বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার পিরামিড, জলপ্রপাত আর পাথরের বল, ইউরোপ মহাদেশের সর্বশেষ রেইন ফরেস্ট পেরুকিকা রেইন ফরেস্ট এর দেশ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা।
আমার একদিকে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিস্টিন ব্রুস আরেকদিকে বসনিয়ার রাটকো নেযেভিক ( Divisional Commander Liaison Team Member NATO HQ )
বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার প্রাচীন পিরামিড এর রহস্যঃ
========================================
ঘটনাটি শুনে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে পিরামিড ইউরোপে পাওয়া গেছে, আরো সুস্পষ্টভাবে বলতে গেলে বলতে হয় বসনিয়াতে। ১২,০০০ বছর আগে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা রাজধানী সারাজেভোর কাছাকাছি রহস্যময় লোকদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন পিরামিড, বসনিয়ার ভিসোকো পিরামিড, তরঙ্গ ছড়িয়ে দেয়ার জন্য মাথায় বিশাল আকারের স্ফটিক টুপি বসানো, মানুষের তৈরি বিশ্বের সবচেয়ে বড় পিরামিড।
মহাকাশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার উদ্দেশ্যেই মহাজাগতিক ইন্টারনেট ব্যবস্থা গড়ে তুলতেই মূলত বসনিয়ার পিরামিডগুলো অদৃশ্য তরঙ্গ রশ্মি নির্গত করে পুরো পৃথিবীতে বিরাজ করত আর পৃথিবীকে নেটওয়ার্কের মধ্যে রাখা ছাড়াও মহাকাশের দূর দূরান্তে যোগাযোগ রক্ষা করত। পিরামিডগুলো পৃথিবীতে পরিকল্পনা করেই নির্মাণ করা হয়েছিল। যেন প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকাতেও মহাজাগতিক তরঙ্গ রশ্মি আচ্ছাদিত করতে পারে। আন্ত: এবং বহির্জাগতিক যোগাযোগের জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বিশাল নেটওয়ার্ক ।
বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার আকর্ষণীয় জলপ্রপাতঃ
====================================
পাহাড়, উপত্যকা, নদী আর প্রকৃতির নাটকীয় আকর্ষণীয় জলপ্রপাতের এক অপূর্ব সমাহার পাহাড়ী দেশ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা। পাহাড়ের প্রাকৃতিক সঙ্গী হিসাবে নদী আর জলপ্রপাতের যাদুকর গুণাবলী, শব্দ আর পানি সবসময়ই মানুষকে কাছে টানে। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা সবচেয়ে সুন্দর জায়গা যেখানে নদীগুলি হঠাৎ করে তাদের শক্তিকে সম্ভাব্য গতিতে রূপান্তরিত করেঃ
( ক্রভিকা জলপ্রপাত )
জুবুস্কির কয়েক কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মোস্তার থেকে ৩০ মিনিটের ড্রাইভ হার্জেগোভিনা হৃদয়ভূমি সর্বাধিক ২৫ মিটার উচ্চতার আর পাদদেশে হ্রদটির ব্যাসার্ধ প্রায় ১২০ মিটার ক্রভিকা জলপ্রপাত ট্রেভিজাট নদীর উপর বহমান। সর্বাধিক ২৫ মিটার উচ্চতা এবং জলপ্রপাতের পাদদেশে হ্রদটির ব্যাসার্ধ প্রায় 120 মিটার। ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর জোরালো প্রভাবের কারনে কার্সের হেরেজগোভিনা অঞ্চলের গ্রীষ্মকাল খুব গরম , যার কারণে স্নান এবং পিকনিক রিসোর্ট এর জন্য ক্রভিকা একটি জনপ্রিয় সৈকত। ক্যাসকেডের পাশেই রয়েছে, ঐতিহ্যগত বলকান খাবার এবং পানীয় সরবরাহকারী রেস্তোরাঁগুলি ।
( Štrbački Buk )
বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং ক্রোয়েশিয়া সীমান্তে উত্তর-পশ্চিম বসনিয়ার উনা নদী অবস্থিত Štrbački buk বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার বৃহত্তম জলপ্রপাত। নিকটতম গ্রামগুলি দালজানি এবং কোকোভা। জলপ্রপাতটি উনা ন্যাশনাল পার্কের মধ্যে অবস্থিত। কাঠের হাঁটা পথ, পাশাপাশি প্ল্যাটফর্ম এবং অন্যান্য ভিউ পয়েন্ট সহ পুরো এলাকাটি প্রবেশযোগ্য।চিহ্নিত ট্রেল বরাবর হাইকিং করা যায়। গ্রীষ্মকালে খাদ্য এবং পানীয় সরবরাহকারী ঋতু বাগান বার আছে। জলপ্রপাত প্রবেশের জন্য টিকেট মুল্য ৩ ইউরো।
( মিলানচেভ জলপ্রপাত )
মার্টিন ব্রড গ্রাম, যা Štrbački buk এর মত, উনা ন্যাশনাল পার্কের মধ্যে অবস্থিত। দুইটি উপত্যকায় প্রস্থান করার সময় এই গ্রামটি উনা ও উনাক নদীগুলি মিলিত হয়।
এই স্থানটি জাতীয় উদ্যানের সবচেয়ে সুন্দর এবং আকর্ষণীয় অংশগুলির মধ্যে একটি ।
পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী গ্রামটির নামকরণ করা হয় মার্টা নামের একজন যুবতীর নামে, যে এক সৈনিকের প্রেমে পরেছিলেন। নদী পার হয়ে তার কাছে পৌঁছানোর সময়, শক্তিশালী স্রোতগুলি তাকে পানিতে টেনে নিয়ে যায় এবং সে ডুবে যায়। মিলানচেভ বুকে নামক বৃহত্তম জলপ্রপাতের জন্য খরচ হয় মাত্র ১ ইউরো।
( প্লাভা জলপ্রপাত )
মধ্যযুগীয় জাজে শহরে অবস্থিত দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের সবচেয়ে প্রভাবশালী জলপ্রপাত প্লাভা জলপ্রপাত এবং প্রায়শই বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর তালিকাভুক্ত । প্লাভা জলপ্রপাত ঠিক সেই স্থানে অবস্থিত যেখানে প্লিভার নদী শেষ হয়ে যায় এবং ভ্রাবাস নদীতে ঢুকে পড়ে। পতন থেকে শেষ পর্যন্ত প্রবাহ, প্লাভা দুটি আশ্চর্যজনক সুন্দর হ্রদ সৃষ্টি করে: বড় প্লিভা হ্রদএবং ছোট প্লিভা হ্রদ। এটি সমগ্র দেশে সর্বশ্রেষ্ঠ "বাহ প্রভাব" ।
( কোজিস জলপ্রপাত )
প্রায় দেড় হাজার বছর আগেও ছিল এক উন্নত সভ্যতা। আর সেই সভ্যতার প্রতীক হিসেবেই হোক অথবা আধিপত্যের সীমা হিসেবে, বসনিয়ার জাভিদোভিসি শহরে জঙ্গলের ময়লা থেকে বেরিয়ে আসে শিলা গোলক বা পাথরের বল। চার থেকে পাঁচ ফুটের আয়তন আর ভেতরে উচ্চ মাত্রার লৌহের উপস্থিতি বিভিন্ন প্রাকৃতিক খনিজ পদার্থের মিশেলে দীর্ঘ সময় ধরে জমাট বাঁধা পদ্ধতিতে তৈরি পাথরের বল গুলোর উৎপত্তি অজানা আর ব্যাখ্যাহীন। যা নিয়ে কাজ করছেন প্রত্নতত্ত্ববিদ ড. সেমির ওসমানাগিক, যাকে বলা হয় বসনিয়ার ইন্ডিয়ানা জোনস। বলের বাদামী এবং লাল রঙের লোহার খুব বেশি পরিমাণ।
ইউরোপের এ দেশটির পর্যটন শিল্প ক্রমেই বিকশিত হচ্ছে। নব্বইয়ের দশকের ভয়াবহ ধ্বংস ও গণহত্যার শিকার দেশটি এ শিল্পকে কেন্দ্র করে আবার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।
কোন পর্যটক এখানকার রেস্টুরেন্টে খেতে চাইলে তাকে হালাল খাবার নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। নামাজের জন্য সর্বত্রই মসজিদ রয়েছে। এই অঞ্চলে জনসংখ্যার আশি ভাগই মুসলমান এবং তাই প্রায় প্রতিটি গ্রামেই একটা করে মসজিদ— যার গঠনশৈলীতে স্পষ্ট তুর্কি প্রভাব।
সারায়েভো বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। জনসংখ্যা ৩৬৯,৫৩৪ জন। সারায়েভো মেট্রোপলিটন এলাকার মধ্যে সারায়েভো, পূর্ব সারায়েভো, এবং পার্শ্ববর্তী পৌর এলাকা গুলি পড়ে। জনসংখ্যা ৬০৮,৩৫৪ জন।বসনিয়া-হার্জেগোভিনার রাজধানীর পাশাপাশি এটি বসনিয়ার অঙ্গরাজ্য স্প্রস্কা প্রজাতন্ত্রের রাজধানী।
টলমল করা লাল টাইলসের ছাদওয়ালা বাড়ি, তুর্কি কফি হাউস, পাথুরে মিনারযুক্ত মসজিদ সবকিছু যেন ওসমানিয়া সা¤্রাজ্যের প্রতিচ্ছবি হয়ে এখানে ধরা দেয়। ইতিহাসের সূত্রগুলো এখানে ছড়িয়ে আছে। ওসমানিয়া সা¤্রাজ্যের অধিপতি, হ্যাম্পসবার্গের রাজপুরুষ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর সার্ব রাজা আলেকজান্ডার, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ক্ষমতা দখল করা নাৎসিদের পর কমিউনিস্ট সবাই এখানে উপস্থিত। ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে এমন ব্যতিক্রম ধর্মীয় শহর বিশ্বে দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া যাবে না। সাংষ্কৃতিক ও ধর্মীয়ভাবে বিভাজিত এমন শহরও আর নেই। এখানে গতিশীল ইউরোপ এর সাথেই অবস্থান করছে অলসভাবে দ–ায়মান এশিয়া। খৃস্টান পাশ্চাত্যের পাশেই রয়েছে ইসলামি প্রাচ্য।
চার লক্ষাধিক জনসংখ্যার সারায়েভো ইউরোপের অন্যতম প্রাণবন্ত ছোট্ট নগরী যার বেশিরভাগই মুসলিম বসনিয়ান।
মুসলিম সারায়েভোর কেন্দ্রস্থল তথা পাথর বাঁধানো পিজন স্কয়ারটি, পেনসিল সরু মিনার সমৃদ্ধ মসজিদ আর ম্যাপল আচ্ছাদিত পাহাড়ের ছায়ায় ঢাকা এক সময় সার্ব গোলন্দাজের অন্যতম লক্ষ্যস্থল ছিল। সার্বরা মনে করত, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার নেতৃবৃন্দ যে ইসলামি রাষ্ট্র গঠন করতে চাইছে এটি তারই প্রতীক। যদিও বসনিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট মরহুম আলিয়া ইজেতবেগোভিচ বারবার বলছিলেন, তিনি প্রজাতন্ত্রকে একটি বহুজাতিক গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত করতে চান। এখন এই পিজন স্কয়ারটি স্যুভেনিরের দোকানে ভরা। এখানে পাওয়া যায় বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ফুটবল দলের জার্সি, সারায়েভোর পোস্টকার্ড।
মুসলিম সারায়েভোর কেন্দ্রস্থল তথা পাথর বাঁধানো পিজন স্কয়ারটি, পেনসিল সরু মিনার সমৃদ্ধ মসজিদ আর ম্যাপল আচ্ছাদিত পাহাড়ের ছায়ায় ঢাকা এক সময় সার্ব গোলন্দাজের অন্যতম লক্ষ্যস্থল ছিল। সার্বরা মনে করত, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার নেতৃবৃন্দ যে ইসলামি রাষ্ট্র গঠন করতে চাইছে এটি তারই প্রতীক। যদিও বসনিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট মরহুম আলিয়া ইজেতবেগোভিচ বারবার বলছিলেন, তিনি প্রজাতন্ত্রকে একটি বহুজাতিক গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত করতে চান। এখন এই পিজন স্কয়ারটি স্যুভেনিরের দোকানে ভরা। এখানে পাওয়া যায় বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ফুটবল দলের জার্সি, সারায়েভোর পোস্টকার্ড।
নব্বই দশকে মুসলিমদের উপর পরিচালিত ব্যাপক গণহত্যার পর কেউ ভাবতে পারেনি, সারায়েভো তার ধর্মীয় সম্প্রীতি ধরে রাখতে পারবে। কিন্তু যুদ্ধের ধকল কাটিয়ে সারায়েভো আবার হয়ে উঠেছে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সম্প্রীতির মিলনভূমি। একসময়ের বুলেট জর্জরিত পার্লামেন্ট ভবন এখন নতুন সাজে সজ্জিত। ‘জাতিগত শুদ্ধি অভিযানের’ শিকার শহরটি এখন বহু সাংস্কৃতিক ও বহুজাতিক পরিচয় নিয়ে বিকাশমান।
১৯১৮ সালে দক্ষিণ ইউরোপে সার্বিয়া, মন্টেনিগ্রো, স্লোভানিয়া, মেসিডোনিয়া, ক্রোয়েশিয়া আর বসনিয়া-হার্জেগোভিনা মিলে গঠন করে নতুন রাষ্ট্র যুগোস্লাভিয়া। যুগোস্লাভিয়া নামের অর্থ দক্ষিণ স্লাভদের দেশ। পূর্ব ইউরোপের বাসিন্দাদের বেশির ভাগই নৃতাত্ত্বিক দিক দিয়ে বৃহত্তর স্লাভ জাতির অংশ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির কাছে পরাজিত যুগোস্লাভিয়া যুদ্ধের পরে মার্শাল টিটোর নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি ঝুঁকে পড়ে। পরে নব্বইয়ের দশকে একে একে চারটি যুদ্ধের মাধ্যমে ক্রোয়েশিয়া, মেসিডোনিয়া, বসনিয়া আর স্লোভেনিয়া স্বাধীন হয়ে যায়। সার্বিয়া আর মন্টেনিগ্রো ‘ফেডারেল রিপাবলিক অব যুগোস্লাভিয়া’ নাম নিয়ে কিছুকাল টিকে থাকলেও ২০০৬ সালে মন্টেনিগ্রো স্বাধীন হয়ে গেলে ইতিহাসে বিলীন হয়ে যায় যুগোস্লাভিয়া নামের দেশটি।
দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপে বলকান উপদ্বীপের একটি ভূমি পরিবেষ্টিত ছোট দেশ মেসিডোনিয়া। এর উত্তরে সার্বিয়া। পূর্বে বুলগেরিয়া, দক্ষিণে গ্রিস এবং পশ্চিমে আলবেনিয়া। সাবেক যুগোস্লাভিয়ার সবচেয়ে দক্ষিণের প্রদেশ ছিল এটি। প্রাচীনকালে এই ছোট রাজ্যটিই গ্রাস করে নিয়েছিল পৃথিবীর প্রায় পুরো ভূভাগ। সেই ইতিহাস গড়েছিলেন আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেট। ৩৫৬ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দে মেসিডোনে জন্ম নেন তিনি। ইতিহাসের সবচেয়ে সফল এই সমরনায়ক কোনো যুদ্ধে হেরে যাওয়ার নজির নেই। মৃত্যু অবধি একে একে রাজ্য জয় করে চলেছিলেন। বাবা সম্রাট দ্বিতীয় ফিলিপের মৃত্যুর পর তিনি ক্ষুদ্র দেশ মেসিডোনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ফিলিপ বেশ কয়েকটি গ্রিক নগররাষ্ট্র মেসিডোনের অন্তর্ভুক্ত করেন। সেই জয়ের ধারা আলেক্সান্ডার নিয়ে থামান ভারতীয় উপমহাদেশে।
ভূমিবেষ্টিত দেশ, তাই নৌবাহিনী নেই। স্থলবাহিনী ও বিমান বাহিনী রয়েছে। মেসিডোনিয়ান স্পেশাল ফোর্সেস নামের আরেকটি বাহিনীও রয়েছে। সামরিক বাহিনীর লক্ষ্য স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বেশ তৎপর প্রয়োজনীয় কৌশল নির্ধারণে। প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিপরীতে নিজেদের অর্থবহ স্বাধীনতার জন্য কাজ করে তারা।
সম্প্রতি দেশটি ‘বেস্ট রিফরমেটরি স্টেট’-এর তালিকায় ১৭৮টি দেশের মধ্যে চতুর্থ হয়েছে। স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর দেশটি ব্যাপক অর্থনৈতিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। ধীরে হলেও তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বেশ টেকসই বলে মত দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
দেশের প্রায় ৬৫ শতাংশ মানুষ অর্থডক্স চার্চের অনুসারী। মুসলিম ৩৩ শতাংশের বেশি। দেশটিতে ১২ শত চার্চ এবং চার শ’ মসজিদ রয়েছে। মাধ্যমিক স্কুলে প্রধান দু’টি ধর্ম পড়ানো হয়। রাজধানীতে অর্থডক্সদের একটি কলেজও রয়েছে। মেসিডোনিয়া ইউরোপে অন্যতম মুসলিম অধ্যুষিত দেশ। সংখ্যা এবং অনুপাতে এর চেয়ে বেশি মুসলিম অধ্যুষিত ইউরোপীয় দেশ হচ্ছে তুরস্ক, কসোভো, আলবেনিয়া, বোসনিয়া হার্জেগোভিনা। কসোভোয়, আলবেনিয়ায়, হার্জেগোভিনার মোট জনসংখ্যার যথাক্রমে ৯০, ৭০ এবং ৪৮ শতাংশ মুসলিম। ২০০২ সালের শুমারি অনযায়ী মেসিডোনিয়ায় মসলিমদের সংখ্যা ৬ লাখ। দেশটিতে ইহুদির সংখ্যা সাত হাজারের কিছু বেশি।
মেসিডোনিয়ার শিক্ষাব্যবস্থা চারটি ধাপে বিভক্ত। প্রি-স্কুল, প্রাইমারি স্কুল, মাধ্যমিক স্কুল এবং এর পরই রয়েছে উচ্চশিক্ষা। দেশটিতে চারটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। রয়েছে কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১ হাজার ৮৬টি। ৭ থেকে ১৫ বছরের শিশুরা এখানে শিক্ষা নেয়। প্রায় দশ বছর আগের এক হিসাবে দেখা যায়, ৯৫ শতাংশ শিশু প্রাইমারিতে শিক্ষা নেয়। সরকারি ব্যয়ের ২০ শতাংশ খরচ হয় শিক্ষা খাতে।
একে একে চারটি যুদ্ধের মাধ্যমে ক্রোয়েশিয়া, মেসিডোনিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা আর স্লোভেনিয়া স্বাধীন হয়ে যায়। সার্বিয়া আর মন্টেনিগ্রো ‘ফেডারেল রিপাবলিক অব যুগোস্লাভিয়া’ নাম নিয়ে কিছুকাল টিকে থাকলেও ২০০৬ সালে মন্টেনিগ্রো স্বাধীন হয়ে গেলে ইতিহাসে বিলীন হয়ে যায় যুগোস্লাভিয়া নামের দেশটি।পরবর্তীতে সার্বিয়া ভেঙ্গে দুটি রাষ্ট্র হয়। একটি সার্বিয়া অপরটি কসোভো।
মনে পড়ে ১৯৯৫ সালের গণহত্যা। যুগোশ্লাভিয়া ভেঙে যাওয়ার পর সার্বরা ১৯৯৫ সালের জুন মাসে সেব্রেনিচা শহরটি দখল করে নেয়। জাতিসংঘের ৮১৯ নম্বর প্রস্তাবে অনুযায়ী সেব্রেনিচা শহরটি নিরাপদ অঞ্চল বলে ঘোষণা করা হয়েছিল।
কিন্তু সার্বরা জাতিসংঘের ডাচ শান্তিরক্ষীদের কোনো বাধা ছাড়াই শহরটি দখল করে সেখানে আশ্রয় নেয়া হাজার হাজার বেসামরিক মুসলমানকে হত্যা করে এবং হাজার হাজার নারীকে ধর্ষণ করে। রাতকো মিলাদিচের নেতৃত্বাধীন বর্বর সার্ব বাহিনী এই গণহত্যা চালায়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই ইউরোপে সংঘটিত সবচেয়ে বড় গণহত্যা ও জাতিগত শুদ্ধি অভিযান। ডাচ শান্তিরক্ষীদের নিস্ক্রিয়তার মুখে ও গ্রিক সেচ্ছাসেবী বাহিনীর সহায়তায় সার্বরা এই গণহত্যা চালায়। ১৯৯৫ সালে বসনিয়ান সার্ব বাহিনীর খ্রিস্ট্রান জঙ্গিদের হাতে এই হত্যাযজ্ঞের শিকার হন ৮,৩৭২ জন মুসলিম পুরুষ এবং বালক।
যুগোশ্লাভিয়া যুদ্ধের সময় সার্বরা বসনিয়ায় ভয়াবহ এক গণহত্যা ও ধর্ষণযজ্ঞ চালাচ্ছিলো নব্বইয়ের দশকে। রাশিয়ার ছত্রছায়াতে সার্বরা, আমেরিকার ছত্রছায়াতে বসনিয়া ।
আমেরিকা সহ পশ্চিমা বিশ্ব 'বসনিয়ার জন্য আহাজারি করেছিল তখন মনে হয়েছিল মানবতা। আসল কারণ বুঝা গিয়েছে বসনিয়া-হার্জেগোভেনিয়া 'স্বাধীন' হওয়ার পর। যখন দেখা গেলো বসনিয়া-হার্জেগোভেনিয়া সব খনিজ সম্পদ চলে যাচ্ছে মার্কিন কর্পোরেশনগুলোর দখলে। সাম্রাজ্যবাদীরা অকারণেই পাশে দাঁড়ায় করে না।
Comments
https://youtu.be/gRA3jOwACq8