাম হোটেলে।
এছাড়া পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে ২০১৬ সালেও নয়াদিল্লী গিয়েছিলাম, তবে বিমানে নয়।  গিয়েছিলাম পূর্ব ভারতের মহানগর কলকাতার হাওড়া ষ্টেশন থেকে ও উত্তর ভারতের মহানগর, তথা ভারতের রাজধানী শহর দিল্লির নয়া দিল্লী ষ্টেশনের  মধ্যে সংযোগকারী  ১,৫৩২ কিলোমিটার   হাওড়া–দিল্লি প্রধান রেলপথ  দিয়ে হাওড়া থেকে বর্ধমান-আসানসোল-পাটনা-মুগলসরাই-কানপুর হয়ে  নয়া দিল্লির রেল ষ্টেশনে। আমার আগের লিখা  কলকাতা ভ্রমণে আমি বিস্তারিত লিখেছি কলকাতা সম্পর্কে, হাওড়া রেল ষ্টেশন সম্পর্কে, আর ফেয়ারলি প্লেস এ অবস্থিত  ভারতীয় রেলওয়ে ইস্টার্ন জোন এর হেডঅফিস সম্পর্কে।
২০১৬ সালের   পরিবার নিয়ে কলকাতা থেকে  কলকাতা-দিল্লীর  ভ্রমণের উদ্দেশ্যই ছিল সবচেয়ে সস্তাতে কিভাবে ভ্রমণ করা যায়, পরিবহন, থাকা, খাওয়া, ঘুরাফিরা, কেনা কাটা সকল কিছু। আর তাই ফেয়ারলি প্লেস এ অবস্থিত  ভারতীয় রেলওয়ে ইস্টার্ন জোন এর হেডঅফিস থেকে কিনেছিলাম এই টিকেট। খুব ভোরে কলকাতার হোটেল থেকে ট্যাক্সি নিয়ে বেরিয়ে হাওড়া ব্রীজ দিয়ে গিয়েছিলাম হাওড়া ষ্টেশনে আর উঠেছিলাম সকালের ট্রেনে। গিয়েছিলাম সবচেয়ে সস্তাতে, মাত্র ৫০০ রুপিতে জন প্রতি।


কলকাতার হাওড়া রেল ষ্টেশন থেকেও দিল্লী যাওয়া যায় আবার শিয়ালদাহ রেল ষ্টেশন থেকেও দিল্লী যাওয়া যায়। বিলাসবহুল রেল যাত্রার জন্য, বিশেষ করে পরিবার পরিজন নিয়ে কলকাতা থেকে দিল্লী ভ্রমণের জন্য   শিয়ালদাহ রাজধানি এক্সপ্রেস ভাল। এছাড়া আরো আছে দুরন্ত এক্সপ্রেস,  কালকা মেইল, পুরভা এক্সপ্রেস। রাজধানী টিকেট ৬৫০০ রুপি ও আছে,  শুধুমাত্র যাওয়া। মান অনেক ভাল। দুরন্ত এক্সপ্রেসও তাই। তবে কেউ যদি খুবই সস্তায় যাওয়া আসা করতে চান, তবে কালকা মেইল, পুরভা এক্সপ্রেস এগুলো। ৫০০ রুপি থেকে শুরু। তবে কালকা মেইলবা পুরভা এক্সপ্রেস এ ৫০০ রুপিতে টিকেট পেতে অনেক কাঠখড় পুড়াতে হয়। যেমন আপনি যদি কলকাতার কোন এজেন্টের কাছে যান, তারা বাংলাদেশীদের জন্য শুধুমাত্র ২৫০০ রুপি থেকে ৬৫০০ রুপির টিকেটগুলো বিক্রি করে থাকেন আর ২৫০০ রুপির নীচের টিকেটগুলো চাইলে বলেন , দাদা ওগুলোতে নেই।  কিন্তু আপনি যদি ফেয়ারলি প্লেস এ অবস্থিত  ভারতীয় রেলওয়ে ইস্টার্ন জোন এর হেডঅফিস থেকে ৫০০ থেকে ১০০০ রুপির কিনতে চান, টিকেট বিক্রেতারা আপনাকে রীতিমত চাপ সৃষ্টি করবে ২৫০০ টাকা থেকে ৬৫০০ টাকার টিকেত কেনার জন্য। কিন্তু আপনি যদি সাহস করে উল্টো চাপ দিতে পারেন ৫০০ থেকে ১০০০ রুপির টিকেট নেবার জন্য, তবে  আপনাকে নিজের ফর্ম নিজের পুরণ করতে হবে, ট্রেনের নাম বলতে হবে, সময় বলতে হবে, নম্বর বলতে হবে ইত্যাদি। ইউরোপ আমেরিকার অনেক ভ্রমণকারীদেরকেও দেখেছি ৫০০ থেকে ৬০০ রুপির টিকেট কিনে কলকাতা থেকে দিল্লী যেতে।










নয়া দিল্লীর  ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বা নয়া দিল্লী রেল ষ্টেশন থেকেই হোক,  প্রথম সমস্যা হচ্ছে থাকার ব্যবস্থা করা। 

বিভিন্ন সময়ে দিল্লী ভ্রমণ  ছিল বিলাসবহুল। নয়া দিল্লীর  ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সি নিয়ে  চেক ইন করেছি দিল্লীর  অনেক বিলাসবহুলপাচ আর চারতারকা হোটেলে।যেমনঃনিউ দিল্লীর কনট প্লেসের চার-তারকা রেডিসন ব্লু মারিনা হোটেল।
মাত্র ১৯০ মিটার দুরেই রাজীব চৌকো মেট্রো স্টেশন ...........
৯০০ মিটার দুরেই শিবাজি স্টেডিয়াম মেট্রো স্টেশন (বিমানবন্দর এক্সপ্রেস লাইন) ......................
 ১ কিমি দুরেই নয়া  দিল্লী রেলওয়ে স্টেশন ......................
১৪ কিমি দুরেই  ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ( ডিইএল )

দিল্লীর সবচেয়ে ভাল আকর্ষণের কাছাকাছি কনট প্লেসে চার-তারকা  রেডিসন ব্লু মারিনা হোটেলে থাকায় নয়াদিল্লির শীর্ষ ঐতিহাসিক স্থান এবং কর্পোরেট অফিসগুলির কেন্দ্রীয় অবস্থানের সাথে,  সুবিধা এবং আরামদায়ক  এর এক অপূর্ব সমন্বয় সরবরাহ করে।  হাঁটা দূরত্বের মধ্যে বিশ্বমানের কেনাকাটা  এবং কর্পোরেট ভ্রমণকারীরা শিবাজি স্টেডিয়াম মেট্রো স্টেশনে বিমানবন্দর এক্সপ্রেস লাইন থেকে এক কিলোমিটারেরও কম দুরে থাকা । রেডিসন ব্লু মারিনা হোটেল থেকে পাঁচ কিলোমিটারেরও কম জামা মসজিদ, ইন্ডিয়া গেট এবং রেড ফোর্টের মতো শহরগুলির আকর্ষণীয় স্থানগুলি দেখার সুযোগের কারনেই দিল্লিতে থাকার ক্ষেত্রে এই চার-তারকা  রেডিসন ব্লু মারিনা হোটেলটি আমার প্রথম পছন্দ। ফাইভ ষ্টার হোটেল থেকে খরচ কম।

ঢাকার রেডিসনের মত এত বড় জায়গা নিয়ে নয়। 
দিল্লীর কনট প্লেসের রেডিসন ব্লু অনেক ছোট জায়গা নিয়ে। যেমন দেখছি বেলজিয়ামের এন্টওয়ার্প এর রেডিসন ব্লু অনেক ছোট পরিসরে।  
আবার লাটভিয়ার রিগাতে  রেডিসন ব্লু দেখেছি অনেক বড় পরিসরে।
কিন্তু  নেপালের কাঠমুন্ডুতে রেডিসন ব্লু মাঝারি পরিসরে।
 রেডিসনের প্রতি বরাবরই আমার এক সুপ্ত আকর্ষণ সেই  ১১ বছর যাবত, ২০০৮ থেকেই, প্রথম অভিজ্ঞতা নেই, বাংলাদেশের ঢাকাতে অবস্থিত হোটেল রেডিসনে, যদিও অফিসে আর বাসা থেকে মাত্র হাঁটার দূরত্ব , ডিওএইসএস বারিধারাতে। তখন নতুন  শুরু হয়  মাত্র। ছিলাম কর্পোরেট ক্লায়েন্ট। আমার বায়াররা বাংলাদেশ আসলেই থাকার ব্যবস্থা করতাম ঢাকা হোটেল র‍্যাডিসনে। এছাড়া,  সুইমিং পুলটাও অসাধারণ,  বুফে লাঞ্চ আর ডিনারের মানটাও অনেক ভাল।  হেলথ ক্লাবটাও অনেক আকর্ষণীয়।

ঢাকা হোটেল র‍্যাডিসনে থাকার অভিজ্ঞতা থেকেই, এরপরে,  লাটভিয়ার রিগাতে  রেডিসনে থাকা, নেপালের কাঠমুন্ডুতে রেডিসনে থাকা, বেলজিয়ামের এন্টওয়ার্প এর রেডিসনে থাকা আর  এরপরে দিল্লীর কনট প্লেসের রেডিসন ব্লুতে থাকা।

নিউ দিল্লীর স্পন্দনশীল কেন্দ্রস্থল এই কনট প্লেস আর এখানেই  অবস্থিত চার-তারকা রেডিসন ব্লু মারিনা হোটেল যা  দিল্লীর শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়, কেনাকাটা এবং বিনোদন গন্তব্যগুলির কাছাকাছি  থাকার অভিজ্ঞতা দেয়  আর তাই ব্যবসা বা কাজকর্মের জন্য বা লক্সারী /  ডিলাক্স টুরের জন্য  দিল্লিতে গেলে এই কনট প্লেসেই থাকতে আমি বেশী সবাচ্ছন্দবোধ করি বেশী। 
দিল্লীর কনট প্লেসের  জি ব্লকের কনট সার্কাসে জি-৫৯ এ  এই চার-তারকা রেডিসন ব্লু মারিনা হোটেল। কাছাকাছি রাজীব চৌক এবং শিবাজি স্টেডিয়াম মেট্রো স্টেশনগুলি থেকে সিবিডি কর্পোরেট অফিস এবং  ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলি যেমন অক্ষধাম মন্দির,  রেড ফোরট এ  সহজেই যাওয়া যায়, তেমনি চাঁদনী চৌক এবং ইন্ডিয়া গেটের মত অনন্য গন্তব্যস্থলগুলি অনুসন্ধানের পর, দুপুরের খাবারের জন্য চার-তারকা রেডিসন ব্লু মারিনা হোটেলে ফিরে এসে রুম বা স্যুটের মসৃণ, আধুনিক শৈলীতে দুপুরের খাবার খাওয়ার স্বাদই আলাদা। চার-তারকা রেডিসন ব্লু মারিনা হোটেলের সুপ্রতিষ্ঠিত বিজনেস সেন্টারে বিজনেস মিটিঙের জন্য আমন্ত্রণ জানানো যায় লোকাল ব্যবসায়ীদের,  বিনামূল্যে হাই-স্পিড ওয়্যারলেস ইন্টারনেট কর্পোরেট ভ্রমণকারীদের জন্য উন্নত উৎপাদনশীলতা সরবরাহ করে ।
 ক্লাসিক স্টাইল এবং মডার্ন এ্যামনেনিটি আনন্দিত আর রিফ্রেশের উচ্চ পর্যায়ের ভ্রমণের অভিজ্ঞতার জন্য, র্যাডিসন ব্লু মারিনা হোটেল কনট প্লেস-এ  বুটিক-স্টাইল গেস্ট রুম,  ক্যাটালো ও ম্যাকেনজির ভাস্কর্য ডিজাইনের প্রদর্শন করে এমন সুন্দর রঙের প্যালেট এবং মসৃণ আসবাব, সিল্ক গৃহসজ্জার সামগ্রী এবং বিছানার পাশাপাশি সকল সুবিধা  পেয়েছি চার-তারকা রেডিসন ব্লু মারিনা হোটেলে।

চার-তারকা রেডিসন ব্লু মারিনা হোটেলে থাকার খরচ?
পরিবার সহ ৯৫৪০ রুপি থেকে শুরু
একা থাকলে ৬৭৯৫ রুপি থেকে শুরু

ছাড়া ২৪শে অক্টোবর ২০১৬ সালে সুযোগ হয়েছিল নিউ  দিল্লীর  ভিকাজি কামা প্লেস এর রিং রোডে অবস্থিত হায়াত রিজেন্সি  দিল্লী উপভোগ করার। বছর দুয়েক আগেকার কথা দিল্লি গিয়েছিলাম প্রফেশনাল কাজে। 
স্পেনের মনিক ব্রান্ডের কিছু প্রোডাকশন ছিল ইন্ডিয়াতে। সেগুলো দেখতে ইন্সপেকশন আর শিপমেন্টের জন্য যেতে হয়েছিল......  এছাড়া কয়েকটা এম্বাসিতে ট্রেড মিটিং ছিল............
আর ছিল কিছু বিজনেস ইনভাইটেশন........................ 
আর  সে সুযোগেই নিউ  দিল্লীর  ভিকাজি কামা প্লেস এর রিং রোডে অবস্থিত হায়াত রিজেন্সি দিল্লী উপভোগ  করার সুযোগ।

হায়াত রিজেন্সি দিল্লীভারতের হায়াতের সবচেয়ে বড় বিলাসবহুল পাঁচ তারকা সম্পত্তি। দিল্লির কেন্দ্রীয় ব্যবসা জেলায় অবস্থিত, ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ২৫ মিনিটের ড্রাইভ এবং দূতাবাস, কর্পোরেট কোম্পানী আর  শপিং হাব থেকে ১০  মিনিট দূরে দিল্লীতে পাঁচ তারকা হোটেলের সুবিধাজনক অবস্থান।হায়াত রিজেন্সি দিল্লিতে স্টাইল অনুসারে  সুবিধাসহ বিলাসবহুল  বিছানা, ডেটাপোর্ট সুবিধা, ২৫ ইঞ্চি ফ্ল্যাট স্ক্রিন টিভি, বর্ধিত আলো সহ  ডেস্ক,  ওয়াইফাই এবং উচ্চ গতির ইন্টারনেট অ্যাক্সেস, স্নানের সুবিধা, কনসিগার পরিষেবা এবং ২৪ ঘন্টা ডাইনিং উপভোগ করার এক অনুপম থাকার ব্যবস্থা।

হায়াত রিজেন্সি দিল্লিতে থেকে পেয়েছি  যে আকর্ষণ আর তা হলঃ
দিল্লী সফর করার জন্য মজার স্থান আবিষ্কার........................
স্থানীয়  রেষ্টুরেন্টে খাবারের অন্বেষণ................................................
স্থাপত্যের বিস্ময়গুলিতে নিজেকে গভীরভাবে বিজড়িত করা .........
স্থানীয় সংস্কৃতিতে সিক্ত করা................................................
আকর্ষণীয় স্মৃতিসৌধ................................................
ফুলের দোকান................................................
দিল্লীতে স্থানীয় কেনাকাটা ................................................
আর পুরস্কার বিজয়ী  রেস্তোরাঁতে খাবার  সহ  প্রতিটি ট্রিপের সম্পূর্ণ নতুন এক অভিজ্ঞতা ।

হায়াত রিজেন্সি দিল্লিতে প্রতি রাতে থাকার খরচ !!!
মেম্বারদের জন্য ৬৪০০ রুপি থেকে শুরু, 
বিএন্ডবি তে ৮৫০০ রুপি
অনলাইলে আগোডা, বুকিং, এক্সপেডিয়া থেকে কিনলে ৭৫০০ রুপি- ৮০০০ রুপি। 
এছাড়া আছে 
প্রিমিয়ার স্যুট ১৭,৯০০ রুপি
রিজেন্সি সুইট টেরেস ১৫,৯০০ রুপি
রিজেন্সি এক্সিকিউটিভ সুইট ১৪,৯০০ রুপি
রিজেন্সি সুইট কিং ১৩,৪০০ রুপি
ক্লাব অ্যাক্সেস সঙ্গে টু টুইন বেডঃ ১০,৪০০ রুপি

দিল্লীতে যাবার আগে বা দিল্লিতে গিয়ে যারা আমাকে ম্যাসেঞ্জারে বা মেইলে বা এসএমএস দিয়ে বা কল করে জানতে চান দিল্লির কিছু ভাল হোটেলের নাম 
আর
দিল্লীতে যারা রেডিসন ব্লু মারিনা আর হায়াত রিজেন্সির চেয়েও দামী হোটেলে রাত্রি যাপন করতে চান, তাদের জন্যঃ

১। দ্যা ওবরেই

২।  সাউথ দিল্লিতে সুদৃশ্য সজ্জিত, এয়ার কন্ডিশনার রুম , ডিভিডি প্লেয়ার,  কাঠের আসবাবের সঙ্গে  ফ্ল্যাট স্ক্রিন টিভি আর  বাথরুমে ফ্ল্যাট স্ক্রীন টিভি  পেতে দ্যা লিলা প্যালেস কেম্পিনস্কি। ১৬,০০০ রুপি/ রাত থেকে শুরু।

৩।  ডিপ্লোম্যাট এরিয়া চানক্যপুরিতে    তাজ প্যালেস।   ৭,৫০০ রুপি/ রাত থেকে শুরু।

৪।  লোদী। ১৯,৫০০ রুপি/ রাত থেকে শুরু।

৫। ডিপ্লোম্যাট এরিয়া চানক্যপুরিতে  অশোক

৬। মেট্রোপলিটন

৭। হলিডে ইন

৮। ইম্পেরিয়াল। ১৭,৫০০ রুপি/ রাত থেকে শুরু।


৯। ম্যারিয়ট



২০১৬ সালে  যে বারের দিল্লী ভ্রমণটির পরিকল্পনার শুরুতেই ছিল একটি স্বল্প বাজেটের ভ্রমণ পরিবার সহ। উন্নত দেশসমুহে অনেক ব্যাকপ্যাকিং  করেছি, তা ছিল যথেষ্ট আরামদায়ক, পরিষ্কার পরিচ্ছন, নির্ভেজাল আর সস্তা পরিভ্রমণ।

নয়া দিল্লীর রেল ষ্টেশনে পৌছেছিলাম সকালেই।  পৌঁছেই শিজা, শাবাব আর শিরিনকে ষ্টেশনে রেখে সাথে থাকা আরো দুইজন পর্যটককে সাথে নিয়ে চলে আসলাম ষ্টেশনের অপর প্রান্তে সস্তাতে থাকার ব্যবস্থা করতে। ইচ্ছে ছিল রেল ষ্টেশনের পাশেই থাকব, ঘোরাফেরার সুবিধার জন্য, আর তাই বাসান্ত রোড, মেইন বাজার  রোড, পাহাড়গঞ্জ রোড  এক ঘন্টা চষে বেড়িয়ে, পেয়ে গেলাম একটি হোটেল, তিনতলাতে ( লিফট বিহীন), এসি সহ এক রুম আমাদের জন্য আর সাথের অন্য ট্রাভেলারদের জন্য আর দুটি রুম। প্রতিরুম ৩৫০ রুপি, ওয়াইফাই ফ্রি। এরপরে আবার রেল ষ্টেশনে গিয়ে, ছোট ছেলে শিজা, বড় ছেলে শাবার আর অর্ধাঙ্গী
 শিরিনকে নিয়ে কমদামী এই হোটেল এসে উঠলাম। সাথে নিয়ে এসেছিলাম  দিল্লি রেলষ্টেশনের অপরপ্রান্তে থাকা অনেকগুলো রেষ্টুরেন্টের একটি থেকে  সকলের জন্য সকালের নাস্তা।

 রুমে এসে সকালের নাস্তা করে, গেলাম শাওয়ার নিতে।  একি !!!! পানি তো  লাল !!!!!!  টানা এক ঘন্টা পানি পরার পরে বের হল সাদা রঙ বিহীন পানি। শাওয়ার ছেড়ে গেলাম  হোটেলের ছাদে আশেপাশের পরিবেশ দেখার জন্য:
( ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে দিল্লীতে  হোটেলের ছাদে )
এরপরে যখন রুমে বসে পরিকল্পনা শুরু করলাম দুপুরে কোথায় খাব, বিকালে কোথায় বেড়াতে যাব আর রাতে কোথায় খাব,  সাথে সাথেই দুই ছেলে শাবাব আর শিজার ঘ্যানর ঘ্যানর আর প্যানর প্যানর, বাপি, এখানে থাকবো না,  এট  ভাল না, পানির রঙ লাল, এসি বাতাস গরম, লিফট নেই, ওয়াইফাই স্লো, ইত্যাদি ইত্যাদি।  বললাম, বাবারা, আমাদের এবারের ট্রাভেল তো লাক্সারী ট্রাভেল নয়, এটা তো ব্যাপ্যাকিং।  আমরা তো সবাই মিলে অন্যান্য দেশে লাক্সারী ট্রাভেল করেছি, আমাদের তো হিচহাইকিং , ব্যাকপ্যাকিংও শিখতে হবে । কিন্তু ঐ যে বিচার মানি, কিন্তু তালগাছটা আমাদের,   হিচহাইকিং , ব্যাকপ্যাকিং শিখব কিন্তু এখানে নয়। কি আর করা তখনই বের হয়ে গেলাম অন্য হোটেলের খোজে। হোটেল থেকে বেড়িয়ে পেলাম ফুটপাতে কিছু দোকান, যেখানে মাটির তৈরী বিভিন্ন জিনিষপত্র বিক্রয় হয়।
 ( শাবাব আর শিজা )
 (  শিজা )
  (  শাবাব)
এরপরেই বের হয়ে এলাম চেমসফোর্ড রোডে , ২ মিনিটের হাঁটার পথ। শাবাব আর শিজা আখের রস দেখে খেতে চাইল।  তিন ধরণের গ্লাসের সাইজ আর দামঃ ছোট ১০ রুপি, মেজ ২০ রুপি আর বড় ৩০ রুপি। শাবাব আর শিজা বড় গ্লাসে এক গ্লাস করে খেয়ে নিল।






বাংলাদেশ থেকে  দিল্লীতে যারা আসেন আর সস্তাতে থাকতে চান, তারা সাধারণত পাহাড়্গঞ্জের আরাকাশান রোডেই আসেন, এরপরে খুজে নেন পছন্দ মত হোটেল। দিল্লীর এই রোডটি, আমাদের দেশের পুরান ঢাকার মত অপ্রশস্ত আর নোংরা। তবে  এইরোডে অনেক ৩ স্টার হোটেলও আছে, আছে অনেক মাঝারী মানের রেষ্টুরেন্ট।

চেমসফোর্ড রোডের একদিকে কনট প্লেস আরেক দিকে ডিবি গুপ্ত রোড।  গন্তব্য ডিবি গুপ্ত রোড পেরিয়ে বাবু রাম সোলাঙ্কি মার্গ এর দিকে যেতে বা দিকের প্রথম গলি, নাম  আরাকাশান রোড। আরাকাশান রোডের একদিক মিলেছে বাবু রাম সোলাঙ্কি মার্গ  এর সাথে, আর এক দিক মিলেছে  চিত্রগুপ্ত রোডের সাথে। প্রথমেই   দেখতে চেয়েছি পাহারগঞ্জের আরাকাশান রোডের  এদিকটায়, যা মিলিত হয়েছে চিত্রগুপ্ত রোডের সাথে।

পাহারগঞ্জের আরাকাশান রোডের দুই দিকেই সবগুলোই হোতেল আর হোটেল। কিছু   বিল্ডিং এর নীচের তলায় হোটেলের রিসিপশন, আর বাদবাকী সকল বিল্ডিং এর নীচের তলাতেই হয় রেষ্টুরেন্ট, না হয় মানি এক্সচেঞ্জ, অথবা টুর অপারেটর, অথবা গ্রোসারী শপ।

 ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে একবার এক বন্ধুর সাথে প্রথমবার এসেছিলাম এই আরাকাসান রোডে, দিল্লীর এয়ারপোর্ট থেকে, সেবার উঠেছিলাম আরাকাশান রোডের  হোটেল দিল্লী দর্শন এ। এসি রুমের ভাড়া ছিল ৬০০ রুপি।  ছিলাম কয়েক রাত। ২০১৬ সালে দীর্ঘ ৮ বছর পরে যখন সেই একই হোটেলে যাই, হোটেলের মালিক দেখার সাথেই সাথেই চিনতে পারল, ভেবে খুবই অবাক হয়েছিলাম।

২০১৬ সালে ১০০০ রুপিতে এসি রুম আর ফ্রি ওয়াইফাই, এটাসড বাথ সহ ডাবল বেড রুম পেলাম হোটেল নীলাম প্যালেস এ । লিফট আছে। ৬ তলায়। প্রতিদিন সবকিছু চেঞ্জ করে দিয়ে যেত।  রুমটি   অনেক বড় ছিল। আবার রিসিপশনে ছিল ঠান্ডা পিউরিফাই পানি ফ্রিতে।

দিল্লীর পাহাড়্গঞ্জের আরাকাশান রোডের বাজেট  হোটেল নীলাম প্যালেসের কিছু ছবিঃ
(  নীলাম প্যালেসের গ্রাউন্ড ফ্লোরে  রিসিপশনিষ্টের সাথে শিজা )

( দিল্লির পাহাড়্গঞ্জের আরাকাশান রোডের বাজেট  হোটেল নীলাম প্যালেসে দুই ভাই শাবাব আর শিজা )
(  শাবাব  )
(  শিজা )
(  শিজা )
(  শিজা )
(  শিজা, শাবাব আর শিরিন )

(  শিজা আর শাবাব )

(   টিভি দেখায় ব্যস্ত  শিজা )


অনেক দিন ছিলাম এই হোটেলে। কিন্তু পরে জানতে পারলাম নীচের এক রুম  ডাবল বেড ভাড়া ৬০০ রুপি, সেখানে কলকাতার ৪ জন টুরিষ্ট ছিলেন, জন প্রতি ১৫০ রুপি প্রতি রাত।

আমাদের রুমে ছিল, দুইটি বেড, একটি সোফা, একটি টি টেবিল, একটি রিডিং টেবিল, একটি চেয়ার, টিভি, ফ্রি ওয়াইফাই, আর এসি।


 ( পাহারগঞ্জের আরাকাশান রোডের আরেকটি হোটেলের  গ্রাউন্ড ফ্লোরে শিজা, শাবাব আর শিরিন )

 এছাড়া পাহারগঞ্জের আরাকাশান রোডে আছে আরো অনেক হোটেল। কিছু হোটেল আছে রুম ভাড়া ৪০০ রুপি,  কিছু হোটেল আছে রুম ভাড়া ৩০০০ রুপি।
  
আরাকাশান রোডের পাশেই অবস্থিত ডিবি গুপ্ত রোড।  অপ্রশস্ত  আরাকাশান রোডে কোন বাস চলে না  কিন্তু প্রশস্ত ডিবি গুপ্ত রোডের বাস সহ সকল যানবাহনই চলে। ডিবি গুপ্ত রোডের দুই পাশেও পাওয়া যায় অনেক হোটেল, যেমনঃ

দিল্লীর পাহাড়গঞ্জের আরাকাশান রোডের  অনেক হোটেলই বিভিন্ন সময়ে থেকেছি, এরমাঝে ব্লম্রুমস, যোস্টেল দিল্লী, হোটেল অজন্তা  ( মাঝারী দামের, এগুলোতে অনেক বিদেশীরাও থাকেন), হোটেল সাই প্যালেস,  হোটেল উডল্যান্ড ডিলাক্স।

এছাড়া নিউ দিল্লী রেল ষ্টেশন থেকে মাত্র ৪৫ মিনিট হাঁটার দূরত্ব আর  ট্যাক্সি /  অটোতে মাত্র ১০ মিনিটের দূরত্বে ক্যারলবাগ। ক্যারল বাগের কয়েকটি হোটেলেও থেকেছি, খরচ প্রতি রাত পাহাড়গঞ্জের মতই, কিন্তু ক্যারল বাগ পাহাড়গঞ্জের চেয়েও উন্নত। ক্যারলবাগের হোটেল্গুলো পাহাড়্গঞ্জের চেয়ে সস্তা।  ক্যারলবাগ থেকে মেট্রোতে অন্যান্য সকল জায়গাতে যাওয়া যায়। 

 ১৪এ/৩৪ ডব্লিউ,ই,এ, ছান্না মার্কেট, ক্যারলবাগ, এই ঠিকানাতে আছে হোটেল সার্থক প্যালেস। এখানে ৫ তলাতে ( লিফট আছে) এক রাতের জন্য থেকেছিলাম। সামনে লিভিং রুম সোফা আর টিভি সহ, সাথেই বেড্রুম এটাচড বাথ সহ। রুম সাথে বুফে ব্রেকফাষ্ট। প্রতি রাত ১৬০০ টাকা।  নিচের কিছু ছবি হোটেল সার্থক প্যালেসের গ্রাউন্ড ফ্লোরেরঃ




দিল্লীর  রেলষ্টেশন থেকে ৩০ মিনিটের হাঁটার দূরত্বে আর অটোতে  ১৫ মিনিটে লাগে দিল্লির জামা মাসজিদ। এখানেও বেশ সস্তাতে থাকা যায়। নিজামুদ্দিনেও বেশ সস্তাতে থাকা যায়।

নিজামুদ্দিন, জামা মাসজিদ, পাহাড়গঞ্জ এগুলো আমাদের দেশের পুরানো ঢাকার মত, অপরিষ্কার,  ধুলোবালি  অধিক ট্রাফিক জ্যাম, সরু রাস্তা আর শব্দ দুষণে ভরপুর।

 দিল্লীতে কি কাজ, কোথায় বেশী হবে , তার উপর নির্ভর করে কোথায় থাকলে ভাল আমি। যেমন, আমার বেশীরভাগ সময় কেটেছে, চানক্যপুরী, নিতিমারগ, ভাসান্ত বিহার, গলফ লিঙ্কস, লোক কল্যাণ মার্গ, শান্তিনিকেতন -- এই এলাকাগুলোতে, কারণ আমার বেশীরভাগ ব্যবসায়িক কাজকর্মগুলো থাকত এই এলাকা ভিত্তিক, তাই আমি সময় এই এলাকার হোটেল বা গেষ্ট হাউজগুলোতে থাকতে সবাচ্ছন্দবোধ করতাম বেশী, এতে আমার সময় বাঁচত । আর আমার কাছে যারা আসতেন, তাদেরো সুবিধা হত।
চানক্যপুরী, নিতিমারগ, ভাসান্ত বিহার, গলফ লিঙ্কস, লোক কল্যাণ মার্গ, শান্তিনিকেতন এগুলো আমাদের দেশের গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি, উত্তরার মত, পরিষ্কার,  ধুলোবালি নেই  ট্রাফিক জ্যাম কম, অনেক প্রশস্ত  রাস্তা আর কম শব্দ দুষণ।

এছাড়া ছিল মাউন্টেন ক্লাবের প্যাকেজ নানা রকম সুবিধাঃ






প্রথম পর্ব শেষ

দিল্লী ভ্রমণঃ তুঘলুকাবাদ-জাঁহাপনা-ফিরোজাবাদ-দিনপানাহ-শেরগড়-শাহজানাবাদ থেকে দিল্লী  ( পর্ব ২)  চলমান........................................














































Comments

Unknown said…
Brother, when we'll have the next episode? Eagerly waiting 😊
@ mehdi hasan : Bro, first of all I am going to give you many thanks from my heart to read my blog. Next episode will come soon inshaallah. Please pray for me. Wish you all the best.

Popular posts from this blog

কলকাতা ভ্রমণ

বাল্টিক সাগরের মুক্তো লাটভিয়ার রাজধানী রিগাতে ভ্রমণ

রুদা নদীর তীরে "সবুজ" শহর খ্যাত দক্ষিণপশ্চিম পোল্যান্ডের সিলেসিয়ান ভয়েডেডশিপের শহর রিবনিক ভ্রমণ